ডেটিং সাইট থেকে যেভাবে আজকের ইউটিউব
Published: 15th, February 2025 GMT
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও দেখার ওয়েবসাইট ইউটিউব ২০ বছরে পা দিল। ২০০৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করেছিল ইউটিউব। তবে এটি শুরু থেকেই আজকের মতো উন্মুক্ত ভিডিও প্ল্যাটফর্ম ছিল না। প্রতিষ্ঠাতারা প্রথমে এটিকে একটি অনলাইন ডেটিং সাইট হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন।
তিন তরুণ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা স্টিভ চেন, চ্যাড হার্লি ও জাভেদ করিম ইউটিউবের ভিত্তি গড়েন। ২০০৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ইউটিউব ডটকম ডোমেইন নিবন্ধিত হয়। শুরুতে সাইটটিতে ব্যবহারকারীরা নিজেদের লিঙ্গ পরিচয়, কাঙ্ক্ষিত সঙ্গীর লিঙ্গ ও বয়সসীমা নির্বাচন করে উপযুক্ত সঙ্গী খুঁজতে পারতেন। ভালোবাসা দিবসে ইউটিউবের ডোমেইন নিবন্ধনের পেছনে এটাই ছিল মূল কারণ। তবে সাইটটি প্রত্যাশিত সাড়া পায়নি। কেউ এতে আগ্রহ দেখাননি।
ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করতে ইউটিউবের প্রতিষ্ঠাতারা ক্রেগলিস্টে বিজ্ঞাপন দেন। সেখানে ২০ ডলারের বিনিময়ে নারীদের ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার আহ্বান জানানো হয়। তবে সেই উদ্যোগও ব্যর্থ হয়। ডেটিং সাইট হিসেবে ইউটিউব সফল না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতারা দিক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। ইউটিউবকে কেবল ডেটিং ভিডিওর জন্য না রেখে যেকোনো ধরনের ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়।
২০০৫ সালের ২৩ এপ্রিল ইউটিউবে প্রথম ভিডিও আপলোড করা হয়। ‘মি অ্যাট দ্য জু’ শিরোনামের সেই ভিডিওতে ইউটিউবের সহপ্রতিষ্ঠাতা জাভেদ করিমকে সান ডিয়েগো চিড়িয়াখানায় দাঁড়িয়ে হাতিদের সম্পর্কে বলতে দেখা যায়। এরপর ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে ইউটিউব আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। তবে তখনো এটি তেমন পরিচিতি পায়নি।
ইউটিউবের জনপ্রিয়তা বাড়তে শুরু করে ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে। ওই সময় জনপ্রিয় মার্কিন কমেডি অনুষ্ঠান স্যাটারডে নাইট লাইভ-এর একটি হাস্যরসাত্মক স্কেচ ‘লেজি সানডে’ ইউটিউবে আপলোড করা হয়। ভিডিওটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় এবং ইউটিউবও নজরে আসে বিশ্বের প্রযুক্তিপ্রেমীদের। তবে ইউটিউবই প্রথম ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ছিল না। এর এক বছর আগেই ভিমিও চালু হয়েছিল। কিন্তু ইউটিউবের সহজ ও ব্যবহারবান্ধব ইন্টারফেসের কারণে এটি দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়।
ইউটিউবের জনপ্রিয়তা নজর এড়ায়নি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান গুগলের। ২০০৬ সালের নভেম্বরে ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে ইউটিউব অধিগ্রহণ করে গুগল। এর পর থেকেই ইউটিউব বিশ্বব্যাপী ভিডিও কনটেন্টের প্রধান প্ল্যাটফর্ম হয়ে ওঠে। বর্তমানে ইউটিউব কেবল একটি ভিডিও শেয়ারিং সাইট নয়। এটি বিনোদন, শিক্ষা, সংবাদ ও ব্যবসার অন্যতম প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
সূত্র: ম্যাশেবল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ল য টফর ম ২০০৫ স ল র জনপ র য়
এছাড়াও পড়ুন:
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের নতুন দুই বিচারপতি
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নবনিযুক্ত দুই বিচারপতি শপথ নিয়েছেন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে দুই বিচারপতিকে শপথবাক্য পড়ান।
দুই বিচারপতি হলেন—বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। এই দুই বিচারপতির শপথ নেওয়ার মধ্য দিয়ে আপিল বিভাগে এখন বিচারপতির সংখ্যা দাঁড়াল সাত।
শপথ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা। এ সময় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা, সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তারা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুবকে আপিল বিভাগের বিচারপতি পদে নিয়োগ দেন। গতকাল সোমবার এই নিয়োগসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। এই নিয়োগ শপথগ্রহণের তারিখ থেকে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। ফলে আজ শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দুই বিচারপতির নিয়োগ কার্যকর হলো।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান১৯৬৯ সালের ১ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। ১৯৮৩ সালে তিনি জেলা আদালতের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৮৫ সালে হাইকোর্ট বিভাগের এবং ২০০১ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন তিনি। ২০০৩ সালের ২৭ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান। ২০০৫ সালের ২৭ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে স্থায়ী হন তিনি।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব১৯৬৬ সালের ২৭ মে জন্মগ্রহণ করেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। ১৯৯২ সালে তিনি জেলা আদালতের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৯৪ সালে হাইকোর্ট বিভাগের এবং ২০০২ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন তিনি। ২০০৪ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। এক বছর পর ২০০৫ সালের ২৭ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে স্থায়ী হন তিনি। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব চতুর্থ নারী বিচারপতি, যিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেলেন।
অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল ও নিয়োগসুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগের লক্ষ্যে উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই করে প্রধান বিচারপতি কর্তৃক রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিতে ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ-২০২৫’ শিরোনামে একটি অধ্যাদেশ গত ২১ জানুয়ারি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। এতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ প্রদান প্রক্রিয়ায় প্রধান বিচারপতিকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে অধ্যাদেশ অনুসারে উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই করে সুপারিশের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল নামে একটি স্থায়ী কাউন্সিল থাকবে বলা হয়। আর কাউন্সিলের চেয়ারপারসন হিসেবে থাকবেন প্রধান বিচারপতি। অধ্যাদেশ অনুসারে নির্ধারিতসংখ্যক সদস্যের সমন্বয়ে কাউন্সিল গঠিত হয় ও কাউন্সিলের সভা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে গতকাল জানানো হয়, সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের দুই বিচারপতিকে (বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব) আপিল বিভাগের বিচারপতি পদে নিয়োগ দিয়েছেন।