বিগ টেক যেভাবে ট্রাম্পের অভিবাসন দমননীতিকে শক্তিশালী করছে
Published: 15th, February 2025 GMT
‘অভিবাসীরা নোংরা, জঘন্য আবর্জনা’—এ ধরনের মন্তব্যকে এখন আর মেটার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম প্ল্যাটফর্মে ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্য হিসেবে চিহ্নিত করা হবে না। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের কয়েক দিন আগে ফাঁস হওয়া এক নথি অনুযায়ী, মেটা এই নতুন নীতির ঘোষণা দেয়।
মেটার দাবি, এই পরিবর্তন দরকারি, কারণ মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ মনে করেন, এই ধরনের মন্তব্যকে ঘৃণামূলক বক্তব্য হিসেবে বিবেচনা করার অর্থ হলো ‘মূলধারার আলোচনার বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন’ থাকা।
আসলে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে যাতে ট্রাম্পের নতুন অভিবাসননীতি সহজে কার্যকর করা যায়। এতে স্পষ্ট হয়, তথ্য নিয়ন্ত্রণকারী প্রযুক্তি কোম্পানি ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণকারী সরকার একসঙ্গে কাজ করছে। এটি দুপক্ষের জন্যই সুবিধাজনক ও লাভজনক।
এর প্রমাণ দেখা গেছে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের দিন, যেখানে বড় প্রযুক্তি কোম্পানির প্রধানেরা বিশেষ অতিথি ছিলেন। তাঁরা ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় বড় অঙ্কের অর্থ দিয়েছিলেন।
অবশ্য অভিবাসীদের ওপর কঠোর নজরদারি করতে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর সহায়তা নেওয়াটা নতুন কিছু নয়। ট্রাম্পের আগেও মার্কিন সরকার এসব কোম্পানির সঙ্গে মিলে এমন এক নজরদারির ব্যবস্থা তৈরি করেছে, যা শুধু অভিবাসীদের নয়, যে কারও ওপর নজর রাখতে পারে।
সরকার শুধু নিজের সংগ্রহ করা তথ্যের ওপর নির্ভর না করে বিভিন্ন তথ্য ব্যবসায়ীর কাছ থেকেও তথ্য কিনছে। এসব ব্যবসায়ী মানুষের বয়স, কেনাকাটার অভ্যাস, অবস্থান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিমা, আর্থিক তথ্যসহ নানা বিষয়ে বিশদ প্রোফাইল তৈরি করে বিক্রি করে। এই তথ্য পাওয়া যায় মুঠোফোন, গাড়ি বা বিদ্যুৎ-গ্যাসের মিটারের মতো উৎস থেকে।
প্যালান্টির, অ্যামাজন, সেলসফোর্সের মতো কোম্পানিগুলো এই বিচ্ছিন্ন তথ্য একত্র করে এমন সরঞ্জাম তৈরি করেছে, যা অভিবাসীদের শনাক্ত করতে ব্যবহার করা হয়। অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ সংস্থা (আইসিই) এখন এমন প্রযুক্তি খুঁজছে, যা ভবিষ্যদ্বাণীমূলক বিশ্লেষণ ও মডেলিং করতে পারে।
ধারণা করা হয়, ২০২০ সালের পর থেকে আইসিই ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো অভিবাসনবিষয়ক প্রযুক্তির জন্য প্রায় ৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। এ জন্য তারা ২৬৩টি বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে প্রায় ১৫ হাজারটি চুক্তি করেছে।
২০০৪ সাল থেকে মার্কিন সরকার ই-কার্সারেশন বা ডিজিটাল কায়দায় ‘বন্দী’ রাখার প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। এর মধ্যে ‘পায়ের নজরদারি ব্রেসলেট’ (একধরনের ডিভাইস, যা অভিযুক্ত ব্যক্তি বা বন্দীর পায়ের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়, যাতে তাঁদের চলাফেরা নজরদারি করা যায়) ব্যবহারের মতো প্রযুক্তি রয়েছে।
যখন ক্ষমতাধরেরা ‘মুক্ত মতপ্রকাশ’-এর একপেশে ব্যবহার করেন, তখন তা সেন্সরশিপ, দমনপীড়ন এবং ধ্বংসের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। ২০১৭ সালে মিয়ানমারে এবং এখন ফিলিস্তিনে এটি দেখা গেছে। এ ক্ষেত্রে মেটা এবং এক্সের মতো কোম্পানিগুলো প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুর্বল গোষ্ঠীকে অবমাননা করা বক্তৃতাকে প্রচার করেছে। এটি পরিস্থিতিকে শারীরিক সহিংসতার দিকে নিয়ে যায়।২০১৮ সালে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিআই ইনকের সঙ্গে আইসিই মিলে ‘স্মার্টলিংক’ নামের একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করে। সরকার বলছে, এটি কারাগারে রাখার চেয়ে মানবিক উপায়। কিন্তু বিভিন্ন গবেষণা দেখিয়েছে, এই অ্যাপ ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন মুখের ছবি, কণ্ঠস্বর, চিকিৎসাসংক্রান্ত তথ্য, এমনকি গর্ভধারণ ও সন্তানের জন্ম–সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করে। অর্থাৎ এটি শুধু নজরদারি নয়, বরং ব্যক্তিগত গোপনীয়তার জন্যও হুমকি।
