প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক পদে সুপারিশপ্রাপ্তরা চাকরিতে নিয়োগের দাবিতে ১০ দিন ধরে শাহবাগে অবস্থান করছেন। সেখানে গিয়ে দেখা হলো ২ মাস বয়সী এক সন্তানের মায়ের সঙ্গে। তিনি স্বামী হারিয়ে নিরুপায় হয়ে রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছেন। কথা হলো কয়েকজনের সঙ্গে যাঁরা কোলের শিশুকে নিয়ে এসেছেন। রোদ-ঘামে-ধুলায় শিশুরা ক্লান্ত। আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ জলকামানের পানিতে ভিজে অসুস্থ হয়ে গেছেন, জ্বরে ভুগছেন।

তাঁদের দুই চোখ বলে দিচ্ছে, কী অনিশ্চয়তা, কষ্ট, অপমান ও অবহেলার শিকার হয়ে তাঁরা আজ এভাবে দাঁড়িয়ে আছেন। একজন এসে ছবি দেখালেন, দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে শায়িত অবস্থায় পুলিশ লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে। একজন জানালেন, পুলিশ বলেছে, এখানে বসে না থেকে স্বামীর ঘর করতে। ধরেই নিয়েছেন, এই নারীরা স্বামীর আয়েই চলেন।

একজন এসে বললেন, ‘চাকরি নেই শুনে স্বামীও ছেড়ে চলে গেছে।’ অনেকের তো স্বামীই নেই। কেউ কেউ তার আগের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কাগজপত্রও দেখালেন। সবারই প্রশ্ন, এখন আমাদের কী হবে?

১০ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচিতে আসা লড়াকু নারীরা কক্সবাজার, নোয়াখালী, হাতিয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন এই কর্মসূচিতে। সারা দিন শাহবাগে অবস্থান করে রাতে প্রেসক্লাবে রাস্তায় গিয়ে ঘুমান। সকালে আবার ফিরে আসেন শাহবাগে। রোববার হাইকোর্টের শুনানির অপেক্ষায় দিন গুনছেন তাঁরা।

প্রতিটি আন্দোলন থেকেই আমরা কিছু না কিছু শিখছি; অথবা বলা যায় শেখা উচিত। এগুলোকে শুধুই বিভিন্ন গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার আন্দোলন হিসেবে দেখলে হবে না। সংস্কারের তাগিদেই প্রতিটির পেছনের ইতিহাস দেখা জরুরি। আন্দোলনটি সেদিক থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আমাদের সামনে নিয়ে এসেছে।

প্রথমত, গণ-অভ্যুত্থানের আগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির নিয়োগ কি নতুন কোটাব্যবস্থা অনুযায়ী হবে, নাকি আগের আইন অনুযায়ী হবে। এ ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, ২০২৩ সালে বিজ্ঞপ্তি দিলেও ২০২৪–এর ২১ এপ্রিল লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। ১২ জুন ভাইভা (মৌখিক পরীক্ষা) অনুষ্ঠিত হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন।

সব জেলার প্রায় সব উপজেলার চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্তরা যোগদানপত্রও হাতে পেয়েছে, বাকি ছিল শুধু পদায়ন। অর্থাৎ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগের নিয়মেই নিয়োগ হবে, যেহেতু তাদের বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষা সবই আগের নিয়মে হয়েছে। এ কারণে সরকার নিয়োগ আদেশও জারি করেছিল। সাধারণ যুক্তিতে সরকারের এই সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল বলেই প্রতীয়মান হয়।

কিন্তু যাঁরা সুপারিশপ্রাপ্ত হননি, তাঁদের রিটের ভিত্তিতে হাইকোর্ট ২ ফেব্রুয়ারি ফলাফল বাতিল ঘোষণা করেন। দেখা যাচ্ছে, সমস্যাটা শুরু হয়েছে হাইকোর্টের রায় দেওয়ার পর। প্রশ্ন হচ্ছে, হাইকোর্ট কিসের ভিত্তিতে সরকারের সিদ্ধান্তের বিপরীতে সাড়ে ছয় হাজার মানুষের নিয়োগ বাতিল করলেন?

দ্বিতীয় প্রশ্নটি হলো, আগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কোনোটি আগের পদ্ধতি অনুসরণ করে, আবার কোনোটি পরের পদ্ধতি অনুসরণ করা কি সংগতিপূর্ণ হবে? প্রাইমারি সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তিন ধাপে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম দুই ধাপে নিয়োগ আগের নিয়মে সম্পন্ন করে তৃতীয় ধাপে নিয়োগ কীভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এ ধরনের বৈষম্য কীভাবে সম্ভব?

