সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে শিগগির বৈঠক: আলী রীয়াজ
Published: 15th, February 2025 GMT
সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদন নিয়ে শিগগির প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
আলী রীয়াজ বলেন, সংলাপ নয়, আজকের লক্ষ্য ছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রক্রিয়া কী হবে, সে বিষয়ে আলোচনা। মূলত এটাকে আমরা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হিসেবে বিবেচনায় নিয়েছি। এখানে ২৭টির বেশি দল ও জোট মিলিয়ে ১০০ জনের বেশি নেতা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ৩২ জন কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের বক্তব্যে যেটি স্পষ্ট হয়েছে, তা হলো- তারা মনে করে, জাতীয় ঐক্য রক্ষার কোনো বিকল্প নেই। সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে তারা দৃঢ়চিত্ততা প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়াকে সাহায্য-সহযোগিতা করবে ও অংশ নেবে। প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান বলেছেন, ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই৷ আমরা প্রত্যেকে রাজনৈতিক দল হিসেবে, সমাজের নাগরিক হিসেবে, মানুষ হিসেবে এই সংস্কার প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নেওয়া দায়িত্ব।
ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আমরা আশা করছি, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাজ এখন শুরু হবে। আমরা আলাদা করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলব। জোটগতভাবেও কথা বলব। হয়তো একপর্যায়ে সবাই একত্রিত হয়ে আবার ফিরে আসব। এই প্রক্রিয়াটা আমরা দীর্ঘসূত্রতা করতে চাই না, অল্প কিছু দিনের মধ্যেই এটা করতে পারব। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে আমাদের অনুরোধ করা হয়েছে- যেসব প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর তাদের কাছে হার্ড কপি দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নিতে। সর্বোপরি ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কারও কোনো রকম দ্বিধার সুযোগ নেই। সে আলোকে খুব দ্রুত আমরা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে অগ্রসর হতে চাই। যতটুকু কাজ হয়েছে, তা সূচনা মাত্র।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করতে কতদিন লাগতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, এই কমিশনের মেয়াদ ৬ মাস। সেক্ষেত্রে কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে, যত দ্রুত সম্ভব আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে চাই। যেহেতু ছয়টি কমিশনের প্রতিবেদন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও আমরা দিয়েছি। সেগুলো পর্যালোচনা করার জন্য তাদের একটু সময় দিতে হবে। আমরা চাই, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে। কেননা এই সংস্কার কর্মসূচিগুলো অগ্রসর হওয়া এবং ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা দরকার, যেন আমরা নির্বাচনের পথে এগোতে পারি।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি, ছয় মাসের কম সময়ে সম্ভব হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর আগ্রহ আছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনও মনে করে যত দ্রুত সম্ভব। এটা তো এক সঙ্গে হবে না, কিছুটা সময় লাগবে অগ্রসর হতে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আল র য় জ
এছাড়াও পড়ুন:
খেলাফত মজলিসের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা শুরু
সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশ নিয়ে ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে সকাল ১০টার দিকে এই আলোচনা শুরু হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন, ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বৈঠকে রয়েছেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।
বৈঠকের শুরুতে খেলাফত মজলিসকে শুভেচ্ছা জানিয়ে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সংস্কার কমিশনগুলোর একমাত্র উদ্দেশ্য হলো জনগণের অধিকার নিশ্চিত ও দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা প্রতিষ্ঠা করা।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সংবিধান সংস্কার, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ এবং জনপ্রশাসন সংস্কারসংক্রান্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ এর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছিল। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পরিক্রমায় আজ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
আলী রীয়াজ আরও বলেন, ‘আর কোনো ফ্যাসিবাদ যাতে গড়ে উঠতে না পারে। মানুষ যেন গুম, খুন, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার না হয়। সে রকমই এক নতুন বাংলাদেশ গড়া আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’
খেলাফত মজলিসের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মাওলানা ইউসূফ আশরাফের নেতৃত্বে বৈঠকে অংশ নেয় দলের মহাসচিব জালাল আহমেদ ও যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী।
সংস্কার কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাওলানা ইউসূফ আশরাফ বলেন, ‘আমরা এর আগে বিভিন্ন সংস্কার প্রসঙ্গে সুনির্দিষ্ট মতামত পেশ করেছি। সেগুলোর বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা হবে। আলোচনা শেষে আমরা বিস্তারিত কথা বলতে পারব।’