গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, প্রশাসনে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা আছে। এ কারণে গত ৬ মাসে অন্তর্বর্তী সরকার কাঙ্ক্ষিত কাজ করতে পারছে না।

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে বেরিয়ে নুরুল হক সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। আজ শনিবার বেলা তিনটার কিছু পরে দেশের ২৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিদের নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের এই বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

নুরুল হক নুর বলেন, জনপ্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা রয়েছে। প্রশাসনের ভেতরে ফ্যাসিবাদের দোসরদের এখনো অবস্থান করছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কিংবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম নিয়ে জনমনে অসন্তোষ রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এসব বিষয়ে বলেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ধীরগতি, কৃষি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এগুলো দুজন উপদেষ্টা দিয়ে পরিচালনা সম্ভব না। বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসহ রেল, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ও একজন উপদেষ্টার পক্ষে সম্ভব না।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো মোটামুটি সবাই একমত জানিয়ে তিনি বলেন, আজকের এই সভা থেকেই আওয়ামী লীগের বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত চেয়েছিলাম। কিন্তু আরও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে বিশেষ করে জাতীয় না স্থানীয় নির্বাচন আগে হবে, তা নিয়ে। বৈঠকে উপস্থিত থাকা রাজনৈতিক দলের জোটগুলো জানিয়েছে, তারা এসব নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।

নুরুল হক বলেন, ‘অনেক দল বোঝাতে চেয়েছে, স্থানীয় নির্বাচন আগে হলে তৃণমূলে সংঘাত সহিংসতা বাড়বে। আওয়ামী লীগ মাথাচাড়া দেবে। আমার মনে হয়, এটি তাদের সঠিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ না। কারণ, স্থানীয় নির্বাচন এখন হলেও টুকটাক ঝামেলা হবে এবং নির্বাচনের (জাতীয় নির্বাচন) পরে হলেও হবে। বরং আমরা দেখেছি, নির্বাচিত সরকারগুলো যত স্বচ্ছ ভোটেই ক্ষমতায় আসুক, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তাদের একটি প্রভাব থাকে।’

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি আরও বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবেই জানিয়েছি, ছয় মাস ধরে স্থানীয় সরকারব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে আছে। এখন প্রধান উপদেষ্টার রোডম্যাপে যদি ডিসেম্বরেও নির্বাচন হয়, তাহলেও কিন্তু ১০ মাস সময় বাকি আছে।’ এই ১০ মাস স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিবিহীন থাকবে কি না, এমন প্রশ্ন রাখেন তারা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন উপদ ষ ট ন র ল হক র জন ত ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে: আইন উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের বৈঠক শেষে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।

নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে যমুনায় প্রবেশ করে বিএনপির প্রতিনিধিদল। মিটিং শেষে দুপুর ২টার দিকে যমুনা থেকে বের হন তারা। 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন হবে। যে যাই বলুক, জুনের পরে নির্বাচন যাবে না।

তিনি বলেন, সংস্কারের ব্যাপারে বিএনপি অত্যন্ত আন্তরিক। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে খোলামেলা পরিবেশে কথা হয়েছে।

আসিফ নজরুল বলেন, বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে ভালো হয় বলে জানিয়েছে। তারা বলেছেন, আমাদের উপদেষ্টাদের অস্পষ্ট কথা থাকে। আমাদের সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা অন্যরকম কথা বলেন। যে যেটাই বলুক না কেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে বারবার যে কথা বলেছেন, সেটাই আমাদের অবস্থান। অন্য কেউ যদি বেফাঁস কথা বলেন, তারা যেন বিভ্রান্ত না হন।

আজকের আলোচনায় কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে, জানিয়ে তিনি বলেন, ডিসেম্বর থেকে জুন মাস, মানে আমরা ইচ্ছা করেই দেরি করে মে মাসে নির্বাচন করব, এমনটা নয়। ডিসেম্বর থেকে জুন মানে হচ্ছে— ডিসেম্বরের পর থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন করা। আমরা অকারণে এক মাস, দুই মাস বেশি থাকলাম, মোটেও এমনটা নয়। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন হবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আমাদের ঐকমত্য কমিশনের যে প্রস্তাব, সেটার ক্ষেত্রে বিএনপি অত্যন্ত পজিটিভ। তারা দুই-তিন দিনের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বসবে। জুলাই ঘোষণাপত্র খুব দ্রুত সময় হয়ে যাবে, তারা আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, বিএনপি সংস্কারের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক।

অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, বিএনপি মন খুলে কথা বলেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু কিছু সিদ্ধান্ত তাদের প্রতিকূলে গেছে বলে তারা বলেছেন। আমরা তাদেরকে উদাহরণ দিয়েছি, অনেকগুলো সিদ্ধান্ত তাদের অনুকূলে গেছে। রাজনৈতিক ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারে বিলম্ব হচ্ছে। গত তিন মাসে ৭ হাজারের অধিক মামলা প্রত্যাহার হয়েছে। বিএনপি আরেকটা ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা বলেছে। আমরা বলেছি যে, আমরা এ লক্ষ্যে কাজ করছি।

তিনি বলেন, উনারা (বিএনপি নেতারা) বলেছেন যে, গত ১৫ বছর যাবত বিএনপি নির্যাতিত হয়েছে। আমরা শ্রদ্ধা দেখিয়েছি। তারা বলেছে, বিএনপি সংস্কারপন্থি দল, আমরা এটাতে অ্যাগ্রি করেছি।

ঢাকা/হাসান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঐকমত্য তৈরিতে আলোচনা চালিয়ে যাবে বিএনপি: সালাউদ্দিন আহমেদ
  • একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা আমাদের লক্ষ্য: আলী রিয়াজ
  • একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা লক্ষ্য: আলী রিয়াজ
  • বিএনপির চেয়ে বেশি সংস্কার কোনো রাজনৈতিক দল করেছে, প্রশ্ন নজরুল ইসলাম খানের
  • ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি
  • ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন সম্ভব, মনে করছে বিএনপি
  • নির্বাচন কোনোভাবেই আগামী বছরের জুনের পরে যাবে না: আসিফ নজরুল
  • বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে: আইন উপদেষ্টা
  • সংলাপ শেষে স্পষ্ট হবে সরকার কতটুকু সংস্কার বাস্তবায়ন করতে পারবে : প্রেস সচিব
  • আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় সনদ তৈরি করা যাবে: আলী রীয়াজ