বেনেটের রেকর্ডে আয়ারল্যান্ডকে হারাল জিম্বাবুয়ে
Published: 15th, February 2025 GMT
ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টটি হারতে হয়েছিল জিম্বাবুয়েকে। ধারণা করা হচ্ছিল ওয়ানডেতেও সেই ধারা ধরে রাখবে আইরিশরা। তবে বাধ সাধলেন তরুণ জিম্বাবুয়েন ব্যাটসম্যান ব্রায়ান বেনেট। এই ২১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের কল্যাণে ৪৯ রানের জয় পায় জিম্বাবুয়ে।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) বুলাওয়েতে টস হেরে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ২৯৯ রান করে জিম্বাবুয়ে। বিশাল রান তাড়া করতে নেমে আয়ারল্যান্ড ৪৬ ওভারে ২৫০ রানে অল আউট হয়ে যায়।
ব্যাটিংয়ে নেমে এক প্রান্তে অনায়াসে রান পেতে থাকেন বেনেট। এই ম্যাচ খেলতে নামার আগে ক্যারিয়ারের প্রথম ছয় ওয়ানডে মিলে তার ছিল ৮৭ রান। সবশেষ তিন ইনিংসের দুটিতে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেছিল। সেখান থেকে প্রথমবার ওপেনিংয়ে খেলার সুযোগ এলো আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে, তাতেই বাজিমাত করলেন বেনেট।
১৬৩ বলে ১৬৯ রান করেন বেনেট। অভিষেক শতক স্পর্ষ করার পথে তিনি হাঁকিয়েছেন ২০টি চার ও ৩টি ছক্কা। ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের হয়ে পঞ্চম সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এটি। দেশটির হয়ে আরও চার জন দেড়শ ছোঁয়া ইনিংস খেলেছেন। তবে বেনেট সর্বকনিষ্ট। সব দেশ মিলিয়ে এই তালিকায় বেনেট আছেন চতুর্থ স্থানে। ২১ বছর ৯৬ দিন বয়সে এই কীর্তি গড়ে তিনি পেছনে ফেলেছেন ক্রিস গেইল, বিরাট কোহলি, শুবমান গিলের মতো তারকাদের।
আরো পড়ুন:
কোচদের ঠিকানা পাল্টাচ্ছে
কিউইরা বহুজাতিক শিরোপা জিতল ২০ বছর পর
বেনেটকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া জিম্বাবুয়ের কাপ্তান ক্রেইগ এরভিন ৬১ বলে ৬৬ রান করেন। অন্যদিকে বেন কারেনের সংগ্রহ ছিল ৪৪ বলে ২৮ রান। এই তিন ব্যাটসম্যানের ব্যাটে ভর করে ৫ উইকেটে জিম্বাবুয়ে করে ২৯৯ রান। আইরিশদের হয়ে ২ উইকেট নেন মার্ক অ্যাডায়ার।
বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কক্ষপথেই ছিল আয়ারল্যান্ড। এক সময় মনে হচ্ছিল এই পাহাড়সম রানও সফলভাবে তাড়া করে ফেলবে সফরকারীরা। ৪৪.
আইরিশদের হয়ে কার্টিস ক্যাম্পার সর্বোচ্চ ৫৭ বলে ৪৪ রান করেন। এছাড়া হ্যারি টেক্টর ৭৮ বলে ৩৯, ডকরেল ৩৫ বলে ৩৪। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৪১ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন ব্লেসিং মুজারাবানি। ৩ উইকেট নেন রিচার্ড এনগারাবা।
রবিবার বেলা দেড়টায় একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ান্ডেতে মুখোমুখি হবে দল দুটি।
ঢাকা/নাভিদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন কর আইর শ উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
ভোগান্তি লাঘবে ব্যবস্থা লউন
গরমে বিদ্যুতের লোডশেডিং স্বাভাবিক ঘটনা হইলেও এইবার উহা অস্বাভাবিক হারে দেখা দিবার আশঙ্কা তৈয়ার হইয়াছে। শুক্রবার প্রকাশিত সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থ সংকটে জ্বালানি আমদানি ব্যাহত হইবার কারণে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করিতে পারে। বিশেষত আসন্ন রমজান মাসে গরম বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাইবে। তৎসহিত সেচ মৌসুম যুক্ত করিলে ধারণা করা কঠিন নহে, মার্চ-এপ্রিল হইতে বিদ্যুতের চাহিদা হইবে দেড় গুণ। অতিরিক্ত চাহিদা পূরণে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করিলেও উহা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নহে।
