ইতিহাস অনুধাবনে আঞ্চলিক ইতিহাসের গুরুত্ব অপরিসীম। রাজধানী ঢাকার চাইতেও প্রাচীন নারায়ণগঞ্জ। যে কাজ একদল ঐতিহাসিকের; বড় মাপের প্রকল্প ছাড়া সম্পাদনের কথা ভাবা যায় না, আপন তাগিদে সেই গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন লেখক ও সংস্কৃতিকর্মী রফিউর রাব্বি। তাঁর ‘নারায়ণগঞ্জের সংস্কৃতি ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ বইয়ে অকীর্তিত ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, শিল্প-বাণিজ্য ইত্যাদি ফুটে উঠেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসচর্চায় বিশেষ অবদান রাখবে বইটি।

শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ নগরের চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘নারায়ণগঞ্জের সংস্কৃতি ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ ও ‘বৃত্তের বাইরে’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও লেখক মফিদুল হক এসব কথা বলেন। বই দুটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।

সংগঠনটির সভাপতি জিয়াউল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর রায়ের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শওকত আরা হোসেন, লেখক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।

লেখক মফিদুল হক বলেন, নারায়ণগঞ্জের ইতিহাস সুপ্রাচীন। যে জনপদের ইতিহাস অনেকভাবে উপেক্ষিত। বাংলার ইতিহাস বলতে ৪০০ বছর আগে মোগল রাজধানী হিসেবে ঢাকার যে গৌরব। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ প্রাচীন এক জনপদ। এই জনপদের সঙ্গে বহু ইতিহাস জড়িত। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আঞ্চলিক ইতিহাস, জনমানুষের ইতিহাস না জানি, তাহলে আমরা আমাদের ইতিহাসকে সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারব না। বাঙালি নানা ধর্মের মানুষ জাতিসত্তায় আমরা বলি হাজার বছরের বাংলাদেশ। সেখানে আমরা এটাও বলতে পারি, হাজার বছরের নারায়ণগঞ্জ।’

মফিদুল হক আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে নানাভাবে দুর্বৃত্তায়ন ঘটেছে, অন্ধকারের শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সেই শক্তি আজও তৎপর। এর বিপরীতে যে লড়াই বাংলাদেশের মানুষ আলাদাভাবে স্বীকৃতি দেয়। সারা বাংলাদেশে যখন অন্ধতা গ্রাস করছে, নারায়ণগঞ্জ তখন আশার আলো ফুটিয়ে রেখেছে। প্রকাশনা অনুষ্ঠানের বই দুটি অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। সবকিছু মিলিয়ে বই দুটি শুধু ইতিহাসের বই নয়, আমাদের আজকের জীবনের বই, জীবনের জটিলতার মধ্য থেকে পথ খুঁজে পাওয়ার একটি দিকনির্দেশনা।

রফিউর রাব্বি তাঁর নিজের ছেলেকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান না হয়ে শোককে শক্তিতে পরিণত হয়ে বই লিখেছেন উল্লেখ করে ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, নারায়ণগঞ্জের সংস্কৃতির ইতিহাস বইটি একটি আকরগ্রন্থ। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে বিদ্বান ও গুণী মানুষের কদর নেই। দুর্নীতিবাজ ও লেখাপড়া না জানা মানুষেরা সব সময় স্বীকৃত হয়। তারা অনেক সময় অনেক কিছু পায়, যা পাওয়া উচিত নয়। এই বই থেকে নারায়ণগঞ্জ সম্পর্কে আপনারা অনেক কিছু জানতে পারবেন।’

