অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ছয় মাসকে প্রথম পর্ব আখ্যায়িত করে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‍“অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাসে প্রথম ইনিংস বা প্রথম অধ্যায় শেষ হয়েছে। রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হলো।”

শনিবার (১৫ জানুয়ারি) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “প্রথম অধ্যায় আমরা যেভাবে কাটালাম, এটা একটা মস্তবড় শক্তি। প্রথম অধ্যায় শেষ করলাম। দ্বিতীয় অধ্যায় যদি ঠিক থাকতে পারি, তৃতীয় অধ্যায়ের জন্য আর আমার কোনো চিন্তা নেই। আমরা নিশ্চয়ই নতুন বাংলাদেশ বানাতে পারব। এ সময় যেসব শক্তি আমাদের ব্যাহত করার চেষ্টা করেছে, আমাদের ভন্ডুল করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে, তাদেরকে সবাই মিলে সুন্দরভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছি।”

আরো পড়ুন:

অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু: প্রেস সচিব

‘জুলাই চার্টারের’ ওপর নির্ভর করবে নির্বাচন কবে: প্রেস সচিব

দেশ, দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দল ছাড়াও আন্তর্জাতিকভাবে সরকারের সমর্থন গড়ে উঠেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সে কারণে অপর পক্ষ সুবিধা করতে পারছে না। পদে পদে তারা ব্যাহত হচ্ছে। বহুবার প্ররোচনা করেও গল্প টিকাতে পারছে না তারা। শেষ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অপ্রপ্রচার চালাতে গিয়েও পারেনি তারা। যত ছোট-বড়, মাঝারি ও ধনী রাষ্ট্র-সবাই আমাদের পক্ষে। কারও কোনো দ্বিধা নেই।”

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদন সারা পৃথিবী বদলে দিয়েছে উল্লেখ করে ড.

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “এখন কারো বয়ান কেউ শুনবে না। আর কত সমর্থন চাই আমাদের। অক্ষরে অক্ষরে বলে দিয়েছে, কখন কীভাবে মেরেছে (মানুষ)। এর থেকে তো তাদের বের হওয়ার উপায় নেই। বাংলাদেশকে ঘিরে যে অপপ্রচার চলছিল, একটি প্রতিবেদনে সবকিছু সমাপ্ত হয়েছে।”

বৈঠকের শুরুতে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের যারা আত্মত্যাগ করেছেন তাদের স্মরণ করা হয়। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বহু আগে থেকে আমাদের মনে নানা প্রশ্ন থাকলেও তা করার সুযাগ পাইনি। ছাত্র-জনতার ত্যাগের মধ্য দিয়ে সেই সুযোগ আমরা পেয়েছি। আমরা যেন তাদের এই আত্মত্যাগের প্রতি অসম্মান না জানাই। পরবর্তী প্রজন্ম যেন তাদেরকে মনে রাখে। তাদের আত্মত্যাগকে স্বার্থক করার জন্য আমরা সবাই দাঁড়িয়েছি। সবাইকে মিলে সব রকম চেষ্টা করব, যেন তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারি।”

ঢাকা/হাসান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র সরক র র আম দ র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের তীব্র নিন্দা

সুদানে জাতিসংঘের এক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় ছয় শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি সুদানের কাদুগলিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর লজিস্টিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে নৃশংস ড্রোন হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের লক্ষ্য করে হামলা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।’

সুদানের কোরদোফান অঞ্চলের কাদুগলি শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের ভবনটিতে গতকাল শনিবার এ হামলা হয়।

গুতেরেসের বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। হতাহত ব্যক্তিদের সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন।

গুতেরেস বলেন, ‘দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।’

হামলায় নিহত শান্তিরক্ষীদের সবাই বাংলাদেশি। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন। হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন।

সুদানের সেনাবাহিনী ওই হামলার দায় র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নামে দেশটির আধা সামরিক বাহিনীর ওপর চাপিয়েছে।

সুদানে দুই বছরের বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে এ লড়াই চলছে।

আরএসএফ তাৎক্ষণিকভাবে হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

সুদানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, এ হামলা বিদ্রোহী মিলিশিয়া এবং এর পেছনে যাঁরা আছেন, তাঁদের ধ্বংসাত্মক কৌশলের স্পষ্ট প্রকাশ।

সুদান সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ভিডিওতে একটি স্থান থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উঠতে দেখা যাচ্ছে। তারা বলেছে, এটি জাতিসংঘের স্থাপনা।

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহত হওয়ার এ ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।.আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ মহাসচিব

যেখানে হামলা হয়েছে, সেই তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল আবেই নিয়ে সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। ২০১১ সালে সুদান থেকে আলাদা হয়ে দক্ষিণ সুদান একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর পর থেকে সেখানে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন মোতায়েন রয়েছে।

দুই দেশের সীমান্তে অবস্থিত আবেই বিশেষ প্রশাসনিক মর্যাদার অঞ্চল।

সুদানের আবেই অঞ্চলে একটি সড়কে দায়িত্ব পালন করছেন জাতিসংঘের একজন শান্তিরক্ষী

সম্পর্কিত নিবন্ধ