বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ অপ্রাসঙ্গিক: হাসনাত আবদুল্লাহ
Published: 15th, February 2025 GMT
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, যে নৌকা ডুবে গেছে, সে নৌকা বাংলাদেশে আর কখনোই ভাসবে না। ৫ আগস্টই ছাত্র-নাগরিক জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এখন অপ্রাসঙ্গিক।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে বেরিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। আজ শনিবার বেলা তিনটার কিছু পরে দেশের ২৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিদের নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের এই বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
হাসনাত আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের চ্যাপটার এন্ড (অধ্যায় শেষ)। ৫ আগস্ট ছাত্র-নাগরিক সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছে, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে একটি জায়গায় ঐকমত্যে পৌঁছেছি যে পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ অপ্রাসঙ্গিক।’
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, সরকার উদ্যোগ নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় যাতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে এবং পরবর্তী কোনো প্রক্রিয়ায় যাতে রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ আর সক্রিয় হতে না পারে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রথম ধাপ হিসেবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে অকার্যকর করতে হবে। ৫ আগস্ট জনগণ যে রায় দিয়েছে, সেটাই হবে প্রাতিষ্ঠানিক রায়। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা সব রাজনৈতিক দলকে একমতের জায়গায় পেয়েছি।’
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘আমরা ছাত্র-নাগরিক যে উদ্যোগটি নিয়েছিলাম, জুলাই ঘোষণাপত্রের, সেটি যেন রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে প্রাতিষ্ঠানিক করতে পারি। আজ মনে হয়েছে, সেটারই একটি এক্সটেন্ডেট ভার্সন (বর্ধিত সংস্করণ) হচ্ছে জুলাই চার্টার। আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র দৃশ্যমান দেখতে চাই।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক ঐকমত য আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা আমাদের লক্ষ্য: আলী রিয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রিয়াজ বলেছেন, আলোচনার মধ্যদিয়ে আমাদের লক্ষ্য হলো একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে আমরা বাংলাদেশে একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারি। আমরা দেখেছি, গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে। শুধু তাই নয়, একটি ব্যক্তিতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এ দেশে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়ে আলোচনা শুরুর আগে তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রিয়াজ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে বিএনপির একটি বিশাল ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে এ দলটি দাবি উত্থাপন করেছে, কর্মসূচি দিয়েছে। ফ্যাসিবাদী শাসনের লড়াইয়ের পাশাপাশি সংস্কারের তাগিদ দিয়েছে বিএনপি। সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে সুপারিশগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সামনে অগ্রসর হতে চাই। যেগুলো আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে দিয়েছিলাম, তারই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি আন্তরিকভাবে, সুচিন্তিতভাবে তাদের মতামত জানিয়েছে। সংবিধান সংস্কার কমিশনের দায়িত্বপালনকালে বিএনপির সহযোগিতা পেয়েছি, তার জন্য আন্তরিকভাবে তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা এমন একটি জায়গায় পৌঁছাতে পারব যেখান থেকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ও সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পথরেখা নির্দেশ করবে। ইতিমধ্যে কিছু বিষয়ে বিএনপির একমত ও ভিন্ন মত আছে। আলোচনার মধ্যদিয়ে আমরা আশা করি, এক জায়গায় আসতে পারব। টেবিলের দুই ধারে বসলেও আমরা দুপক্ষ নই।’
সঞ্চালনা বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে ৬টি সংস্কার কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দেয়। এসব রিপোর্ট একটি অফিসিয়াল প্রসিডিউরের মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব। দেশের রাজনৈতিক দল, অরাজনৈতিক মহল, সিভিল সোসাইটির মতামত সাপেক্ষে এগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব। সেকারণে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলকে ওই সুপারিশসমূহ পাঠানো হয়েছিল। রাজনৈতিক দলগুলো সে বিষয়ে মতামত দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া মতামতের ভিত্তিতে এ আলোচনা শুরু হয়েছে। এ আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য কমিশনের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে ‘
বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রিয়াজের নেতৃত্বে সংস্কার কমিশনের প্রধানসহ ৫ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ বৈঠকে অংশ নেয়।