পঞ্চগড়ে অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতীয় নারী আটক, বৈঠকে হস্তান্তর
Published: 15th, February 2025 GMT
পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় সীমান্ত দিয়ে অবৈধপথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে এক ভারতীয় নারীকে (৪২) আটক করেছে বিজিবি। পরে তাকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের জয়ধরভাঙ্গা বর্ডার আউট পোস্টের (বিওপি) বিজিবি সদস্যরা এক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ওই নারীকে হস্তান্তর করেন।
এর আগে, সকাল ১০টায় চাকলাহাট ইউনিয়নের জাহের পাড়া এলাকার সীমান্ত পিলার ৭৬০-এর ১২ নম্বর সাব পিলার থেকে ৫০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে জয়ধরভাঙ্গা ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে আটক করে।
সন্ধ্যায় নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আটকের পর ওই নারীকে ক্যাম্পে নিয়ে যায় বিজিবি সদস্যরা। জিজ্ঞাসাবাদে ওই ভারতীয় নারী হিন্দিতে কথা বলছিলেন। নিজের নাম কখনো ‘শান্তি’ আবার কখনো ‘বাসন্তী’ বলে জানায়। তার ঠিকানা দিল্লী ও শ্বশুর বাড়ি বাংলাদেশের বগুড়া জেলায় বলে জানায় সে। তবে তার আচার-আচরণ মানসিক ভারসম্যহীনের মত বলে জানিয়েছে বিজিবি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, ভারতীয় নাগরিক আটকের বিষয়টি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের ৯৩ ব্যাটালিয়নের শ্যাম ক্যাম্পের কমান্ডারকে জানায় বিজিবি। পরে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ক্যাম্প কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে বিএসএস ওই নারী ভারতীয় মর্মে নিশ্চিত হয়ে ফেরত নিতে চায়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিএসএফের কাছে ওই ভারতীয় নারীকে হস্তান্তর করে বিজিবি।
বিজিবির জয়ধরভাঙ্গা ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েব সুবেদার শহিদুল ইসলাম বলেন, “ভারতীয় এক নারী নাগরিক বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের পরে আমাদের টহল দল তাকে আটক করে। নারীকে মানসিক ভারসমস্যহীন বলে মনে হয়েছে। পরে আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। এরই প্রেক্ষিতে বিএসএফের সাথে যোগাযোগ হলে তারা পতাকা বৈঠকে এসে ওই নারী ভারতীয় নাগরিক বলে নিশ্চিত হয়। পরে তাকে ফেরত নিতে চাইলে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর করেছি।”
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক শেখ মো.
ঢাকা/নাঈম/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসএফ র ওই ন র
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের সীমানায় ঢুকে জেলেদের ওপর বিএসএফের হামলা
বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে প্রবেশ করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সদস্যরা একদল জেলের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সীমান্তবর্তী কালিন্দি নদীর বয়ারসিং সংলগ্ন উলোখালীর চর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
এসময় জেলেদের মারধর করে তাদের দু’টি নৌকা বিএসএফ সদস্যরা ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী জেলেরা।
হামলার সময় ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়া জেলেরা সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে পায়ে হেঁটে লোকালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন বলে দাবি তাদের স্বজনদের।
বিএসএফের হামলার শিকার জেলেরা হলেন- শ্যামনগর উপজেলার টেংরাখালী গ্রামের মোহাম্মদের ছেলে রমজান, শাহাজান, ফরেজ গাজীর ছেলে শাহাদাৎ, শাহাজান, আতাউর, সৈয়দ গাজীর ছেলে আব্দুল, মানিকপুর গ্রামের কেরামত ও কৈখালীর নুর মোহাম্মদ।
ঘটনার শিকার শাহাদাৎ হোসেন জানান, পশ্চিম সুন্দরবনের কৈখালী স্টেশন থেকে পাস (অনুমতিপত্র) নিয়ে চারদিন আগে তারা সুন্দরবনে যান। তিনটি নৌকার ১২ জন জেলে দু’দিন ধরে বাংলাদেশের সীমানাভুক্ত উলোখালীর চরে পাটা জাল পেতে মাছ ধরছিলেন। একপর্যায়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দু’টি স্পিডবোট নিয়ে বিএসএফ সদস্যরা আকস্মিকভাবে সেখানে উপস্থিত হয়ে তাদের মারধর শুরু করেন।
শাহাদাৎ হোসেন আরও বলেন, এসময় তারা পেতে রাখা জাল ও সেখানে থাকা নৌকা ফেলে বনের মধ্যে ঢুকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে। এসময় জাল একইভাবে পাতা থাকলেও নৌকা দু’টি নিয়ে হামলার সঙ্গে জড়িত বিএসএফ সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। বর্ডার এলাকায় মাছ ধরতে যাওয়ার কারণে তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে।
স্থানীয় রমজাননগর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ লাল্টু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিএসএফের মারধরের শিকার আট জেলের মধ্যে ছয়জন তার এলাকার। বিএসএফ নৌকা নিয়ে উলোখালীর চর থেকে তাড়িয়ে দেওয়ায় তারা উপায়ন্তর না পেয়ে পায়ে হেঁটে বনের মধ্য দিয়ে লোকালয়ে ফিরছেন। পরে বেশি লোকজন ও নৌকা নিয়ে গিয়ে সেখানে পেতে রাখা জাল উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। জেলেরা এলাকায় ফিরলে বিষয়টি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের জানানো হবে।
এ বিষয়ে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মশিউর রহমান জানান, এখনো কেউ বিষয়টি তাদের অবহিত করেনি। খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিজিবি কৈখালী ক্যাম্পের সুবেদার আবু বক্কার জানান, স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বিষয়টি তাদের অবহিত করেছেন। ঘটনাটি বয়ারসিং এলাকার হওয়ায় ভুক্তভোগীদের অভিযোগ জানাতে সেখানকার বিজিবি (রিভারাইন) ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।