অধ্যাপক শওকত আরা হোসেন বলেন, ‘আপনারা ৭১ দেখেননি। আমি ৭১-এর ভয়াবহতা দেখেছি। আপনারা একাত্তর ও মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করবেন। জয় বাংলা আপনার-আমার স্লোগান না, জয় বাংলা কবি নজরুলের। সেই জয় বাংলাকে আমরা ধারণ করি, জয় বাংলা স্লোগান নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছি। আপনারা নিজের ইতিহাসের কথা ভুলে যাবেন না। আপনারা যে ধর্মের হোন, ধর্মের ওপর বিশ্বাস রাখবেন, মানুষের ওপর অত্যাচার করবেন না।’

অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে লেখক রফিউর রাব্বি বলেন, ‘আমাদের নারায়ণগঞ্জের গৌরবের বিশাল একটি ঐতিহ্য আছে। আমরা যারা নারায়ণগঞ্জে বসবাস করি, তা আমাদেরই অজানা। ঢাকা শহরেরও শত শত বছর আগে আমাদের নারায়ণগঞ্জ গড়ে উঠেছিল। এখানে শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা বাণিজ্য বিশাল একটি অবয়ব ছিল। তারপরও আমাদের এই নারায়ণগঞ্জ সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। নেতিবাচক ভাবমূর্তি থেকে বের হওয়ার জন্যই সত্যের মুখোমুখি ও সঠিক ইতিহাসটা জানার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের পূর্বসূরি যারা তাদের জানার প্রয়োজন রয়েছে, তেমনি আমাদের উত্তরসূরি যারা, তাদেরও জানার প্রয়োজন রয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ র অন ষ ঠ ন র আম দ র আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্ধিরগঞ্জে তারেক রহমানের ঈদ উপহার পেল ২'শ ৫০ পরিবার

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ২’শ ৫০ পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানরে ঈদ উপহার বিতরণ করেছে নাসিক ২নং ওয়ার্ড বিএনপি।

বৃহস্পতিবার সকালে মিজমিজি দক্ষিণপাড়া আমজাদ মার্কেট এলাকায় এসব ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপসস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ।

অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, এই উপহার সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দিতে পেরে আমরা গর্বিত। কেননা যিনি বিগত সরকারের অত্যাচার-নির্যাতন-নিপিড়ণে জর্জরিত হয়েছেন, সেই তারেক রহমান এই উপহার পাঠিয়েছেন।

তিনি মানুষকে ভুলে যাননি, তিনি সকল দুর্যোগে সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন এবং থাকবেন।  তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করছি। বিএনপি সবসবম সাধারণ মানুষের পাশে আছে এবং থাকবে।

নাসিক ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাকের আহমেদ সোহান, ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোক্তার হোসেন মুক্তুল, সাবেক সহ-সভাপতি মো. গোলজার হোসেন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মামুন মিয়া, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, সাবেক দপ্তর সম্পাদক আরিফুল ইসলাম ঝিমি, সাবেক সহ-সভাপতি মো. রাজা মিয়া, সাবেক যুব বিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাব্বি প্রমূখ। #

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুনামগঞ্জে পূর্ব বিরোধের জেরে সংঘর্ষে আহত ২০
  • রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দে সম্মানে গণ অধিকার পরিষদের ইফতার 
  • পোশাকশ্রমিকদের ঈদভাবনা: নেওয়ার চেয়ে পরিবারকে দিতে পারাই বেশি আনন্দের
  • স্বাধীনতা দিবসে মিতালী মার্কেট বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভা
  • তারা আওয়ামীলীগের উপরে ভর করে দল ভারি করতে চায় : আজাদ 
  • ‘বিএনপিতে সংস্কারপস্থিদের স্থান হবে না’ 
  • সিদ্ধিরগঞ্জে তারেক রহমানের ঈদ উপহার পেল ২'শ ৫০ পরিবার
  • ‘মব’ তৈরি করে ছাত্র ফেডারেশনের কর্মীকে ছাত্রলীগ বলে মারধর
  • রাজবাড়ী জেলা যুবলীগের সভাপতি শওকত গ্রেপ্তার
  • রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর এক কাতলা বিক্রি হলো ৭০ হাজার টাকায়