মেটার বিরুদ্ধে পাইরেসি করার অভিযোগ
Published: 15th, February 2025 GMT
ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কর্মসূচির নাম লামা এআই। লামা এআইয়ের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইন ভাঙার অভিযোগ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, লামা এআইকে প্রশিক্ষণের সময় ৮২ টেরাবাইট বইপত্র বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করে পাইরেসির অভিযোগ করা হচ্ছে। এ জন্য মেটার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মেটা এআই মডেলকে প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন অনলাইন লাইব্রেরি থেকে পাইরেটেড বই ব্যবহার করার অভিযোগ তোলা হয়েছে। মেটা টরেন্টের মাধ্যমে প্রায় ৮১ দশমিক ৭ টেরাবাইট ডেটা ডাউনলোড করেছে বলে মামলার নথিপথে দেখা যায়। কপিরাইট আইন এড়িয়ে চলার জন্য মেটা নিজের সম্পৃক্ততা গোপন করেছে বলে জানা গেছে।
একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মেটা এআই মডেলের প্রশিক্ষণের জন্য বেআইনিভাবে পাইরেটেড বই ব্যবহার করার অভিযোগে ক্লাস অ্যাকশন মামলার মুখোমুখি হবে। মেটা টরেন্টের মাধ্যমে অ্যানা’স আর্কাইভ, জেড-লাইব্রেরি ও লিবজেনের মতো অনলাইন লাইব্রেরি থেকে বিভিন্ন ডেটা ডাউনলোড করে ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগে বলা হচ্ছে।
এ–সংক্রান্ত মেটার কর্মীদের অভ্যন্তরীণ বেশ কিছু বার্তা প্রকাশ পেয়েছে। মেটার কর্মীরা পাইরেসি করা ডেটা ব্যবহার করার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মেটার এক সিনিয়র এআই গবেষক ২০২২ সালের অক্টোবরে নৈতিকতার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন বলে জানা গেছে। সেই কর্মীর ভাষ্যে, ‘আমি মনে করি না আমাদের পাইরেসি করা বিষয় ব্যবহার করা উচিত। অন্য একজন কর্মচারী তখন জানান, সাইহাব আর লিবজেনের মতো প্ল্যাটফর্ম মূলত পাইরেসি বস্তুর আধার।’
এসব উদ্বেগ থাকার পরেও ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরু করে মেটা। মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ নিজেই নাকি একটি বৈঠকে এ নিয়ে কথা বলে কাজ শুরুর জন্য বলেন।
সূত্র: ইকোনমিক টাইমস
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
৩০০ বছরের পুরোনো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ‘উলচাপাড়া শাহী জামে মসজিদ’
বিশাল চওড়া ফটক। ফটকের ওপর কারুকাজে নির্মিত দুটি মিনার। সুউচ্চ ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকলে ছয়টি ছোট–বড় মিনার ও তিন গম্বুজবিশিষ্ট প্রাচীন মসজিদ চোখে পড়ে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার উলচাপাড়া এলাকার এই মসজিদের নাম উলচাপাড়া মসজিদ। এলাকাবাসীর কাছে এটি ‘উলচাপাড়া শাহী জামে মসজিদ’ হিসেবে পরিচিত।
মসজিদটি প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো। এটি বর্তমানে দেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা।
চার ফুট উচ্চতার মজবুত প্ল্যাটফর্মের ওপর চুন–সুরকি, ইট আর কালো পাথরের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে মসজিদের অবকাঠামো। মসজিদের দেয়ালে অসংখ্য খোপকাটা মৌলিক টেরাকোটার অলংকরণ। মসজিদটি প্রধানত দুটি অংশে বিভক্ত। পশ্চিমাংশে নামাজের কক্ষ আর নামাজের কক্ষের পূর্ব পাশে বারান্দা। মসজিদের ওপর বর্গাকার এক গম্বুজবিশিষ্ট নামাজের কক্ষ এবং পূর্ব ভাগে ছোট তিন গম্বুজবিশিষ্ট একটি বারান্দা আছে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে স্থানের তালিকায় উলচাপাড়া মসজিদের নাম উল্লেখ আছে। সেখানে উলচাপাড়া মসজিদের বিষয়ে উল্লেখ আছে, মসজিদের নির্মাণ কৌশল ও মসজিদে ব্যবহৃত ইট দেখে মনে হয় যে এটি সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত। মসজিদে পাওয়া শিলালিপি পাঠ থেকে জানা যায়, ১৭২৭–২৮ সালে কোনো বণিক কর্তৃক মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল।
এই মসজিদে দীর্ঘ ২১ বছর ধরে ইমামের দায়িত্ব পালন করছেন হাফেজ মাওলানা উবায়দুল্লাহ। অসুস্থতার কারণে তিনি বর্তমানে আসতে পারেন না। বর্তমানে মসজিদ তত্ত্বাবধান করছেন মাওলানা আখতারুজ্জামান। কথা হলে তাঁরা দুজন প্রথম আলোকে বলেন, মসজিদটি ৩০০ বছরের পুরোনো। অনেক মানুষ এই মসজিদ দেখতে এলাকায় আসেন। তবে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে তাঁরা বেশি কিছু জানেন না বলে জানালেন।
মসজিদে কথা হয় ইতিকাফে বসা উলচাপাড়ার গ্রামের ষাটোর্ধ্ব মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের (৬৫) সঙ্গে। তাঁর বাবা এনায়েত আলী এই মসজিদের মুয়াজ্জিন ছিলেন। ১৯৭৫ সালে ১০৫ বছর বয়সে এনায়েত আলী মারা যান। হাবিবুর রহমানের দাদা মোহাম্মদ তোরাব আলী মৃধাসহ পরদাদারা এই মসজিদে নামাজ পড়েছেন।
গ্রামের বাসিন্দা ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনাইটেড কলেজের প্রভাষক মোবারক হোসেন বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মসজিদের দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়েছে। এর পর থেকে মসজিদের কোনো সংস্কারকাজ এলাকাবাসী চাইলেও করতে পারছেন না। মসজিদটি প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো। প্রতিদিন অনেক মানুষ মসজিদটি দেখতে এই গ্রামে আসেন।