তৃতীয় প্রশ্ন হলো, যে আন্দোলনই হোক, শিশুদের ওপর অথবা শিশুর অভিভাবকের ওপর আক্রমণ করলে তার শাস্তি কী হবে? যেকোনো আন্দোলনেই পুলিশি হামলা নিন্দনীয়। কিন্তু যেখানে মায়ের সঙ্গে শিশুরাও রয়েছে, সেখানে ন্যূনতম সতর্কতা থাকা উচিত। মনে রাখতে হবে, জুলাই আন্দোলনে যারা শিশুদের রক্ত ঝরিয়েছে, তাদের এখনো বিচার হয়নি। তার আগেই শিশুদের ওপর সহিংসতা শুরু হয়ে গেছে।

চতুর্থ প্রশ্নটি বেশ জটিল এবং চিন্তা উদ্রেককর। কেন ২০১৯–এর বিধি মোতাবেক প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ কোটা নারীদের জন্য বরাদ্দ ছিল? এর পেছনে কি কোনো পূর্বাভিজ্ঞতা ছিল? সামাজিক কোনো কারণ ছিল? প্রশ্নটি আমি তুলছি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে। যেহেতু বিষয়টি আমাকে ভাবিয়ে তুলেছে, আমি মনে করি এ নিয়ে আলোচনা জরুরি।

আমরা কিছু কিছু পেশায় পুরুষের আধিক্য দেখি। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ থেকে শুরু করে ফায়ার সার্ভিস, গণপরিবহন ইত্যাদি ক্ষেত্রে নারীদের সুযোগ যেমন কম, তেমনি সামাজিক বাধাও অনেক। আবার অন্যদিকে চিকিৎসক, নার্সিং, শিক্ষকতা ও প্রশাসনিক কাজে নারীদের অংশগ্রহণের প্রবণতা বেশি। এই যে শিক্ষকতায়, বিশেষ করে প্রাইমারি শিক্ষক পদে নারীদের অংশগ্রহণ বেশি—এ বিষয় নিশ্চয়ই একদিনে তৈরি হয়নি।

আন্দোলনকারীদের মতে, অনেক পুরুষ শিক্ষক চাকরি শুরুর পর অন্য ভালো সুযোগ পেলে চলে যান। প্রাইমারি শিক্ষকদের বেতন কম, কাজ বেশি। এ কারণে তাঁরা চলে গেলে প্রায়ই অনেক স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা কমে যায়। অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলে নারীরা সামাজিক ও পারিবারিক কারণে একটি স্থিতিশীল অবস্থায় থাকেন।

প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নারী শিক্ষকদের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। নারীদের মাতৃসুলভ আচরণ, নরম ব্যবহার, কথা বলার ধরন ও শিশু সম্পর্কে জ্ঞানের কারণে শিশুরা নারী শিক্ষকদের বেশি পছন্দ করে। পঞ্চম শ্রেণির মেয়েশিশুদের অনেক সময় মাসিক শুরু হয়ে থাকে। এ সময় তারা তাদের সুবিধা–অসুবিধার কথা নারী শিক্ষকদের সঙ্গে বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এ কারণেই এই পেশায় নারী শিক্ষকদের প্রাধান্য দেওয়ার রীতি তৈরি হয়েছে।

এখন যে কেউ বলতে পারেন, পুরুষ শিক্ষকদেরও তো প্রশিক্ষণ দিয়ে শেখানো যায়। আমি মনে করি, এই বাস্তবতাও নিশ্চয়ই পরিবর্তনযোগ্য; কিন্তু যত দিন পরিবর্তন হচ্ছে না, তত দিন যদি বহুদিনের তৈরি হওয়া সংস্কৃতি ও সামাজিক বাস্তবতার বিরুদ্ধে গিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিই, তাহলে সেটা কি ইতিবাচক হবে?

আমরা জানি, গণ-অভ্যুত্থানের পর ৯৩ শতাংশ মেধাভিত্তিক কোটা নির্ধারণের কারণে অনেকেই মনে করছেন শুধু প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকই নন, ভবিষ্যতে সব খাতে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়াই যথাযথ হবে। কিন্তু প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের যে নিজস্ব সংস্কৃতি, অভ্যাস, অন্তর্গত বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এর সঙ্গে জনকল্যাণও যুক্ত রয়েছে, সেসব ক্ষেত্রে কি আমরা একই পদ্ধতি ব্যবহার করব?

