নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) বিভিন্ন বিভাগ ও অনুষদের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদান করেছে শাখা ছাত্রশিবির।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) নোয়াখালী জেলা শহরের পৌর অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘বিকন অব ব্রিলিয়ান্স’ শীর্ষক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

এ দুই শিক্ষাবর্ষের প্রত্যেকটি বিভাগের প্রথম তিনজন মেধাবী ও অনুষদগুলোতে সেরা স্থান অধিকারী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

ছাত্রশিবিরের নোবিপ্রবি শাখার সভাপতি আরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান সৈকতের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ।

প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী সরকারি কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মুজাম্মেল হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী নোয়াখালী সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক ডা.

মিরাজুল ইসলাম, নোবিপ্রবি ছাত্রশিবির সাবেক সভাপতি তাফহিমুল ইসলাম মারুফ প্রমুখ।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রধান বক্তা অধ্যাপক মুজাম্মেল হোসেন বলেন, “আপনাদের এ সফলতার পিছনে আপনাদের পিতা-মাতার অবদান অনেক। আপনাদের মেধা ও প্রজ্ঞাকে যদি না লাগান, আপনাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। সবাই যদি সবার জায়গা থেকে জবাবদিহি করে, তাহলে দেশ কখনো মচকাবে না।”

তিনি বলেন, “আমাদের সম্পদ কম কিন্তু চাহিদা বেশি। আমাদের মধ্য থেকে বৈষম্য এখনো যায়নি। আপনারা চাইলেই এ বৈষম্য দূর হবে। নৈতিকতা সম্পন্ন হলে আপনারা মচকালেও ভেঙে পড়বেন না।”

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আজিজুর রহমান আজাদ বলেন, “আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নীতি নৈতিকতার বিষয়গুলো শিখানো হয় না। বাংলাদেশে আমরা যে শিক্ষাব্যবস্থায় পড়াশোনা করি, তা আমাদের জন্য যথোপযুক্ত নয়। শিক্ষক নিয়োগেও রয়েছে দলীয়করণ। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে কোন দেশেই গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয় না। আমাদের এ সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া জরুরি।”

তিনি বলেন, “এগুলো আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যা। আমরা চাই যারা আজকে সামনে বসে আছেন আপনারা ভালো সিভিল সার্ভিস ক্যাডার হন বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হন। আপনারাই আমাদের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের হাল ধরবেন, ইনশাআল্লাহ।”

অনুষ্ঠান শেষে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে সংবর্ধনা ক্রেস্ট ও উপহার প্রদান করা হয়।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষ ব যবস থ আপন দ র আম দ র ইসল ম আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

গণহত্যার প্রতিবাদ করে গাজাবাসীর জন্য রাইখানদের প্রার্থনা

গণহত্যার প্রতিবাদ করে জালিম ইসরায়েলের আগ্রাসন থেকে মজলুম গাজাবাসীর মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেছে পটুয়াখালীর রাখাইন সম্প্রদায়।

গাজায় গণহত্যা ও নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের শিকার ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর জন্য কুয়াকাটায় মাহা সাংগ্রাই জলকেলি উৎসবে এক মিনিট নীরাবতা পালন করে রাখাইন সম্প্রদায়।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শুক্রবার রাখাইন জলকেলি উৎসবের শুরুতে গাজায় গণহত্যার শিকার ফিলিস্তিনিদের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ছবি: রাইজিংবিডি 

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব
বিশ্বে পূর্বশত্রুদের মিত্রে পরিণত হওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে

অবশেষে জিম্বাবুয়ে সিরিজ সম্প্রচারকারী চ্যানেল পেলো বিসিবি

শুক্রবার দুপুরে (১৮ এপ্রিল) কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহার-সংলগ্ন রাখাইন মাঠে জলকেলি উৎসবের প্রারম্ভে সবাই দাঁড়িয়ে এই নীরবতা পালন করেন।

রাখাইনদের অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গাজাবাসীর জন্য বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয় বলেও জানিয়েছেন সম্প্রদায়টির ধর্মগুরুরা।

গণহত্যা অভিযানে গাজা ও ফিলিস্তিন নিশ্চিহ্ন করতে ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাখাইনদের এসব উদ্যোগ মানবতার জন্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য দৃষ্টান্ত বলে মনে করছেন সেখানকার মানুষ।

রাখাইন জলকেলি উৎসব দেখতে আসা কলাপাড়ার আলীপুর এলাকার বাসিন্দা মো. হোসেন মিয়া বলেন, “আজ জলকেলি দেখতে রাখাইন মাঠে এসেছি। এখানে এসে একেবারেই অবাক হয়েছি। তারা অনুষ্ঠানের শুরুতেই গাজাবাসীর জন্য নীরবতা পালন করেছে।”

“নিপীড়িত গাজাবাসীর জন্য তাদের সহমর্মিতা আমাকে আপ্লুত করেছে,” বলেন হোসেন মিয়া।

মহিপুর থেকে আসা মো. আবদুস সালাম বলেন, “এমনিতেই রাখাইনদের সঙ্গে আমাদের একটি সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে। আজ তারা গাজাবাসীর জন্য প্রার্থনা করেছে। তাদের প্রতি আমাদের সম্মান আরো বেড়ে গেল।”

মিশ্রীপাড়া সীমা বৌদ্ধবিহারের উপাধ্যক্ষ উত্তম মহাথের বলেন, “আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে গাজাবাসীর জন্য প্রায়ই বিশেষ প্রার্থনা করি। শুধু গাজাবাসীই নয়, পৃথিবীর সকল দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ যুদ্ধ বন্ধ হোক- এটাই আমাদের প্রার্থনা।”

“ আমরা মানুষ হিসেবে সবাইকে সবার প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণের অনুরোধ জানাচ্ছি,” বলেন উত্তম মহাথের।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, “গাজাবাসীর প্রতি রাখাইন সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এক মিনিট নীরবতার মাধ্যমে মানবতার সঙ্গে যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্প্রীতি তারা দেখিয়েছেন, এ জন্য তাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

“রাখাইন সম্প্রদায় ভিন্ন ধর্মালম্বী হলেও মানবতার ধর্ম সবার এক। তাই রাখাইন সম্প্রদায় এই নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে আজ ফিলিস্তিনের পক্ষে তাদের সম্প্রীতি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করল।”

শুক্রবার পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী রাখাইন জলকেলি উৎসব, যাতে শামিল হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ, সেই সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বিদেশিরাও।

উৎসব শুরুর দিন ঐতিহ্যবাহী জলকেলিতে মেতে উঠতে দেখা যায় রাখাইনদের। তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীদের আনন্দ করতে দেখা যায়। উৎসবে সহায়তা করছে স্থানীয় প্রশাসন।

ঢাকা/ইমরান/রাসেল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