এ ছাড়া ট্রাম্প প্রশাসনের সময় অভিবাসীদের ডিএনএ সংগ্রহ শুরু হয়। এটি এখনো চালু আছে। সরকার দাবি করে, এই ডিএনএর তথ্য ভবিষ্যতে অভিবাসীদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধ তদন্তে সাহায্য করবে। কিন্তু সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অভিবাসীরা সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী নাগরিকদের তুলনায় কম অপরাধ করেন। তবু তাঁদের প্রতি সরকার কঠোর নজরদারি বজায় রাখছে এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে তাঁদের চলাফেরা ও ব্যক্তিগত জীবন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসননীতিতে বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। ক্ষমতায় ফিরে তিনি দ্রুত তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন শুরু করেছেন এবং ইতিমধ্যে বেশ কিছু নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। এটি অভিবাসননীতিকে আগের চেয়ে আরও কঠোর করে তুলছে।
নতুন আদেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল করা, স্কুল ও গির্জার মতো নিরাপদ স্থানগুলোয় অভিবাসন কর্তৃপক্ষের অভিযান চালানো, যেসব নাগরিক অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানাবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া, অভিবাসীদের আটকে না রেখে জামিনে মুক্তির যে ব্যবস্থা ছিল তা বন্ধ করা, আশ্রয়প্রার্থী অভিবাসীদের আবেদন গ্রহণ পুরোপুরি বাতিল করা এবং অনথিভুক্ত অভিবাসীদের দ্রুত বিতাড়নের (ডিপোর্টেশন) প্রক্রিয়া আরও কঠোর করা।
ট্রাম্পের এসব নির্বাহী আদেশ আইনিভাবে চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব। তবে আদালতে যেন এসব আদেশ সহজে বাতিল না হয়, তাই তিনি ঘৃণামূলক বক্তব্যকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন। এ ক্ষেত্রে বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তারা মুক্ত মতপ্রকাশের নামে বিদ্বেষমূলক বক্তব্যকে সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য করে তুলছে, যাতে ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসননীতিগুলো জনসমর্থন পায় এবং আইনি বাধার মুখে না পড়ে।
যখন ক্ষমতাধরেরা ‘মুক্ত মতপ্রকাশ’-এর একপেশে ব্যবহার করেন, তখন তা সেন্সরশিপ, দমনপীড়ন এবং ধ্বংসের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। ২০১৭ সালে মিয়ানমারে এবং এখন ফিলিস্তিনে এটি দেখা গেছে। এ ক্ষেত্রে মেটা এবং এক্সের মতো কোম্পানিগুলো প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুর্বল গোষ্ঠীকে অবমাননা করা বক্তৃতাকে প্রচার করেছে। এটি পরিস্থিতিকে শারীরিক সহিংসতার দিকে নিয়ে যায়।
একটি উগ্র রাজনৈতিক পরিবেশ এবং করপোরেট প্রযুক্তি যখন অভিবাসনবিরোধী, বর্ণবৈষম্য, নারীবিরোধী, এলজিবিটিকিউ ও মুসলিমবিরোধী বক্তৃতাকে সমর্থন করে, তখন তা আগামী বছরের মধ্যে এক বিস্ফোরক জনমত তৈরি করবে।
এ কারণে মেটা এবং এক্স এখন সঠিকভাবে বিষয়গুলো মডারেট (নিয়ন্ত্রণ) না করে বরং ট্রাম্পকে এমন শক্তি দিচ্ছে, যা কিনা স্প্রিংফিল্ড, ওহাইওতে দেখা গেছে। সেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অভিবাসনবিরোধী আন্দোলনকে তীব্র করে তুলেছিল।
এ সমস্যার সমাধান শুধু মিডিয়া সাক্ষরতার মাধ্যমে ফেসবুক বা এক্সের মতো প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়া ভুয়া তথ্য মোকাবিলা করার বিষয় নয়। সত্য-উত্তর ও সাক্ষরতা-উত্তর বিশ্বে যে ভাষ্যে বেশি ‘লাইক’ বা ‘শেয়ার’ হয়, তা অন্তত ব্যবহারকারীদের জন্য বাস্তবতা হয়ে ওঠে।