প্রথম দুটি প্রশ্নের মীমাংসা সরকার করেছে। কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বা নিয়োগ–বাণিজ্যের কারণে যদি কেউ প্রভাবিত না হন, তাহলে আদালতের সিদ্ধান্ত তো আন্দোলনকারীদের পক্ষেই যাওয়ার কথা।

তৃতীয় প্রশ্নটির মীমাংসা করতে হবে দ্রুত। আর চতুর্থ প্রশ্নটি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা তুলতে হবে। প্রচলিত পরীক্ষার পদ্ধতি দিয়ে সব সময় মেধা মূল্যায়ন করা যায় না। মেধা বলতে শুধু পরীক্ষায় কয়টি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া না। সেই মানুষটির ‘ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স’ আছে কি না, শিশুশিক্ষা বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি কেমন, আচরণ কেমন—এগুলো শুধু লিখিত পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে বিচার করা যায় না।

এই আন্দোলন আমাদের সামনে সুযোগ এনেছে শিক্ষক, নারী ও শিশু প্রশ্নে একটি অবস্থান নেওয়ার। এখন একটি অন্তর্বর্তী সময়। প্রতিটি আন্দোলনকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার জায়গা থেকে না দেখে, প্রতিবিপ্লবের সম্ভাবনার লেন্স দিয়ে না দেখে, বরং সংস্কারের তাগিদের জায়গা থেকে দেখা যেতে পারে।

মোশাহিদা সুলতানা

সহযোগী অধ্যাপক

অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

[email protected]

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র অবস থ ন পর ক ষ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

তরুণেরা নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত: প্রধান উপদেষ্টা

তরুণেরা নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একুশে পদক–২০২৫ প্রদান উপলক্ষে এক ভাষণে তিনি এ কথা জানান।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, ‘‘আমরা এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চাইতে বেশি শক্তিশালী, উদ্যমী এবং সৃজনশীল। আমাদের তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন অতীতের যে কোনো প্রজন্মের স্বপ্নের চাইতে দুঃসাহসী। তারা যেমন নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করতে চায়, তেমনি একই আত্মবিশ্বাসে নতুন পৃথিবীর সৃষ্টি করতে চায়। নতুন পৃথিবী সৃষ্টিতে তারা নেতৃত্ব দিতে চায়। সে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তারা প্রস্তুত। ছেলেরাও প্রস্তুত, মেয়েরাও প্রস্তুত।’’

‘‘তারা (তরুণেরা) ঘুনে ধরা, আত্মবিনাশী সভ্যতার বন্ধনমুক্ত হয়ে তাদের স্বপ্নের নতুন সভ্যতা গড়তে চায়। যে সভ্যতার মূল লক্ষ্য থাকবে পৃথিবীর সকল সম্পদের ওপর প্রতিটি মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা, প্রতিটি মানুষের স্বপ্ন দেখার এবং সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের সকল সুযোগ নিশ্চিত করা, মানুষের জীবনযাত্রাকে এমনভাবে গড়ে তোলা যাতে পৃথিবীর অস্তিত্ব কোনো রকম বিঘ্নিত না-হয় এবং পৃথিবীর ওপর বসবাসরত সকল প্রাণীর সুস্বাস্থ্য নিয়ে বেঁচে থাকা কোনো ক্রমেই বিঘ্নিত না হয়।’’

প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘‘মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৫ উদযাপনের স্মরণীয় দিনে আমরা তরুণদের এই স্বপ্নের আশু বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক এই কামনা করছি। দেশের ভবিষ্যৎ রচনায় পথ দেখিয়ে যারা আজ জাতির পক্ষ থেকে স্বীকৃতি পেলেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এবং তাদেরকে আবারো অভিনন্দন জানাচ্ছি।’’

‘‘দেশের বরেণ্য ব্যক্তিত্ব যারা আজ একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন তাদের দেশবাসীর পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনাদের অবদানের জন্য জাতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। আপনারা জাতির পথ প্রদর্শক। আপনাদের অবদানে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতি দৃঢ় বিশ্বাসে জাতিপুঞ্জের মজলিসে ক্রমাগতভাবে উন্নততর অবস্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে।’’

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘‘এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে সুযোগ এসেছে নতুন এক বাংলাদেশ নির্মাণের। আজ এই পদক প্রদান অনুষ্ঠানে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি দেশমাতৃকার জন্য বিভিন্ন লড়াই-সংগ্রাম, বাহান্নর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে যে সকল সাহসী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন তাদের সকলকে।’’

ড. ইউনূস বলেন, ‘‘দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবারের অমর একুশে নতুন তাৎপর্য নিয়ে আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে। আমরা জানি, একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের আত্মপরিচয়ের অবিনাশী স্মারক। আমাদের স্বাধিকার চেতনার প্রাণপ্রবাহ একুশে ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের এই ফেব্রুয়ারি মাসেই রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে পাকিস্তানি শাসকদের চাপিয়ে দেওয়া অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রুখে দাঁড়িয়েছিল ছাত্রসমাজ। ঢাকার রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। এই ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আমাদের স্বাধিকার চেতনার এক অবিশ্বাস্য জাগরণ সৃষ্টি হয়েছিল।’’

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ১৭ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও নারী ফুটবল দলকে একুশে পদক প্রদান করেন প্রধান উপদেষ্টা।

এ বছর শিল্পকলায় পাঁচজন, সাংবাদিকতায় একজন, সাংবাদিকতা ও মানবাধিকারে একজন, সংস্কৃতি ও শিক্ষায় একজন, শিক্ষায় একজন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দলগতভাবে চারজন, সমাজসেবায় একজন, ভাষা ও সাহিত্যে দুজন, গবেষণায় একজন এবং ক্রীড়াক্ষেত্রে জাতীয় নারী ফুটবল দলকে একুশে পদক দেওয়া হয়েছে। 

শিল্পকলার বিভিন্ন শ্রেণিতে পদক পাওয়া পাঁচজন হলেন- চলচ্চিত্রে আজিজুর রহমান (মরণোত্তর), সংগীতে ওস্তাদ নীরদ বরণ বড়ুয়া (মরণোত্তর) এবং ফেরদৌস আরা, আলোকচিত্রে নাসির আলী মামুন ও চিত্রকলায় রোকেয়া সুলতানা। আজিজুর রহমানের পক্ষে তার কন্যা আলিয়া রহমান বিন্দি ও নিরোধ বরণ বড়ুয়ার মেয়ে শিল্পী ফাল্গুনী বড়ুয়া পদক গ্রহণ করেন।

সাংবাদিকতায় এবার একুশে পদক পেয়েছেন সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ (মরণোত্তর)। তার পক্ষে পদক নেন তার স্ত্রী। সাংবাদিকতা ও মানবাধিকারে পদক পেয়েছেন দৈনিক আমার দেশ-এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

এছাড়া সংস্কৃতি ও শিক্ষা ক্যাটাগরিতে পেয়েছেন বিশিষ্ট তিনজন। ভাষা ও সাহিত্য ক্যাটাগরিতে পদক পেয়েছেন কবি হেলাল হাফিজ (মরণোত্তর) এবং শহীদুল জহির (মরণোত্তর)। হেলাল হাফিজের পক্ষে তার বড় ভাই দুলাল আবদুল হাফিজ এবং শহীদুল জহিরের পক্ষে তার বড় ভাই হাবিবুল হকের কাছে পদক হস্তান্তর করা হয়।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দলগতভাবে একুশে পদক পেয়েছেন মেহেদী হাসান খান (দলনেতা), রিফাত নবী (দলগত), মো. তানবিন ইসলাম সিয়াম (দলগত) ও শাবাব মুস্তাফা।

গবেষণায় মঈদুল হাসান একুশে পদক পেয়েছেন। এছাড়া ক্রীড়াক্ষেত্রে একুশে পদক পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। জাতীয় নারী ফুটবল দলের পক্ষে দলনেতা সাবিনা খাতুন ও সহযোগী দলনেতা মারিয়া মান্দা পদক গ্রহণ করেন।

এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি একুশে পদকের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ঢাকা/হাসান//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিরোনামহীনের ‘প্রিয়তমা’ প্রশংসা কুড়াচ্ছে
  • ‘অভিযুক্ত’ চালক-সুপারভাইজারকে আসামি না করায় প্রশ্ন বাদীর
  • ভুল বানানে ভরা ভাষা দিবসের প্ল্যাকার্ড, ফেসবুকে সমালোচনা
  • দিনাজপুরে ৮ সহস্রাধিক ডাকটিকিট নিয়ে প্রদর্শনী, দর্শনার্থীদের ভিড়
  • বিলুপ্তপ্রায় ভাষা রেংমিটচ্য যেভাবে বেঁচে আছে
  • আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট: ভাষা গবেষণায় অর্জন নেই
  • সচিবালয়ে প্রবেশের নতুন নীতিমালা
  • প্রতিবাদ চলছে, প্রক্টরের পদত্যাগ ও ছাত্রীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি
  • ‘সবকিছু দিচ্ছে, কিন্তু চাল কেন দিচ্ছে না’
  • তরুণেরা নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত: প্রধান উপদেষ্টা