তখন ক্লাস টু কি থ্রিতে পড়ি। সুরভিদির প্রেমে পড়ে গেলাম। একেবারে একতরফা প্লেটোনিক লাভ। সুরভিদি ক্লাস সেভেন বা এইটে পড়ত। মফস্‌সল এলাকা, মেয়েরা একটু দেরিতেই স্কুলে ভর্তি হতো। তো আমি সুরভিদির হাসি, কথা বলা, দাঁড়ানোর ভঙ্গি, গালের টোলে আবিষ্ট হয়ে গেলাম।

হেডস্যারের ছেলে হওয়ার সুবাদে বাড়তি খাতির পেতাম। সুযোগ পেলেই সুরভিদির আশপাশে ঘুরঘুর করতাম, যদি সুরভিদির কোনো কাজে লাগি, ‘এই বাচ্চু, যা তো, বাদাম এনে দে তো ভাই’ কিংবা ‘বুট এনে দাও না, লক্ষ্মীটি’।

আমি হাওয়ায় উড়ে যেতাম, হাওয়ায় উড়ে আসতাম। বাড়তি পাওনা তার সবুজ মুঠোয় ভরা চার–পাঁচটি বাদাম, যার স্বাদ ছিল অসাধারণ।

সুরভিদি যদি বলত, ‘এই বাচ্চু, যা তো সুরঞ্জনকে খুন করে আয়’। বিনা বাক্যে খুন করে রক্তাক্ত ছুরি হাতে নিয়ে সুরভিদির সামনে দাঁড়িয়ে বলতাম, সুরভিদি, আমি সুরঞ্জনকে খুন করে এসেছি, আর কী করতে হবে বলো।

হেডস্যারের বাসা স্কুল লাগোয়া হওয়ায় ছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে বা ঝড়-বাদলে বাড়ি ফিরতে না পারলে সাময়িক আশ্রয়স্থল ছিল আমাদের বাসা। সে সময় তো আর এ রকম রিকশা, টমটম, অ্যাম্বুলেন্স ছিল না। থানা হাসপাতাল ছিল বেশ দূরে, আর ওখানে গেলে লাল লাল কিছু ট্যাবলেট ছাড়া আর কিছুই মিলত না।

একদিন পড়ন্ত বিকেলে স্কুল থেকে বাসায় ফিরে দেখি, কে জানি আমার খাটে লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। লেপ সরিয়েই দেখি সুরভিদি। আমার চারপাশে মনে হয় হাজারটা বোমা ফাটল।

‘বাচ্চু, আমার জ্বর রে.

..।’

সুরভিদির গ্রিবা, কপোল, ঠোঁট-মুখজুড়ে স্ফটিক স্বচ্ছ জলের কণার মতো ঘাম। আমি কিছুই শুনতে পাচ্ছিলাম না। শ্বেতবিন্দুর মতো জলকণার সমষ্টি যে একটা নারীকে এত মোহনীয় করে তোলে, এমনটা আমি আর দেখিনি। মোহাবিষ্টের মতো হা করে তাকিয়েই ছিলাম।

তারপর সুরভিদিকে আর দেখিনি। রূপবতী ছিল। মনে হয় অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। এখন নিশ্চয় দাদি-নানি হয়েছেন। আমাকে দেখলে চিনতেই পারবে না। আর যদি শোনে আমি তার...প্রথমে হতবাক তো হবেনই, এরপর যুগপৎ হেসে কুটি কুটি হবে। আচ্ছা, তখন কি বলবে, ‘বাচ্চু তুই! এত শয়তানি তোর মাথায়!’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে ক্যারিয়ার সেরা অবস্থানে নিগার-শারমিন 

আইসিসির নারী ক্রিকেটারদের ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে ব্যাটিং বিভাগে ক্যারিয়ার সেরা অবস্থানে উঠে এসেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ও টপ অর্ডার ব্যাটার শারমিন আক্তার। পাকিস্তানে ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের প্রথম দুই ম্যাচে ভালো খেলায় র‌্যাঙ্কিংয়ে পুরস্কার পেয়েছেন তারা। 

নিগার সুলতানা থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ১০১ রানের ইনিংস খেলেন। যা তার আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। ওই ম্যাচে বাংলাদেশ ১৭৮ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পায়। পরের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন জাতীয় দলের এই অধিনায়ক। 

দারুণ ওই দুই ইনিংস খেলায় ব্যাটিং র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৬ লাফ দিয়ে ১৭তম অবস্থানে উঠে এসেছেন জ্যোতি। তার মতো থাইল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাট হাতে ভালো করেছেন শারমিন আক্তার। তিনি থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৪ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে করেন ২৪। শারমিন ব্যাটিং র‌্যাঙ্কিংয়ে ১১ ধাপ এগিয়ে ২৯তম অবস্থানে এসেছেন। 
 
ওয়ানডের বোলিং র‌্যাঙ্কিংয়েও এগিয়েছেন বাংলাদেশের দুই বোলার। রাবেয়া খান সাত ধাপ এগিয়ে ২৩তম অবস্থানে উঠেছেন। ফাহিমা খাতুন তিন ধাপ এগিয়ে ৪৮তম অবস্থানে আছেন। 

আইসিসির ওয়ানডের ব্যাটিং র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার লওরা উলভার্ট, দুইয়ে আছেন স্মৃতি মান্দানা, তিনে আছেন নাতালিয়া স্কাইভার ব্রান্ট। ওয়ানডের বোলিং র‌্যাঙ্কিংয়ে ইংল্যান্ডের সোফি এসলেসটন শীর্ষে আছেন, অ্যাশ গার্ডনার আছেন দুইয়ে। অলরাউন্ডার র‌্যাঙ্কিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাশ গার্ডনার আশেন শীর্ষে।

ভারতে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বসবে ওয়ানডে ফরম্যাটের বিশ্বকাপ। বাংলাদেশ বাছছাইপর্বের প্রথম দুই ম্যাচে জয় পেয়েছে। তৃতীয় ম্যাচে আজ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুতে ব্যাট করছে জ্যোতির দল।   

সম্পর্কিত নিবন্ধ