ডেমোক্র্যাটরা নব্য উদার নীতির মাধ্যমে একধরনের বাজারনীতি সমর্থন করেছে, যা ব্রোলিগার্ক শ্রেণির (বিশ্বের ধনী ও ক্ষমতাশালী গোষ্ঠী) উত্থান ঘটিয়েছে। এই ব্রোলিগার্ক শ্রেণি তাদের শক্তি অর্জন করেছে ঔপনিবেশিক তথ্য দখলের মাধ্যমে। যদিও ট্রাম্প এবং তার সমর্থকদের দায়ী করা সহজ, তবু মনে রাখতে হবে, ডেমোক্র্যাটদের নীতিই এ পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে।
এখন দুই দলের পক্ষ থেকেই অভিবাসীদের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষার জন্য কোনো কার্যকর রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই। তাই প্রতিরোধের উদ্যোগ স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু হতে হবে। এই প্রতিরোধের জন্য স্থানীয় আদালতে অবৈধ বহিষ্কারের বিরুদ্ধে লড়াই, মিডিয়ার মাধ্যমে ভুল তথ্য প্রতিরোধ এবং স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সিভিক সংগঠনগুলোর মধ্যে সম্পর্ক শক্তিশালী করা গুরুত্বপূর্ণ।
আল–জাজিরা থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে অনূদিত
উলিসেস এ মেহিয়াস সানিও ওসওয়েগোর যোগাযোগ অধ্যয়নের অধ্যাপক।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নজরদ র র জন য স র মত ক ষমত ব যবস সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বহির্নোঙরে বন্দর কর্তৃপক্ষের নজরদারি বাড়াতে হবে
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জুয়েল। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা, বন্দর সম্প্রসারণে বে-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করতে দেরি হওয়ার কারণ এবং এর সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সারোয়ার সুমন।
সমকাল: চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রকল্প বলা হয় বে-টার্মিনালকে। তবু কেন বার বার হোঁচট খাচ্ছে এ প্রকল্প?
শফিকুল আলম জুয়েল: বে-টার্মিনাল প্রকল্প বার বার পেছানোর নেপথ্যে অনেক কারণ আছে। তবে ভূমি অধিগ্রহণে জটিলতা থাকা ও অর্থায়নের প্রক্রিয়া ঠিক করতে না পারা আমার কাছে সবচেয়ে বড় কারণ মনে হয়। অথচ প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন করলে বন্দরের সক্ষমতা বাড়ত তিনগুণ। এখন সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ নোঙর করতে অপেক্ষা করতে হয় জোয়ারের জন্য। তখন আমরা ১৪ মিটার ড্রাফটের জাহাজও অনায়াসে নোঙর করাতে পারতাম মূল জেটিতে। এতে করে আমাদের পণ্য পরিবহন খরচ কমত। কমে যেত জাহাজের অপেক্ষমাণ সময়ও। এতে করে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আরও গতিশীল হতো।
সমকাল: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান, বিশ্বজুড়ে শুল্কযুদ্ধের দামামা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ডলার সংকটের বাধা পেরিয়ে গত বছর চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার এবং কার্গো হ্যান্ডলিং বেড়েছে। এটি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
শফিকুল আলম জুয়েল: কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে ২০২৪ সালে আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে ২০ ফুট এককের কনটেইনার হ্যান্ডলিং বেড়েছে দুই লাখ ২৪ হাজার ৮৩৪টি। কার্গো হ্যান্ডলিং বেড়েছে প্রায় ৩০ লাখ টন। ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দর হ্যান্ডল করে ৩০ লাখ ৫০ হাজার ৭৯৩ একক কনটেইনার। ২০২৪ সালে দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দরে ৩২ লাখ ৭৫ হাজার ৬২৭ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। তবে বন্দরে জাহাজ আসার পরিমাণ কমেছে। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে জাহাজ কম এসেছে ২৩৬টি। অবশ্য জাহাজের সংখ্যা কমলেও বেড়েছে আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ।
সমকাল: জাহাজ আসার সংখ্যা কেন কমছে?
