হঠাৎ ভোর রাতে নারায়ণগঞ্জে হাসনাত আব্দুল্লাহ
Published: 15th, February 2025 GMT
পবিত্র শবে বরাতের ভোর রাতে হঠাৎ নারায়ণগঞ্জে আসলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ৩টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পাঠানটুলি এলাকায় যান হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি সেখানে আব্বাস মঞ্জিলে ড. এনায়েত উল্লাহ আব্বাসীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
তার আসার খবরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি ও নাসিক ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ডিএইচ বাবুলসহ স্থানীয় বিএনপির নেতারা উপস্থিত হন। এ সময় তাদের কাছে হাসনাত আব্দুল্লাহ এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়।
আরো পড়ুন:
ডিএইচ বাবুল বলেন, ‘‘হাসনাত আব্দুল্লাহ পাঠানটুলি এলাকার আব্বাসী মঞ্জিলে আসেন ড.
তিনি বলেন, ‘‘সারা দেশের মতো নারায়ণগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও অনেকটা অস্বাভাবিক, প্রতিনিয়ত চুরি-ছিনতাই হচ্ছে, এছাড়া বিভিন্ন সময় হত্যাকাণ্ড ঘটছে, মাদকের ব্যাপকতা বেড়েছে, এসব বিষয় আমরা তার কাছে তুলে ধরি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য আমরা স্থানীয় নেতারা তার কাছে সহযোগিতার কথা বলি। তাকে অনুরোধ করি, তিনি যেন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।’’
ডিএইচ বাবুল জানান, হাসনাত আব্দুল্লাহ মূলত আব্বাসী হুজুরকে তার গ্রামের বাড়িতে একটি ওয়াজ অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিতে এসেছিলেন।
ঢাকা/অনিক/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর স থ ত এল ক র
এছাড়াও পড়ুন:
পেশাদারিত্ব সর্বাগ্রে
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলির মধ্যে নাগরিকের সর্বাপেক্ষা নিকটে থাকে বলিয়া পুলিশের জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তাও সর্বাধিক। বর্তমানে এহেন কর্মকাণ্ডে ভাটা পড়িয়াছে বলিয়াই প্রতীয়মান। রবিবার প্রকাশিত সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশের জনসম্পৃক্ত কর্মকাণ্ডে ভাটা পড়িয়াছে। আমরা বিস্মিত, গত বৎসর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ভাঙিয়া পড়া পুলিশি ব্যবস্থা স্বাভাবিক হইতে যথায় কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম বৃদ্ধি জরুরি ছিল, ততায় উহা বন্ধ রহিয়াছে! পুলিশের সহিত জনগণের দূরত্ব বৃদ্ধির কারণেই যে আইন প্রয়োগ করিতে গিয়া বাহিনীটিকে বারংবার বাধার মুখে পড়িতে হইতেছে– উহা অস্বীকার করা যাইবে না।
আমরা জানি, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সহিত পুলিশের সংযোগ স্থাপনের মধ্য দিয়া আস্থার সম্পর্ক গড়িয়া তুলিতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত ‘কমিউনিটি পুলিশিং’ কিংবা ‘বিট পুলিশিং’ প্রবর্তিত হইয়াছিল। জনসাধারণের সহিত মতবিনিময়ে সূচিত হইয়াছিল ‘ওপেন হাউস ডে’। কিন্তু পূর্বের শাসনামলে স্থানীয় পর্যায়ের প্রভাবশালী ও সক্রিয় অনেকে অনুপস্থিত কিংবা নিষ্ক্রিয় হইবার কারণে এই সকল কার্যক্রমে ভাটা পড়িয়াছে। আমরা মনে করি, এই সকল কার্যক্রম অবিলম্বে সূচিত হওয়া জরুরি। বরং পূর্বাপেক্ষা অধিক হারে চালাইবার বিকল্প নাই। পুলিশের বিদ্যমান সংকটময় সময়ে এই ধরনের কার্যক্রম যত বৃদ্ধি পাইবে, মানুষের সহিত ততোধিক সম্পর্ক তৈয়ার হইবে। ইহাতে যদ্রূপ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হইবে, তদ্রূপ অঞ্চলভিত্তিক অপরাধীরাও ভীত থাকিবে। সর্বোপরি পুলিশ সম্পর্কে মানুষের ভ্রান্ত ধারণা দূর হইবে।
আমরা দেখিয়াছি, রাজধানীর বিভিন্ন বিপণিবিতান ও আবাসিক এলাকার নিরাপত্তায় পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, তৎসহিত বেসরকারি কর্মীদিগের ‘অক্সিলারি ফোর্স’ তথা সহযোগী বাহিনীরূপে নিয়োগের কথা জানাইয়াছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ। এই সিদ্ধান্ত খুব বেশি সাড়া না ফেলিলেও কিছুদিন ধরিয়া ‘সিটিজেন ফোরাম’ গড়িয়া স্থানীয় বাসিন্দাদের সহিত সম্পর্কের ভিত তৈয়ারের চেষ্টা করিতেছে পুলিশ। উহাকে আমরা স্বাগত জানাই।
আমরা দেখিয়াছি, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবেও ছাত্রদিগের সমন্বয়ে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা প্রবর্তনের সুপারিশ রহিয়াছে। কারণ যুক্তরাজ্য, ভারতসহ অনেক দেশেই ছাত্রদিগের মাধ্যমে কমিউনিটি পুলিশিং পদ্ধতি প্রচলিত। পূর্বে কমিউনিটি পুলিশিং শুধু অপরাধ দমনের কৌশলরূপে সীমাবদ্ধ রাখা হইত। ইহার সহিত অফিস ও বাড়িতে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীদিগের পদ্ধতিগত কাঠামোর মাধ্যমে জনসম্পৃক্ত কার্যে যুক্ত করিলে নিরাপত্তা সুসংহত হইতে পারে। দেশে যেই গ্রাম আদালত ও চৌকিদারি ব্যবস্থা বিদ্যমান, উহাকে যথাযথরূপে কার্যকর করিলে অপরাধ দমন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সহযোগী ভূমিকা পালন করিতে পারে। এই ক্ষেত্রে কমিশন কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থার জন্য বাজেট বরাদ্দের যেই পরামর্শ দিয়াছে, উহা যথাযথ।
অবশ্য স্মরণে রাখিতে হইবে, ইতোপূর্বে পুলিশকে যেইভাবে দলীয়করণ করা হইয়াছিল, উহাই সকল সংকটের মূল। গত বৎসরের ডিসেম্বরে প্রকাশিত ‘কেমন পুলিশ চাই’ শীর্ষক জনমত জরিপে দেখা গিয়াছে, পুলিশকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের অবসান চায় প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ। বিরোধী দল-মত দমনে মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগ করা পুলিশ সদস্যদিগের শাস্তিও দাবি করিয়াছে মানুষ। ‘গায়েবি’ মামলার অবসান চান সকলেই। একই সঙ্গে পুলিশের দুর্নীতি বন্ধও এখনকার জনদাবি। মানুষের সেই মতামতের প্রতিফলনরূপেও পুলিশকে পেশাদার বাহিনীরূপে দাঁড় করানো জরুরি। অন্যথায় সম্পূরক কিংবা সহযোগী সকল পদক্ষেপই গরল ভেল হইতে বাধ্য। উদ্ভিদের মূল কর্তন করিয়া অগ্রভাগে জলসিঞ্চনে ফল পাইবার সম্ভাবনা শূন্যই বটে।