বিশেষ করিয়া অতিরিক্ত চাহিদা পূরণ করিতে হইলে বেসরকারি খাত হইতে বিদ্যুৎ সরবরাহ জরুরি। কিন্তু ইতোমধ্যে বেসরকারি খাতে সরকারের বিপুল ঋণ রহিয়াছে। সেই কারণে অর্থ সংকটে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা প্রাথমিক জ্বালানি ফার্নেস অয়েল ও কয়লা আমদানিতে হোঁচট খাইতেছে; গ্যাস খাতের পরিস্থিতিও তথৈবচ। বকেয়া ও ডলার সংকটে এলএনজি আমদানি ব্যাহত হইতে পারে। অন্যদিকে দেশীয় উৎস হইতেও গ্যাসের জোগান হ্রাস পাইতেছে। সকল কিছু মিলাইয়া এইবার গরমে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন যে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়িবে, উহা বলিবার অপেক্ষা রাখে না।
ইহা স্পষ্ট, সরকার জ্বালানি সাশ্রয় নীতির উপর গুরুত্ব দিয়াছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ইতোমধ্যে সতর্ক করিয়াছেন, আগামী গ্রীষ্ম মৌসুমে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র-এসি ব্যবহার করিলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ, তৎসহিত আইনগত ব্যবস্থাও লওয়া হইবে। সরকারের হিসাব অনুসারে, এসির কারণে প্রায় চার সহস্র মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হইয়া থাকে, যথায় উহার তাপমাত্রা ২৫-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ব্যবহার করিলে অন্তত দুই সহস্র মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় সম্ভব হইবে। এই লক্ষ্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা প্রদান করিবেন, ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা মসজিদের ইমামদের অনুরোধ করিবেন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব সচিবালয়সহ অন্যান্য সরকারি দপ্তরে এই নীতি কার্যকর করিবেন।
আমরা মনে করি, জ্বালানি সাশ্রয়ের এই নীতি নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী এবং মানুষ যাহাতে এই ক্ষেত্রে সচেষ্ট থাকে তজ্জন্য বিদ্যুৎ অপচয় রোধেও বৎসরব্যাপী সরকারকে প্রচার-প্রচারণা চালাইতে হইবে; কেবল জ্বালানি সাশ্রয়ের নীতি গ্রহণে বিদ্যুতের সংকট কাটিবে না। রমজান মাস হইতে বিদ্যুতের অতিরিক্ত চাহিদা পূরণ করিতে হইলে উৎপাদন বৃদ্ধির বিকল্প নাই। জ্বালানি উপদেষ্টা সরকারের আর্থিক সংকটের কথা স্বীকার করিয়াছেন বটে, তবে এই লক্ষ্যে অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত কমিটি কার্যকর ভূমিকা রাখিবে বলিয়াই আমাদের বিশ্বাস। ইতিপূর্বে আমরা দেখিয়াছি, গ্রামে ভয়াবহ লোডশেডিং হইলেও শহরবাসী বেশি সুবিধা ভোগ করিত। এইবার সরকার শহর ও গ্রামে সমান হারে এই লোডশেডিং বণ্টন করিবার ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়াছে। আমরা চাই, এই ক্ষেত্রে রুটিন করা হউক; কোথায় কখন বিদ্যুৎ যাইবে সেইভাবে রুটিন মানিলে উহাতে মানুষের ভোগান্তি কিছুটা হ্রাস পাইবে।
অস্বীকার করা যাইবে না, গত সরকারের জ্বালানি খাতের ভুল নীতির প্রভাব অন্তর্বর্তী সরকারের উপরেও পড়িয়াছে। জ্বালানি খাতের নিরাপত্তায় দীর্ঘমেয়াদি টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করিবার বিকল্প নেই। কিন্তু আসন্ন রমজান মাস ও সেচ মৌসুমের কথা চিন্তা করিয়া সরকারকে আপাত ব্যবস্থারূপে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করিতে জ্বালানি আমদানি করিতেই হইবে। মনে রাখিতে হইবে, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি না করিলে শিল্প উৎপাদনও ব্যাহত হইবে। তজ্জন্য জ্বালানি চাহিদার আলোকে জরুরি ভিত্তিতে জোগান দিতে সরকারকে সচেষ্ট হইতে হইবে। ইহাকে অগ্রাধিকার দিয়া এখনই ব্যবস্থা লওয়া জরুরি।