শফিকুল আলম জুয়েল: ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দর জাহাজ হ্যান্ডল করে ৪ হাজার ১০৩টি। ২০২৪ সালে ৩ হাজার ৮৬৭টি জাহাজ আসে। এখন যেসব জাহাজ আসছে, সেগুলো আগের চেয়ে বড় জাহাজ। বন্দরে এখন সর্বোচ্চ ২০০ মিটার দীর্ঘ ও ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারে। আগে সাড়ে ৯ মিটার গভীরতার জাহাজ ভেড়ানো যেত। তখন যদি এক হাজার কনটেইনার নিয়ে একটি জাহাজ আসত, এখন তার চেয়ে বড় অর্থাৎ দেড়-দুই হাজার কনটেইনার নিয়েও জাহাজ আসছে। এজন্য জাহাজ আসার পরিমাণ কমলেও বেড়েছে কনটেইনারের সংখ্যা।
সমকাল: কার্গো পণ্য পরিবহন ক্রমশ বাড়ছে। এজন্য বহির্নোঙরে বড় ভূমিকা রাখতে হচ্ছে শিপিং এজেন্টকে। সেখানে কোন কোন বিষয়ে আরও মনোযোগ দেওয়া উচিত?
শফিকুল আলম জুয়েল: সর্বশেষ বছরে প্রায় ১৩ কোটি লাখ টন পণ্য হ্যান্ডল করেছে বন্দর। অথচ ২০২৩ সালে ১২ কোটি ২ লাখ টন পণ্য পরিবহন হয়। ২০২২ সালে এটি ছিল ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৬৫ হাজার টন। ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সামাল দিতে বড় ভূমিকা রাখতে হয় শিপিং এজেন্টদের। কারণ, বন্দরে আসা পণ্যের ৭০ শতাংশেরও বেশি খালাস করতে হয় বহির্নোঙরে। সেখানে বন্দর কর্তৃপক্ষের নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। দক্ষ ও যোগ্য লোক যাতে এ কাজ পরিচালনা করে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
সমকাল: রেল ও নৌপথে পণ্য পরিবহনে কাঙ্ক্ষিত গতি নেই কেন?
শফিকুল আলম জুয়েল: চট্টগ্রাম বন্দর ও এর আওতাধীন কমলাপুর কনটেইনার ডিপো ও পানগাঁও নৌ টার্মিনাল দিয়ে ২০২৩ সালে আমদানি-রপ্তানি ও খালি মিলিয়ে কনটেইনার পরিবহন হয় ৩০ লাখ ৫০ হাজার টিইইউস। ২০২২ সালে হয় ৩১ লাখ ৪২ হাজার ৫০৪ টিইইউস। এটি আরও বাড়ার কথা। যে হারে আমদানি-রপ্তানির পণ্য আসছে সেই হারে পণ্য পরিবহন হচ্ছে না রেল ও নৌপথে। এখানে অনেক ফ্যাক্টর বাধা হিসেবে কাজ করছে। রেলওয়েরও গাফিলতি আছে। তাদের পর্যাপ্ত ইঞ্জিনও নেই। আবার নৌপথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারিনি আমরা। সেখানে ভাড়া নিয়েও
অসন্তোষ আছে। সমস্যা আছে পরিচালনা প্রক্রিয়াতেও। বন্দর কর্তৃপক্ষকে এ নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলে রেল ও নৌপথে আসবে কাঙ্ক্ষিত গতি।