ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টটি হারতে হয়েছিল জিম্বাবুয়েকে। ধারণা করা হচ্ছিল ওয়ানডেতেও সেই ধারা ধরে রাখবে আইরিশরা। তবে বাধ সাধলেন তরুণ জিম্বাবুয়েন ব্যাটসম্যান ব্রায়ান বেনেট। এই ২১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের কল্যাণে ৪৯ রানের জয় পায় জিম্বাবুয়ে।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) বুলাওয়েতে টস হেরে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ২৯৯ রান করে জিম্বাবুয়ে। বিশাল রান তাড়া করতে নেমে আয়ারল্যান্ড ৪৬ ওভারে ২৫০ রানে অল আউট হয়ে যায়।
ব্যাটিংয়ে নেমে এক প্রান্তে অনায়াসে রান পেতে থাকেন বেনেট। এই ম্যাচ খেলতে নামার আগে ক্যারিয়ারের প্রথম ছয় ওয়ানডে মিলে তার ছিল ৮৭ রান। সবশেষ তিন ইনিংসের দুটিতে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেছিল। সেখান থেকে প্রথমবার ওপেনিংয়ে খেলার সুযোগ এলো আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে, তাতেই বাজিমাত করলেন বেনেট।

১৬৩ বলে ১৬৯ রান করেন বেনেট। অভিষেক শতক স্পর্ষ করার পথে তিনি হাঁকিয়েছেন ২০টি চার ও ৩টি ছক্কা। ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের হয়ে পঞ্চম সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এটি। দেশটির হয়ে আরও চার জন দেড়শ ছোঁয়া ইনিংস  খেলেছেন। তবে বেনেট সর্বকনিষ্ট। সব দেশ মিলিয়ে এই তালিকায় বেনেট আছেন চতুর্থ স্থানে। ২১ বছর ৯৬ দিন বয়সে এই কীর্তি গড়ে তিনি পেছনে ফেলেছেন ক্রিস গেইল, বিরাট কোহলি, শুবমান গিলের মতো তারকাদের।

আরো পড়ুন:

কোচদের ঠিকানা পাল্টাচ্ছে

কিউইরা বহুজাতিক শিরোপা জিতল ২০ বছর পর

বেনেটকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া জিম্বাবুয়ের কাপ্তান ক্রেইগ এরভিন ৬১ বলে ৬৬ রান করেন। অন্যদিকে বেন কারেনের সংগ্রহ ছিল ৪৪ বলে ২৮ রান। এই তিন ব্যাটসম্যানের ব্যাটে ভর করে ৫ উইকেটে জিম্বাবুয়ে করে ২৯৯ রান। আইরিশদের হয়ে ২ উইকেট নেন মার্ক অ্যাডায়ার।

বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কক্ষপথেই ছিল আয়ারল্যান্ড। এক সময় মনে হচ্ছিল এই পাহাড়সম রানও সফলভাবে তাড়া করে ফেলবে সফরকারীরা। ৪৪.

২ ওভারে আইরিশদের রান ছিল ৬ উইকেটে ২৪২ রান। জয়ের জন্য তখন ৩৪ বলে দরকার ৫৮ রান। কিন্তু এরপরই সব এলোমেলো, ‘তাসের ঘরের’ মত ভেঙে পড়ে আইরিশ ব্যাটিং লাইন আপ। মাত্র ৮ রানে নিতেই বাকি ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা।

আইরিশদের হয়ে কার্টিস ক্যাম্পার সর্বোচ্চ ৫৭ বলে ৪৪ রান করেন। এছাড়া হ্যারি টেক্টর ৭৮ বলে ৩৯, ডকরেল ৩৫ বলে ৩৪। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৪১ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন ব্লেসিং মুজারাবানি। ৩ উইকেট নেন রিচার্ড এনগারাবা।

রবিবার বেলা দেড়টায় একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ান্ডেতে মুখোমুখি হবে দল দুটি।

ঢাকা/নাভিদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন কর আইর শ উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রিসের পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনির নিচে ঘুমিয়ে আছে ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি

গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনি। যেখানে সাদা-নীল বাড়ি, সূর্যাস্ত আর নীল সমুদ্রের অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের টানে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। কিন্তু অনেকের স্বপ্নের এই দ্বীপের নিচেই লুকিয়ে আছে এক ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, যা আবারও ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বছর আগে আগ্নেয়গিরির বিশাল এক বিস্ফোরণে সান্তোরিনি দ্বীপের বর্তমান আকৃতি তৈরি হয়। সেই বিস্ফোরণে দ্বীপের মাঝখান দেবে গিয়ে একটি বিশাল গর্ত বা কালডেরা সৃষ্টি হয়। এর পর এই অঞ্চলটিতে বড় আকারের ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি।

গত বছরের শুরুর দিক থেকে কয়েকবার ভূমিকম্পে দ্বীপটি কেঁপে ওঠায় নতুন করে সামনে এসেছে দ্বীপটির নিচে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা ও তার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের ভূমিকম্প ভূগর্ভের ম্যাগমা চেম্বারে চাপ বাড়ার লক্ষণ হতে পারে।

ব্রিটেনের গবেষণা জাহাজ ‘আরআরএস ডিসকভারি’ থেকে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল সান্তোরিনির সমুদ্রতলের আগ্নেয়গিরি ও হাইড্রো-থার্মাল ভেন্ট নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন এখন। চলমান এ গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওসিওগ্রাফি সেন্টারের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইসাবেল ইয়ো। তিনি জানান, এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো আগ্নেয়গিরির আচরণ বিশ্লেষণ করে কখন বড় বিস্ফোরণের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে তা বুঝতে পারা। সান্তোরিনি দ্বীপের ৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সাগরের নিচে থাকা আরেকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কলোম্বো নিয়েও পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।

চলমান এই গবেষণায় রোবটের মাধ্যমে সাগরের ৩০০ মিটার নিচ থেকে গরম পানি, গ্যাস ও আগ্নেয় পাথরের নমুনা সংগ্রহ করছেন তারা। এ ছাড়া ভূকম্পন এবং ভেতরে থাকা জ্বলন্ত লাভার গতিবিধি বোঝার জন্য ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রও তৈরি করছেন গবেষকরা। এই গবেষণা শেষে পাওয়া তথ্য গ্রিস সরকারকে সরবরাহ করা হবে। গ্রিসের সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এই গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করছে। অধ্যাপক পারাস্কেভি নোমিকো– যিনি নিজে সান্তোরিনির বাসিন্দা এবং সরকারিভাবে জরুরি পরিকল্পনায় যুক্ত– বিবিসিকে বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের জানাবে, কোথায় কতটা ঝুঁকি এবং কোন এলাকায় আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।’

সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ফলে সান্তোরিনির ১১ হাজার বাসিন্দার প্রায় অর্ধেকই দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছেন। পর্যটন খাতেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকেই তাদের পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। স্থানীয় ফটোগ্রাফার ইভা রেন্ডল বলেন, ‘আমার অনেক ক্লায়েন্ট তাদের শুটিং বাতিল করেছেন। আগে এপ্রিল থেকেই কাজ শুরু হতো; এবার মে পর্যন্ত কেউ আসেনি।’

তবে দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকেই জায়গাটির অতুলনীয় সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে আবার ফিরেও আসছেন। সান্তোরিনিতে বিয়ের ছবি তুলতে আসা এক নবদম্পতি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করেই আগ্নেয়গিরির পাশে বিয়ে করতে চেয়েছি!’ এখন পর্যন্ত তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণের আশঙ্কা না থাকলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি ‘শুধু সময়ের ব্যাপার।’ বিবিসি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