তরুণের ছুরিকাঘাতে আহত কিশোরী মাহি মারা গেছে
Published: 15th, February 2025 GMT
দিনাজপুরের কাহারোলে নামাজরত অবস্থায় তরুণের ছুরিকাঘাতে আহত কিশোরী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। কিশোরীর চাচা বায়োজিদ সারোয়ার ও কাহারোল থানার ওসি রুহুল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মেয়েটির মৃত্যুর আগেই বুধবার রাতে হামলা চালানোর ঘটনায় আরিফ হোসেন নামে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা জানান, বুধবার রাত ৮টার দিকে নিজ বাড়িতে নামাজ পড়ছিল কাহারোল উপজেলার দ্বীপনগর গ্রামের জুয়েল রানার মেয়ে মাহি আক্তার (১৫)। এ সময় তার বাড়ির প্রাচীর টপকে বাড়িতে প্রবেশ করে আরিফ।
নামাজরত অবস্থায়ই কিশোরীকে কোমরে আঘাত করে ওই তরুণ এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থান ক্ষতবিক্ষত করে। এ সময় মেয়েটি চিৎকার করলে সে পালিয়ে যায়। পরে মাহিকে উদ্ধার করে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে মারা যায় ওই কিশোরী।
নিহত মাহির চাচা বায়োজিদ সারোয়ার জানান, দীর্ঘদিন ধরেই এ তরুণ তাঁর ভাতিজিকে উত্ত্যক্ত করত। দু’দিন আগেও সে বাড়িতে প্রবেশ করেছিল। পরে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে তাকে বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর সে সবার অগোচরে বাড়িতে প্রবেশ করে ভাতিজিকে কুপিয়েছে। তিনি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
কিশোরীকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় উপজেলার ভাতগাঁ গ্রামের আবুল কালামের ছেলে আরিফ হোসেনকে (১৮) বুধবার রাতেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কাহারোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত যুবক কারাগারে রয়েছে। কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে যে মামলাটি করা হয়েছে, তাতে এখন হত্যার ধারা যুক্ত হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হৃদয়ের কথা বলতে পারছেন না হৃদয়
এপ্রিলজুড়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে আলোচিত নাম তাওহিদ হৃদয়। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ১২ এপ্রিল আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ারের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে মোহামেডানের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক যে বিতর্কের জন্ম দেন, তা আক্ষরিক অর্থেই তোলপাড় সৃষ্টি করে।
এর জেরে জল গড়ায় অনেক দূর। একবার হৃদয়কে নিষেধাজ্ঞার শাস্তি দেওয়ার পর পরবর্তী সময়ে তা কমিয়ে আবার বাড়ানো হয়। ২৬ এপ্রিল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ম্যাচে আরেক কাণ্ড করে বসেন জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার। আউট হওয়ার পর তাঁকে অসন্তোষ প্রকাশ করে কিছু একটা বলতে শোনা যায়। ম্যাচ শেষে হৃদয়কে শুনানির জন্য ডাকা হলেও তিনি যাননি। ফলে ম্যাচ রেফারি তাঁকে ১টি ডিমেরিট পয়েন্ট দেন ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
মোট ডিমেরিট পয়েন্ট ৮ হওয়ায় বিসিবির আচরণবিধি অনুসারে হৃদয়কে নতুন করে ৪ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হয়। এর সঙ্গে আগের ১ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা তো ছিলই।
নিষিদ্ধ হৃদয় ২৬ এপ্রিলের পর তাই আর মাঠে নামতে পারেননি। তাঁর দল মোহামেডানও শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে শেষ পর্যন্ত পারেনি। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ সুপার লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানকে হারিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আবাহনী।
রানার্সআপ হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শেষ করার পর গত কয়েক দিনের ঘটনাবহুল সময় নিয়ে আজ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন হৃদয়। ২৪ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তিনি নাকি অনেক কিছু লিখতে চেয়েও পারছেন না।
স্ট্যাটাসে হৃদয় লিখেছেন, ‘প্রতিটি গল্পের দুটি দিক থাকে। হয়তো একপক্ষের চাপে অপরপক্ষকে আমাদের কখনো জানার সুযোগ হয় না। তাই ঢালাওভাবে সবটা না জেনেই আমরা কিছু করে বসি বা বলে ফেলি। একদম শুরু থেকে যদি সবটাই বলতে পারতাম, তাহলে কাহিনি হতো ভিন্ন। যেটা বলতে পারছি না, কেন পারছি না, তা না হয় পরেই বলব!’
সব শাস্তি কীভাবে মেনে নিয়েছেন, সেই সম্পর্কে হৃদয় লিখেছেন, ‘নিজেদের ভেতর অনেক কিছুই হয়। বড়-ছোট সবাই ভুল করে, পরিবারের অপর মানুষটা যেন ছোট বা অপমানিত না হয়, সে জন্য অনেক কিছু নিজের ঘাড়ে নিতে হয়, আবার সহ্য করতে হয়—হোক সেটা অপমান কিংবা ভালোবাসা। এগুলো মিলেই জীবন। আপাতত এটাই বুঝিয়েছি নিজেকে।’
টুর্নামেন্টের এই মৌসুমে মোহামেডানকেই সবচেয়ে বড় পরীক্ষা দিতে হয়েছে বলে মত হৃদয়ের, ‘এবারের প্রিমিয়ার লিগে ২২ গজের বাইরেও এক প্রকার অলিখিত যুদ্ধ করে গেল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। আর কোনো দলকে এতটা মানসিক যুদ্ধ করতে হয়নি, যতটা মোহামেডান করেছে।’
ফেসবুক স্ট্যাটাসের শেষ ভাগে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন হৃদয়, ‘মোহামেডান কর্তৃপক্ষ প্রতিটি ম্যাচে আমাকে উপস্থিত রাখার জন্য যে চেষ্টা করেছেন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমার সতীর্থ খেলোয়াড়, শ্রদ্ধেয় কোচ ও সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ভালোবাসা।’