জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর পদবঞ্চিতদের দাবির মুখে তা বর্ধিত করা হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটি গঠনে ৫১ দিন পর জবি শাখা ছাত্রদলের ৪৫৫ সদস্যবিশিষ্ট এ বর্ধিত কমিটি অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। 

গত বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি মো.

রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়। নতুন কমিটিতে ২০৪ জনকে যুগ্ম-আহ্বায়ক এবং ২৪৯ জনকে সদস্য করা হয়েছে।

গত ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে সম্মেলনের মাধ্যমে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এ আংশিক আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হলো। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান হিমেলকে আহ্বায়ক এবং ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সামসুল আরেফিনকে সদস্য সচিব করা হয়েছিল। 

২৪ ডিসেম্বর ২৭ সদস্যের কমিটির হওয়ার পরে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের অভিযোগ ছিল, অছাত্র, অনিয়মিত, পকেট কমিটি ও ছাত্রলীগের কর্মী নিয়ে জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে।

নেতাকর্মীরা আরো অভিযোগ করেছিলেন, এখানে ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির অনেক সদস্য লোকজন রয়েছে। আমরা এ কমিটিকে প্রত্যাখান করছি। একাংশের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। এরপর আর ওই কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেননি।

কমিটি ঘোষণার ৩২ দিন পর গত ২৬ জানুয়ারি জবি ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সদ্য সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম ও সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লাসহ আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁঠালতলায় এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

পদবঞ্চিতদের নিয়ে আন্দোলনকারী জবি ছাত্রদলের সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. রায়হান হোসেন অপু বলেন, “৫ আগস্টের পর ছাত্র রাজনীতিতে এসেছে তাদের কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে। আহ্বায়ক এই কমিটির অনেককে পদ দেওয়া হয়েছে। আমরা কমিটির অধিকাংশ আগামীকাল রবিবার ক্যাম্পাসে একটি নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটির জন্য দাবি করব।”

তিনি বলেন, “ক্যাম্পাসে বর্তমান কমিটির দায়িত্বে থাকা আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেব না। আমরা দ্রুত একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি চাই। আমরা চাই নিয়মিত ছাত্রদের হাতে রাজনীতি ফিরে আসুক।”

৪৫৫ কমিটির বর্ধিত আহ্বায়ক কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে সদস্য সচিব সামসুল আরেফিন বলেন, “প্রায় ১ হাজার ৪০০ নাম থেকে ৪৫৫ জনকে এ কমিটিতে রাখা হয়েছে। বিগত ১৬ বছরে যারা জেল-জুলুমে নির্যাতিত, তাদের পদ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ ও ১৭ ব্যাচের ছাত্রদলের একনিষ্ঠ কর্মীদের এ কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে।”

আহ্বায়ক কমিটি এত বড় হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “আহ্বায়ক কমিটি অল্প সদস্যের হয়ে থাকে। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল বড় ইউনিট। সেজন্য সবকিছু বিবেচনা করে এ বড় বর্ধিত আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়েছে।”

বর্ধিত কমিটির বিষয়ে আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল র ন ত কর ম এ কম ট কম ট ত ক কম ট বর ধ ত কম ট র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের সিনেমার ব্যতিক্রমী প্রচারণা

‘হ্যাঁ ভাই, আসিতেছে, আসিতেছে আগামী শুক্রবার ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন পেক্ষাগৃহে...’ সিনেমার বিজ্ঞাপনের এমন দরাজ কণ্ঠের ঘোষণা সেই নব্বই দশক সময়ের দর্শকদের কানে এখনও বাজে। রিকশা আর ভ্যানে মাইক লাগিয়ে সিনেমার ঘোষণা আসত। ঈদের সিনেমা হলো তো মাসখানেক আগে থেকেই চলতে এমন প্রচারণা। সিনেমা প্রচারণায় আরও একটি ব্যবহারও দেখা গেছে ব্যাপক। রিকশা বা ঘোড়ার টমটম গাড়িতে মাইক ব্যবহার করে পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে ঘোষণা; যা এখন অতীত। মাঝে ঢাকাই সিনেমার মুক্তির আগে প্রচারণার বিষয়টি ঝিমিয়ে গিয়েছিল। তখন প্রচারণা মানে ধরে নেওয়া হতো কেবল পোস্টার ও টিজার আর ট্রেলার প্রকাশ। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের শক্তিশালী অবস্থানের এ সময়ে প্রচারণার ধরন বদলেছে। সিনেমার বেশির ভাগ প্রচারণায় এখন ফেসবুক, ইউটিউবনির্ভর। বেশ কাজেও দিচ্ছে সেসব প্রচারণা। এবারের ঈদুল ফিতরে আসছে শাকিব খান, আফরান নিশো, সিয়াম আহমেদ, মোশাররফ করিম, সজলদের মতো তারকার ছবি; যাদের বিপরীতে নায়িকা হিসেবে আছেন যথাক্রমে কলকাতার ইধিকা পাল, তমা মির্জা, বুবলী-দীঘি, শিমু ও নুসরাত ফারিয়া। এসব তারকার নিজ নিজ ছবির ভিন্ন ভিন্ন স্টাইলের প্রচারণা বেশ চোখে পড়ল। 

