ইতিহাসচর্চায় বিশেষ অবদান রাখবে বইটি: মফিদুল হক
Published: 15th, February 2025 GMT
ইতিহাস অনুধাবনে আঞ্চলিক ইতিহাসের গুরুত্ব অপরিসীম। রাজধানী ঢাকার চাইতেও প্রাচীন নারায়ণগঞ্জ। যে কাজ একদল ঐতিহাসিকের; বড় মাপের প্রকল্প ছাড়া সম্পাদনের কথা ভাবা যায় না, আপন তাগিদে সেই গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন লেখক ও সংস্কৃতিকর্মী রফিউর রাব্বি। তাঁর ‘নারায়ণগঞ্জের সংস্কৃতি ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ বইয়ে অকীর্তিত ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, শিল্প-বাণিজ্য ইত্যাদি ফুটে উঠেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসচর্চায় বিশেষ অবদান রাখবে বইটি।
শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ নগরের চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘নারায়ণগঞ্জের সংস্কৃতি ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ ও ‘বৃত্তের বাইরে’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও লেখক মফিদুল হক এসব কথা বলেন। বই দুটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।
সংগঠনটির সভাপতি জিয়াউল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর রায়ের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শওকত আরা হোসেন, লেখক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।
লেখক মফিদুল হক বলেন, নারায়ণগঞ্জের ইতিহাস সুপ্রাচীন। যে জনপদের ইতিহাস অনেকভাবে উপেক্ষিত। বাংলার ইতিহাস বলতে ৪০০ বছর আগে মোগল রাজধানী হিসেবে ঢাকার যে গৌরব। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ প্রাচীন এক জনপদ। এই জনপদের সঙ্গে বহু ইতিহাস জড়িত। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আঞ্চলিক ইতিহাস, জনমানুষের ইতিহাস না জানি, তাহলে আমরা আমাদের ইতিহাসকে সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারব না। বাঙালি নানা ধর্মের মানুষ জাতিসত্তায় আমরা বলি হাজার বছরের বাংলাদেশ। সেখানে আমরা এটাও বলতে পারি, হাজার বছরের নারায়ণগঞ্জ।’
মফিদুল হক আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে নানাভাবে দুর্বৃত্তায়ন ঘটেছে, অন্ধকারের শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সেই শক্তি আজও তৎপর। এর বিপরীতে যে লড়াই বাংলাদেশের মানুষ আলাদাভাবে স্বীকৃতি দেয়। সারা বাংলাদেশে যখন অন্ধতা গ্রাস করছে, নারায়ণগঞ্জ তখন আশার আলো ফুটিয়ে রেখেছে। প্রকাশনা অনুষ্ঠানের বই দুটি অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। সবকিছু মিলিয়ে বই দুটি শুধু ইতিহাসের বই নয়, আমাদের আজকের জীবনের বই, জীবনের জটিলতার মধ্য থেকে পথ খুঁজে পাওয়ার একটি দিকনির্দেশনা।
রফিউর রাব্বি তাঁর নিজের ছেলেকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান না হয়ে শোককে শক্তিতে পরিণত হয়ে বই লিখেছেন উল্লেখ করে ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, নারায়ণগঞ্জের সংস্কৃতির ইতিহাস বইটি একটি আকরগ্রন্থ। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে বিদ্বান ও গুণী মানুষের কদর নেই। দুর্নীতিবাজ ও লেখাপড়া না জানা মানুষেরা সব সময় স্বীকৃত হয়। তারা অনেক সময় অনেক কিছু পায়, যা পাওয়া উচিত নয়। এই বই থেকে নারায়ণগঞ্জ সম্পর্কে আপনারা অনেক কিছু জানতে পারবেন।’
অধ্যাপক শওকত আরা হোসেন বলেন, ‘আপনারা ৭১ দেখেননি। আমি ৭১-এর ভয়াবহতা দেখেছি। আপনারা একাত্তর ও মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করবেন। জয় বাংলা আপনার-আমার স্লোগান না, জয় বাংলা কবি নজরুলের। সেই জয় বাংলাকে আমরা ধারণ করি, জয় বাংলা স্লোগান নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছি। আপনারা নিজের ইতিহাসের কথা ভুলে যাবেন না। আপনারা যে ধর্মের হোন, ধর্মের ওপর বিশ্বাস রাখবেন, মানুষের ওপর অত্যাচার করবেন না।’
অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে লেখক রফিউর রাব্বি বলেন, ‘আমাদের নারায়ণগঞ্জের গৌরবের বিশাল একটি ঐতিহ্য আছে। আমরা যারা নারায়ণগঞ্জে বসবাস করি, তা আমাদেরই অজানা। ঢাকা শহরেরও শত শত বছর আগে আমাদের নারায়ণগঞ্জ গড়ে উঠেছিল। এখানে শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা বাণিজ্য বিশাল একটি অবয়ব ছিল। তারপরও আমাদের এই নারায়ণগঞ্জ সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। নেতিবাচক ভাবমূর্তি থেকে বের হওয়ার জন্যই সত্যের মুখোমুখি ও সঠিক ইতিহাসটা জানার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের পূর্বসূরি যারা তাদের জানার প্রয়োজন রয়েছে, তেমনি আমাদের উত্তরসূরি যারা, তাদেরও জানার প্রয়োজন রয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ র অন ষ ঠ ন র আম দ র আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
বর্ণিল সাজে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র বৈশাখী শোভাযাত্রা
বাংলা নবর্বষকে স্বাগত জানিয়ে ১৪৩২ এর আগমনে "নববর্ষের ঐকতান ফ্যাসিবেদের অবসান" এই স্লোগান নিয়েই বর্ণিল সাজে শহরে বিশাল বৈশাখী শোভাযাত্রা বের করেছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেল চারটায় শহরের মিশন পাড়া হোসিয়ারি কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থেকে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে বৈশাখী শোভাযাত্রাটি বের করা হয়।
এসময়ে বাংলার ঐতিহ্যের বহনকারী সাজ-সজ্জায় সজ্জিত হয়ে ঘোড়ার গাড়ি, পালকিসহ প্লে-কার্ড নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ করেন মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা । শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মন্ডলপাড়া গিয়ে শেষ হয়।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে শোভাযাত্রায় আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এড. জাকির হোসেন, মনির হোসেন খান, আনোয়ার হোসেন আনু, ফহেত মোহাম্মদ রেজা রিপন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এড. রফিক আহমেদ, ডা. মজিবুর রহমান, মাসুদ রানা, এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান, মাহবুব উল্লাহ তপন, বরকত উল্লাহ, রাশিদা জামাল, ফারুক হোসেন, কামরুল ইসলাম চুন্নু সাউদ, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ, সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশিদ লিটন, বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি শাহেনশাহ আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক রানা, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক, মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদ, মহানগর শ্রমিকদলের আহ্বায়ক এস এম আসলাম, সদস্য সচিব ফারুক হোসেন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা, সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু, বিএনপি নেতা আক্তার হোসেন, আবুল হোসেন রিপন, আক্তার হোসেন, শেখ সেলিম, আলমগীর কবির চঞ্চল, ইকবাল হোসেন, নজরুল ইসলাম সরদার, শাহাদুল্লাহ মুকুল, সাইফুল ইসলাম বাবু, হিরা সরদার, ইকবাল হোসেন, সোহেল খান বাবু, মহানগর কৃষক দলের সভাপতি খন্দকার এনামুল হক স্বপন, মহানগর মহিলাদলের সভানেত্রী দিলারা মাসুদ ময়না, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহাদুল্লাহ মুকুল, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, গোগনগর বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়াজী, আলীরটেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আঃ রহমান, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তাঁরা মিয়া, সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমেদ, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদ খন্দকার, সাধারণ সম্পাদক মহসিন মিয়া, মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মামুন ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক শাহেন শাহ্ মিঠু, বন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রাজু আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহাজাদা আলম রতন, মহানগর ওলামা দলের আহ্বায়ক হাফেজ শিবলীসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীর।