বন্দর যথা যোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে পবিত্র শবে বরাত। মহান সৃষ্টিকর্তার রহমত লাভের আশায় বন্দরে বিভিন্ন এলাকার ধর্মপ্রান মুসলমানরা তাদের নিজ নিজ মসজিদে ইবাদত বন্দেগী মাধ্যমে এ রাতটি পালন করেন।

সন্ধ্যা হওয়ার পর থেকেই বন্দরে বিশেষ করে কদম রসুল দরগা, বন্দর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, বন্দর শাহী মসজিদ, সোনাকান্দা কেল্লা জামে মসজিদ ও ঘারমোড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসহ বিভিন্ন পাড়া মহল্লার জামে মসজিদ গুলো কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়।

এ ছাড়াও কবর জিয়ারতের কথা চিন্তা করে  উল্লেখিত এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার কবরস্থান গুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়।

উল্লেখ্য,  হিজরি বর্ষের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত সৌভাগ্যের রজনী। মহিমাম্বিত এ রাতে মহান রাব্বুল আলামিন তার বান্দাদের ভাগ্য নির্ধারণ করেন।

ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা এ রাতে মহান আল্লাহর রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির আজগাসহ বিভিন্ন ইবাদতবন্দেগী করে থাকে।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

রমজানের নেয়ামত শবে কদর

কদর মানে সম্মানিত, কদর মানে নিয়তি। শবে কদর ফারসি, আরবিতে লাইলাতুল কদর, মানে কদরের রাত। এ সম্পর্কে কোরআন মজিদে একটি পূর্ণাঙ্গ সুরা নাজিল হয়েছে।

আল্লাহ যে রাতে কোরআন অবতীর্ণ করেছেন, সে রাতকে বরকতময় করেছেন। সেটিই কদরের রাত। আল্লাহ বলেন, ‘হা-মিম, শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের, আমি তো এ (কোরান) অবতীর্ণ করেছি এক লাইলাতুল মোবারক (সৌভাগ্যের রাত্রিতে)। আমি তো সতর্ককারী। এ-রাত্রিতে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থির করা হয়। আদেশ তো আমারই। আমিই রাসুল পাঠিয়ে থাকি, এ তোমার প্রতিপালকের তরফ থেকে অনুগ্রহ। তিনি সব শোনেন, সব জানেন।’ (সুরা দুখান, আয়াত: ১-৬, কোরান শরিফ: সরল বঙ্গানুবাদ, মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন।)

আরও পড়ুনসুরা মাউনে মানুষদের মধ্যে দুটি দলের কথা বলা হয়েছে১৭ এপ্রিল ২০২৩

রমজানের তিনটি অংশ—রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত। হাদিসে আছে, রমজানের প্রথম অংশ রহমতের, মাঝখানের অংশ ক্ষমার, শেষ অংশ মুক্তির।

আল্লাহ বলেন, ‘বলো, হে আমার দাসগণ! তোমরা যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, জান্নাত অনুগ্রহের ব্যাপারে নিরাশ হয়ো না। আল্লাহ্ সমুদয় পাপ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।' (সুরা জুমার, আয়াত: ৫৩)।

আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া যায় না। তিনি বলেন, ‘যারা পথভ্রষ্ট তারা ছাড়া আর কে তার প্রতিপালকের অনুগ্রহ থেকে হতাশ হয়?’ (সুরা হিজর, আয়াত:৫৬)।

যারা হতাশ হয় না, আল্লাহ তাদের তিনটি নেয়ামত দান করেন, বিপদ থেকে উদ্ধার করেন, গুনাহ মাফ করেন, কঠিন কাজ সহজ করে দেন।

আরও পড়ুনসুরা জুমার সারকথা১৬ এপ্রিল ২০২৩

কদরের রাতে পুরো ত্রিশ পারা কোরআন একত্রে লাওহে মাহফুজ থেকে অবতীর্ণ করেন। পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে তেইশ বছর ধরে প্রয়োজনমতো বিভিন্ন উপলক্ষে দুনিয়ায় নাজিল হতে থাকে। কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। অর্থাৎ, এ রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।

রোজার মাস জুড়ে বিশেষত শেষ দশকে কদরের রাত খোঁজা মোস্তাহাব; আরও নির্দিষ্ট করে বললে, শেষ দশকের বিজোড় রাত ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯তম রাতে। বুখারি ও মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা রোজার শেষ দশকের বিজোড় রাতে শবে কদরের সন্ধান কোরো।’

আল্লাহ বলেন, ‘আমি এ (কোরান) অবতীর্ণ করেছি লাইলাতুল কাদরে (মহিমার রাত্রিতে)। মহিমার রাত্রি সম্বন্ধে তুমি কী জান? মহিমার রাত্রি হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। সে-রাতে প্রত্যেক কাজে ফেরেশতারা ও রুহ (জিবরাইল) অবতীর্ণ হয় তাদের প্রতিপালকের নির্দেশে। এ শান্তি! ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত।’ (সুরা কদর, আয়াত: ১-৫)

আরও পড়ুনদুনিয়ার ভোগ–বিলাস নিয়ে সুরা তাকাসুরের সতর্কতা১০ এপ্রিল ২০২৩

বুখারির হাদিস থেকে আরও জানা যায়, হজরত উবাদা ইবনুস সামিত (রা.) বলেছেন, নবীজি (সা.) আমাদের লাইলাতুল কদর সম্পর্কে অবগত করার উদ্দেশ্যে বের হন। পথের মধ্যে দুজন ঝগড়াঝাঁটিতে লিপ্ত হয়। তখন নবীজি (সা) বলেন, আমি তোমাদেরকে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানানোর জন্য বের হয়েছিলাম; কিন্তু তখন অমুক অমুক বিবাদে লিপ্ত থাকায় তা (লাইলাতুল কদরের নির্দিষ্ট তারিখ) উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। হয়তো এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর। তোমরা তা অনুসন্ধান করো (রোজার) বেজোড় রাতে।

লাইলাতুল কদরে দোয়া করা মুস্তাহাব। নবীজি (সা.) আয়িশা (রা.)–কে এই দোয়া শিখিয়েছেন, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া ফা ফু আন্নি। এর অর্থ, আল্লাহ, আপনি ক্ষমাকারী, আপনি মাফ করতে পছন্দ করেন। সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন (তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩)

আরও পড়ুনসুরা আর রাহমান কোরআনের প্রসিদ্ধ একটি সুরা১৫ এপ্রিল ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পবিত্র জুমাতুল বিদা আজ, শবে কদর পালিত
  • রমজানের নেয়ামত শবে কদর