চট্টগ্রামে মাঝপথে বন্ধ হলো বসন্তবরণ উৎসব
Published: 15th, February 2025 GMT
চট্টগ্রামের সিআরবিতে ‘প্রমা আবৃত্তি সংগঠনে’র বসন্তবরণ উৎসবের মাঝপথে অনুষ্ঠানের অনুমতি বাতিল করেছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। শনিবার দুপুরে ‘অনিবার্য কারণবশত’ উৎসবের প্রথম পর্বের অনুষ্ঠান শেষে অনুমতি বাতিলের কথা আয়োজকদের জানায় রেলওয়ে। এতে দিনের বাকি আয়োজন সম্পন্ন করতে পারেননি আয়োজকরা।
জানা গেছে, আজ সকাল ৯টা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রথম পর্বের অনুষ্ঠান চলে। তবে দুপুরের পর দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান শুরুর আগে প্রধান অতিথি আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক ব্যক্তি সমস্যার কথা বলে অনুষ্ঠানে আসতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তারপরই হঠাৎ করে স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে চলে যান। তখন রেলওয়ে থেকে অনুষ্ঠানের অনুমতি বাতিল করা হয়েছে বলে আয়োজক প্রতিষ্ঠান আবৃত্তি সংগঠন ‘প্রমা’কে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর বসন্তবরণ অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়।
প্রমা’র সভাপতি আবৃতিকার রাশেদ হাসান বলেন, ‘রেলওয়ের অনুমতি নিয়েই আমরা বসন্তবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রথম পর্ব সুন্দরভাবেই হয়েছে। দুপুরের পর দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান রেলওয়ে থেকে অনুমতি বাতিল করায় আর করতে পারিনি। অতীতে কখনও এ রকম অবস্থার মুখোমুখি আমাদের হতে হয়নি।’
বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো.
প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (পূর্ব) মাহবুবুল করিম বলেন, ‘প্রমার অনুষ্ঠানের বিষয়ে আমার জানা নেই। ভূ-সম্পত্তি বিভাগ থেকে এ ধরনের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।’
কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুল করিম বলেন, এ অনুষ্ঠানের জন্য আলাদা ফোর্স আয়োজকদের পক্ষ থেকে চাওয়া হয়নি। মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করছিল। যতটুকু জেনেছি, অনুমতি না থাকায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এসে অনুষ্ঠান বন্ধ করার নির্দেশনা দেয়।
প্রতিবছরের মতো এবারও আবৃত্তি সংগঠন প্রমা’র আয়োজনে নগরের সিআরবির শিরীষতলায় সকাল থেকে বসন্তবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়ে দুপুর পর্যন্ত চলে। পরে বিকেল ৩টা থেকে দ্বিতীয় পর্ব শুরুর কথা ছিল। কিন্তু দুপুর ২টার দিকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এসে জানায়, অনিবার্যকারণ বশত অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। পরে সংগঠনের সদস্যরা স্পন্সর প্রতিষ্ঠান নিপ্পন পেইন্ট চলে যায়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বসন তবরণ অন ষ ঠ ন শ অন ষ ঠ ন র বসন তবরণ ব ত ল কর র লওয় স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
নাম বদলাতে পারে মঙ্গল শোভাযাত্রার
বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলাতে পারে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। নতুন নামের বিষয়ে আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। সব জাতিসত্তার অংশগ্রহণে এবারের শোভাযাত্রায় নতুন রং, গন্ধ ও সুর পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে জাতীয়ভাবে বাংলা নববর্ষ এবং চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ উদযাপন নিয়ে সভা শেষে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। তিনি বলেন, এবার চারুকলা থেকে যে শোভাযাত্রা বের হবে, এতে সত্যিকার অর্থেই নতুন জিনিস দেখা যাবে। এই শোভাযাত্রা হবে বাঙালি, চাকমা, মারমা, গারো– প্রত্যেকের। এ জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলাতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি প্রথমে আনন্দ শোভাযাত্রা নামে শুরু হয়েছিল। পরে হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠকে সবাই যদি একমত হয়, তবে আবার নাম পরিবর্তন হতে পারে। এবারের শোভাযাত্রাটি আর বাঙালিদের শোভাযাত্রা না। কেন্দ্রীয়ভাবে এটিকে ডাকা হবে, যে নামে সবাইকে একটা ছাতার মধ্যে আনা যায়।
মঙ্গল শোভাযাত্রা নামে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি দেওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘ইউনেস্কো আগামীবার জানবে এ শোভাযাত্রা আরও বড় হয়েছে, আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়েছে। ইউনেস্কোর এটাতে খুশি হওয়ার কারণ হবে, আপত্তি করার কোনো কারণ নেই। আমরা বরং এতদিন অনেকগুলো জাতি-গোষ্ঠীকে মাইনাস করে এসেছিলাম। এটাকে সংশোধন করছি।’ অনুষ্ঠানটি পুনর্বিবেচিত হয়েছে, তাই এর নামটিও পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিভিন্ন আয়োজন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমিতে রক কনসার্ট হচ্ছে। যেখানে চাকমা, গারো, মারমা ও বাংলা ব্যান্ড– সবাই পারফর্ম করবে। এ ছাড়া চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে বাউল ও ফকিররা গান গাইবেন। ওদের একটা উৎসব হবে সেখানে। ১৪ এপ্রিল সংসদ ভবনের সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ড্রোন শোর আয়োজন করা হবে। চীনের দূতাবাসের সহযোগিতায় ড্রোন শো হবে। বিকেলে গান শুনবেন, সন্ধ্যার পর দেখবেন সংসদ ভবনের ওপর বাংলার আকাশের ড্রোন দিয়ে কিছু ইমেজ তৈরি করা হচ্ছে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এবার ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় সুরের ধারার গানের অনুষ্ঠান হবে। মেলার মতো আয়োজনও সেখানে করা হবে। ঢাকার নানান জায়গায় উৎসব ছড়িয়ে যাবে। সূর্যাস্তের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে– এবার আমাদের নির্দেশনা এটা না। কোন অনুষ্ঠান কখন শেষ হবে, সেটা স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা ঠিক করে নেবে।’ তিনি জানান, এবার প্রতিটি জেলা ও উপজেলার জন্য বরাদ্দ দ্বিগুণ হয়েছে। পাশাপাশি যে জেলাগুলোতে ভিন্ন ভাষাভাষী লোকজন আছেন, সেগুলোতে বরাদ্দ আরও বেশি হবে।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, নববর্ষের আয়োজন নিয়ে কাল (আজ) বৈঠক হবে। নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা সময় লাগবে। ঈদের ছুটি শেষে সংবাদ সম্মেলনে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।