সব শোনার পর সুরভিদি কি বলবে, ‘বাচ্চু তুই! এত শয়তানি তোর মাথায়!’
Published: 15th, February 2025 GMT
তখন ক্লাস টু কি থ্রিতে পড়ি। সুরভিদির প্রেমে পড়ে গেলাম। একেবারে একতরফা প্লেটোনিক লাভ। সুরভিদি ক্লাস সেভেন বা এইটে পড়ত। মফস্সল এলাকা, মেয়েরা একটু দেরিতেই স্কুলে ভর্তি হতো। তো আমি সুরভিদির হাসি, কথা বলা, দাঁড়ানোর ভঙ্গি, গালের টোলে আবিষ্ট হয়ে গেলাম।
হেডস্যারের ছেলে হওয়ার সুবাদে বাড়তি খাতির পেতাম। সুযোগ পেলেই সুরভিদির আশপাশে ঘুরঘুর করতাম, যদি সুরভিদির কোনো কাজে লাগি, ‘এই বাচ্চু, যা তো, বাদাম এনে দে তো ভাই’ কিংবা ‘বুট এনে দাও না, লক্ষ্মীটি’।
আমি হাওয়ায় উড়ে যেতাম, হাওয়ায় উড়ে আসতাম। বাড়তি পাওনা তার সবুজ মুঠোয় ভরা চার–পাঁচটি বাদাম, যার স্বাদ ছিল অসাধারণ।
সুরভিদি যদি বলত, ‘এই বাচ্চু, যা তো সুরঞ্জনকে খুন করে আয়’। বিনা বাক্যে খুন করে রক্তাক্ত ছুরি হাতে নিয়ে সুরভিদির সামনে দাঁড়িয়ে বলতাম, সুরভিদি, আমি সুরঞ্জনকে খুন করে এসেছি, আর কী করতে হবে বলো।
হেডস্যারের বাসা স্কুল লাগোয়া হওয়ায় ছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে বা ঝড়-বাদলে বাড়ি ফিরতে না পারলে সাময়িক আশ্রয়স্থল ছিল আমাদের বাসা। সে সময় তো আর এ রকম রিকশা, টমটম, অ্যাম্বুলেন্স ছিল না। থানা হাসপাতাল ছিল বেশ দূরে, আর ওখানে গেলে লাল লাল কিছু ট্যাবলেট ছাড়া আর কিছুই মিলত না।
একদিন পড়ন্ত বিকেলে স্কুল থেকে বাসায় ফিরে দেখি, কে জানি আমার খাটে লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। লেপ সরিয়েই দেখি সুরভিদি। আমার চারপাশে মনে হয় হাজারটা বোমা ফাটল।
‘বাচ্চু, আমার জ্বর রে.
সুরভিদির গ্রিবা, কপোল, ঠোঁট-মুখজুড়ে স্ফটিক স্বচ্ছ জলের কণার মতো ঘাম। আমি কিছুই শুনতে পাচ্ছিলাম না। শ্বেতবিন্দুর মতো জলকণার সমষ্টি যে একটা নারীকে এত মোহনীয় করে তোলে, এমনটা আমি আর দেখিনি। মোহাবিষ্টের মতো হা করে তাকিয়েই ছিলাম।
তারপর সুরভিদিকে আর দেখিনি। রূপবতী ছিল। মনে হয় অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। এখন নিশ্চয় দাদি-নানি হয়েছেন। আমাকে দেখলে চিনতেই পারবে না। আর যদি শোনে আমি তার...প্রথমে হতবাক তো হবেনই, এরপর যুগপৎ হেসে কুটি কুটি হবে। আচ্ছা, তখন কি বলবে, ‘বাচ্চু তুই! এত শয়তানি তোর মাথায়!’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক-প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়াতে শিক্ষা উপদেষ্টার তাগিদ
দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক ও প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়াতে তাগিদ দিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল ইসলাম আবরার। তিনি শিল্পের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এ বিষয়গুলোতে নজর রেখে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে দক্ষতা ও বাস্তবমুখী করা জরুরি।
মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক নয়, বরং সহায়ক কর্তৃপক্ষ হিসেবে ভূমিকা রাখবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বায়ত্তশাসন ও শিক্ষাক্রমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে তাদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া গুণগতমান উন্নয়ন ও গবেষণা কার্যক্রমকে উৎসাহিত করতে নীতিগত সহায়তা দেওয়া হবে।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর প্রক্রিয়া চলমান। এর মাধ্যমে গবেষণা ও নতুন উদ্ভাবনের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা দেশ ও জাতির কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় যথাসম্ভব সহায়তা করবে।
উপদেষ্টার বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির নেতারা বলেন, শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একাডেমিয়া ও শিল্পখাতের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করছে। আগামীতে এ কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির চেয়ারম্যান ড. সবুর খান অলাভজনক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর করারোপ প্রসঙ্গে বলেন, যে পরিমাণ অর্থ কর হিসেবে আদায় করা হয়েছে, তা গবেষণা কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য পুনরায় বরাদ্দ করা উচিত। এ অর্থ উদ্ভাবনী গবেষণা, প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে ব্যয় হলে উচ্চশিক্ষা খাত আরও সমৃদ্ধ হবে।
বৈঠকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপউপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের পদ্ধতি প্রসঙ্গে সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আবেদীন বলেন, প্রতিটি পদের জন্য ১৫-২০ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তিনজন অধ্যাপকের নাম প্রস্তাব করতে হয়। সে হিসাবে সহস্রাধিক মানসম্পন্ন অধ্যাপক পাওয়া চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমিতির কোষাধ্যক্ষ কে বিএ ম মঈন উদ্দিন চিশতি বলেন, একটি মানসম্পন্ন ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য কয়েকশ কোটি টাকার প্রয়োজন হয়। আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে নিজস্ব অর্থায়নে জমি কেনার পর ক্যাম্পাস নির্মাণে অর্থের সংস্থান করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তিনি স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ পাওয়ার বিষয়ে সরকারি সহায়তার কথা উল্লেখ করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য কাইয়ূম রেজা চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।