যোগাযোগের সব পথ বন্ধ করে দিয়ে তোমাকে হঠাৎ চিঠি লিখলাম কেন?
Published: 15th, February 2025 GMT
প্রিয় তুমি,
কেমন আছ? জিজ্ঞেস করলে উত্তর দিতে পারবে না জানি। যোগাযোগের সব পথ বন্ধ করে দিয়ে তোমাকে হঠাৎ চিঠি লিখলাম কেন, সে প্রশ্নের উত্তর একটু পরে দিচ্ছি।
এইমাত্র একটা অদ্ভুত স্বপ্ন দেখে ঘুমটা ভেঙে গেল। তোমাকে এই অবেলায় ফোন দিয়ে কোনো দুঃস্বপ্নের গল্প শোনানোর দিন আমাদের ফুরিয়ে গেছে। অগত্যা কলম হাতে লিখতে বসে গেলাম। আইডিয়াটা ভালো, তোমার কাছে কোনো নোটিফিকেশন যাবে না, তবু তুমি শুনতে পাবে। এতটা আত্মবিশ্বাস কীভাবে হলো, সেটিও পরে বলছি, তার আগে কী দেখলাম সেটা শোনো—
পাশের কোনো বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে অনবরত পানি পড়ছে। কোন বিল্ডিং, সেটি দেখার জন্য জানালা দিয়ে তাকাতেই দেখি, ওই বিল্ডিংয়ের অর্ধনির্মিত ছাদবিহীন দেয়ালগুলো পানিতে ভেসে যাচ্ছে, এক্ষুনি নিচে পড়বে। ভাবতে ভাবতেই বুঝি আমাদের ছাদেই এসে পড়ল।
উফ্! কী বিকট শব্দ।
মাথা চেপে ধরে দরজার দিকে যেতেই কারও বুকে ধাক্কা খাই। শক্ত করে তাকে জড়িয়ে ধরি।
পরিচিত একটা ঘ্রাণ, নাক ডুবিয়ে ঘ্রাণ নিই।
বুকের ভেতরে ঢুকে যাই একদম।
একি! আমি তার হৃৎপিণ্ডটা দেখতে পাচ্ছি, লাল লাল রক্তের শিরা–উপশিরা। মনে হচ্ছে, কোনো ব্যবচ্ছেদ করা মানবশরীরে মুখ ডুবিয়ে আছি। হৃৎপিণ্ড সংকোচনের পর জোরে প্রসারিত হয়েই আমার চোখেমুখে রক্তের ছিটা এসে লাগল।
চোখ মেলে তাকালাম। মুখটা আসলেই ভেজা। চোখের কোণে পানি। সেটি কি কারও হৃদয়ের রক্তক্ষরণ দেখে? নাকি লুবানার ছুড়ে দেওয়া পানিতে?
হ্যাঁ, লুবানা ডাকছে। ১২টা বেজে গেছে, ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখ, শনিবার, আমার জন্মদিন। আমি কি ভুলে গিয়েছিলাম এই দিনের কথা? তাহলে ১২টা বাজার আগেই স্লিপিং পিল খেয়ে কেন ঘুমাচ্ছিলাম? আচ্ছা, তুমি তো বলেছিলে, ভুলে যাবে আমাকে, তাহলে লুবানার নিয়ে আসা রেড ভেলভেট কেকের নিচে শক্ত কাগজের উল্টো দিকে এই কাস্টমাইজ লেখাটা কীভাবে এল? লুবানাকে জিজ্ঞেস করলে হতো; কিন্তু মেয়েটা তো এখন ঘুমিয়ে গেছে। নিজের অজান্তেই আমার প্রিয় বইটা খুঁজে এনেছে ও, কোথায় পেয়েছে, সেটিও শোনা হলো না।
ছবি: পেক্সেলস.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শিল্পী পরিচয় ভালোবাসি বলেই সংগীতে ডুবে আছি: কনা
শ্রোতা প্রাণ খুলে গাইছে, কখনও ফেটে পড়ছে উল্লাসে– এমন দৃশ্যের সাক্ষী হতে চান প্রায় সব শিল্পী। দিলশাদ নাহার কনা এর ব্যতিক্রম নন। নন্দিত এই শিল্পীর চাওয়া পূরণ হয়েছে বহু বছর আগেই; বরং তাঁর গাওয়া গানগুলোর সঙ্গে অনুরাগীদের উল্লাসে মেতে ওঠার দৃশ্য প্রতিনিয়তই দেখা যায়। শুধু তাই নয়, এমন অনেক গান আছে, যা দীর্ঘ সময় শ্রোতামনে অনুরণন তুলে যাচ্ছে। যার সুবাদে কনা নিজেও রপ্ত করে ফেলেছেন উৎসব আয়োজনগুলো জমকালো করে তোলার মন্ত্র।
বেশি দূরের নয়, সদ্য পেরিয়ে আসা ঈদ আর বৈশাখী আয়োজনের দিকে যদি নজর দিই, তাহলে দেখা যাবে এই দুই উৎসবের জনপ্রিয় গানগুলোর বেশির ভাগই কনার গাওয়া।