পোস্টার ও টিজার প্রকাশ করে ঈদুল ফিতরে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ছবির প্রচারণা বহু আগে শুরু হয়। সেসব প্রচারণার মধ্যে ‘চক্কর ৩০২’ মুক্তির ঘোষণা দিয়ে সবার নজড় কাড়ে। ৪ মিনিটের এক ভিডিওতে নাটকীয় কায়দায় মুক্তির ঘোষণায় চমকে ওঠেন সিনেপ্রেমী দর্শক। যে ভিডিওতে পরিচালক শরাফ আহমেদ জীবনকে বেঁধে রেখে মোশাররফ করিমের সিনেমা মুক্তির ঘোষণা দেওয়ার বিষয়টি বেশ চমকপদ ছিল। 

এরপর ঈদের সিনেমার ব্যতিক্রমী প্রচারণায় সবাইকে ছাড়িয়ে আছে এম রাহিমের ‘জংলি’। সবার আগে ‘জংলি’ টিমই প্রি-টিজার দিয়ে প্রচারণা শুরু করে। স্টাইলটা ভিন্ন ছিল প্রি-টিজারের। এরপর ইউটিউবার বা ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে সহযোগী হয়ে প্রচারণার বিভিন্ন ভিডিও বানাতে দেখা গেছে জংলি টিমকে। সর্বশেষ রিপন ভিডিওকে নিয়ে নির্মিত কনটেন্টটি বেশ আলোচনায় আসে। 

ঈদের আরেক ছবি ‘দাগি’-এর সংবাদ সম্মেলনে সিনেমার চরিত্রে হাজির হয়ে বেশ চমকে দিয়েছেন আফরান নিশো। বিষয়টি সিনেমার প্রচারণায় একদফা এগিয়ে দিয়েছে দাগিকে। এদিন দেখা যায় আফরান নিশোর লম্বা চুল, মুখভর্তি দাড়ি, গায়ে কয়েদির পোশাক, হাতে হাতকড়া। পুলিশের গাড়িতে অভিনেতা আফরান নিশোকে নেওয়া হচ্ছে রাজধানীর গুলশানে। প্রথম দেখাতেই যে কারও মনে হবে নিশোকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছে দুইজন পুলিশ। বিষয়টি মোটেও তা নয়। মূলত এটি তারই প্রচারণার অংশ।

এদিকে ঈদের ছবি ‘জ্বীন থ্রি’ প্রচারণায় পিছিয়ে নেই। কন্যারে গান গিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল প্রচারণায় নেমেছে জ্বীন টিম; যা চোখে পড়ছে সিনেমাপ্রেমীদের। 

শাকিব খান অভিনীত বরবাদ সিনেমার ব্যতিক্রমী প্রচারণা চোখে পড়েনি। তবে নায়কের ভক্তরা নানা কৌশলে ছবির প্রচারণা চালাচ্ছেন। ফেসবুকের সিনেমাবিষয়ক গ্রুপে গ্রুপে চলছে বরবাদ সিনেমা নিয়ে তুমুল চর্চা। সর্বশেষ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডে সিনেমাটি কাটছাঁট করার খবরে বেশ প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে সিনেমার মানুষ ও ভক্তরা; যা সিনেমার প্রচারণা হিসেবে কাজে আসে। তবে সর্বশেষ মুক্তির তালিকায় যুক্ত হওয়া শাকিব খান অভিনীত আরেক ছবি ‘অন্তরাত্মা’ ব্যতিক্রমী প্রচারণা থেকে একটু পিছিয়ে আছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