শ্রোতার মুখে মুখে ফিরছে ‘জ্বীন-৩’ সিনেমায় ইমরানের সঙ্গে গাওয়া তাঁর ‘কন্যা’ গানটি। পাশাপাশি ঈদের সিনেমা ‘জংলি’-তে নন্দিত সুরকার প্রিন্স মাহমুদের কথা-সুর ও সংগীতায়োজনে গাওয়া ‘বন্ধুগো শোনো’ গানটিও প্রশংসা কুড়িয়ে নিচ্ছে। এই গানেও কনা সহশিল্পী ইমরান।
এর বাইরেও আসিফ আকবরের সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠে গাওয়া অডিও গান ‘ভীষণরকম ভালোবাসি’, আরিটিভির ‘আর মিউজিকে’ অনুষ্ঠানে গাওয়া ফোন ফিউশন গান ‘বাউলা কে বানাইলো রে’, ‘মন দিতে চাই’ নাটকে ইমরানের সঙ্গে গাওয়া ‘ভালোবাসা এমনই হয়’, ‘পায়েল’ নাটকে সালমান জাইমের সঙ্গে গাওয়া ‘বুকে লাগে টান’, ‘মন দুয়ারী’ নাটকে নাজির মাহমুদের সঙ্গে গাওয়া ‘তোমার ব্যথায় আমি’ এবং ‘হৃদয়ে রেখেছি গোপনে’ নাটকে ইমরানের সঙ্গে গাওয়া ‘তুই আমার ভালোবাসা’সহ আর বেশ কিছু গান শ্রোতা মনোযোগ কেড়ে নিয়েছে। তাই সময়টা যে এখনও কনার দখলে, তা নতুন করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। প্রায় দুই দশক ধরে গানের ভুবনে কনার বিচরণ।
দীর্ঘ সংগীত সফরে শিশুশিল্পী থেকে হয়ে উঠেছেন একজন পরিণত ভার্সেটাইল শিল্পী। আর তা সম্ভব হয়েছে গানের প্রতি অগাধ ভালোবাসা আর নিরলস সংগীতচর্চার মধ্য দিয়ে। শ্রোতার কাছেই তার সব নিবেদন। সে কারণেই আমরা তাঁকে দেখি, দিনমান দেশ-বিদেশের মঞ্চে ছুটে বেড়াতে। গানে গানে সিনেমা, নাটক, অ্যালবাম, বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেল থেকে শুরু করে রেডিও, টিভি আয়োজনসহ সব মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তাঁর কণ্ঠ। খ্যাতির মোহে নাকি সাত সুরের মায়াজালে বাধা পড়েছেন বলে এই ব্যস্ততা?
সে প্রশ্ন করতেই কনা হেসে বলেন, ‘খ্যাতি মোহে না, শিল্পী পরিচয় ভালোবাসি বলেই সংগীতে ডুবে আছি। আর শ্রোতাদের ভালোবাসা পেয়েছি বলেই তাদের প্রত্যাশা পূরণের দায় অনুভব করি। তাই শ্রোতা যতদিন নতুন কিছু চাইবেন এবং চেষ্টা করে যাব তাদের নতুন কিছু দেওয়ার।’ কিন্তু প্রত্যাশা পূরণ করতে গিয়ে এসব মাধ্যমে সরব থাকার চেষ্টা, তা কি মনের মধ্যে বাড়তি কোনো চাপ তৈরি করে না? ‘একদমই না। কারণ যখন যা করি, তা আনন্দ নিয়েই করি। তাই কোনো কাজেই আলাদা কোনো চাপ অনুভব করি না। তা ছাড়া জনপ্রিয়তার মোহে যে কোনো কাজ করার ইচ্ছা কখনও ছিল না। তাই প্রতিটি কাজেই থাকে যত্ন ও ভালোবাসার ছাপ।’
কনার এ কথায় বোঝা গেল, সংগীতের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা নিবিড় ভালোবাসার। তাই দিনরাত গানের আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত থাকতে ভালোবাসেন। তাই গায়কীতে বারবার নিজেকে ভেঙে নতুনভাবে উপস্থাপন করে চলেছেন। সে কারণেই আধুনিক মোলো-রোমান্টিক গান থেকে শুরু করে রক, পপ, টোকনো, ফোক ফিউশনসহ বিভিন্ন ধাঁচের গান তাঁর কণ্ঠে শোনার সুযোগ পান সংগীতপ্রেমীরা। আগামীতেও সেই সুযোগ পাবেন– সেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কনা নিজেই।