বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের নাম বদল
Published: 15th, February 2025 GMT
বদলে গেল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের নাম। নতুন নামকরণ হয়েছে জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকা। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এই তথ্য জানানো হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে এই প্রথম কোনো স্টেডিয়ামের নাম বদল করল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্টেডিয়াম ঢাকা স্টেডিয়াম নামে পরিচিত ছিল দীর্ঘদিন। রাষ্ট্রীয় অনেক ক্রীড়া অনুষ্ঠানও এই স্টেডিয়ামে হয়েছে। ক্রিকেট-ফুটবল এখানে ভাগাভাগি করে হতো। ২০০০ সালে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট এখানেই হয়েছিল। এরপর ক্রিকেট এই স্টেডিয়াম থেকে সরে যায়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পর ১৯৯৮ সালে স্টেডিয়ামটির নামকরণ করা হয় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বেশ কিছু স্টেডিয়ামের নাম বদল করেছে। উপজেলা পর্যায়ে ১৫০টি স্টেডিয়ামের নাম বদল হয় ১২ ফেব্রুয়ারি। এগুলো শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নামে পরিচিত ছিল। স্ব স্ব উপজেলার নামে এগুলোর নতুন নামকরণ হয়েছে।
দেশের নানা স্থাপনার মতো ক্রীড়াঙ্গনের অনেক স্থাপনাও বিদায়ী সরকার প্রধানের পরিবারের অনেক সদস্যের নামে ছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্রীড়াঙ্গনেও ওই পরিবারের নামে কোনো স্থাপনার নামকরণ না রাখার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে উপজেলা পর্যায়ে স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তনের পর এবার দেশের মূল স্টেডিয়ামের নাম বদল করা হলো।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ট ড য় ম র ন ম বদল ন মকরণ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ নুরুল ইসলামের নামে বিজিবির সুইমিং কমপ্লেক্স নামকরণ
২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শহীদ কেন্দ্রীয় সুবেদার মেজর নুরুল ইসলামের নামে বিজিবির সুইমিং কমপ্লেক্সের নামকরণ করা হয়েছে। এখন থেকে স্থাপনাটি ‘শহীদ নুরুল ইসলাম সুইমিং কমপ্লেক্স’ নামে পরিচিত হবে।
শহীদ নুরুল ইসলামের ছেলে মো. আশরাফুল আলম হান্নান এই স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিজিবির মহাপরিচালক এবং বাহিনীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের সম্মাননা যেকোনো বাহিনীর সদস্যকে দেশপ্রেমে আরও উদ্বুদ্ধ করবে।
আশরাফুল বলেন, পিলখানায় সেদিন বিডিআরের সদস্যরা হত্যাকাণ্ডের পক্ষে ছিলেন। তারা খুঁজে খুঁজে সেনা কর্মকর্তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করছিল। ওই অবস্থায় কোনো কোনো বিডিআর সদস্য এ হত্যাকাণ্ড সমর্থন করেননি। আবার জওয়ানদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাহস করেননি। কিন্তু এর মধ্যে বিডিআরের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সুবেদার মেজর নুরুল ইসলাম ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধ ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বাঁচাতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন। এর স্বীকৃতি হিসেবে পরে বাংলাদেশ সরকার তাকে শহীদের মর্যাদা দিয়েছে।
স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় দরবারে যোগ দিতে দেরি হয়ে যাবে, তাই নুরুল ইসলাম সকালে নাশতা না খেয়েই বাসা থেকে বের হন। দরবার হলে জওয়ানেরা হত্যাকাণ্ড শুরু করার পর অনেকে যেখানে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছিলেন, সেখানে কেন্দ্রীয় সুবেদার মেজর নুরুল ইসলাম এগিয়ে যান সশস্ত্র জওয়ানদের প্রতিরোধ করতে। বিদ্রোহীদের বাধা দেওয়ায় তাকে মশারি স্ট্যান্ড দিয়ে পিটিয়ে ও ব্রাশফায়ার করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
শহীদ নুরুল ইসলামের ছেলে বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত অন্যান্যের মতো আমার বাবার মরদেহ গণকবর থেকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়। পরে ২০০৯ সালের ৪ মার্চ লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরলক্ষ্মী গ্রামের বাড়িতে তার বাবার মরদেহ দাফন করা হয়। পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে নুরুল ইসলামের এ বীরত্বের কথা। হত্যাকাণ্ডের ছয় মাস পর একমাত্র বিডিআর সদস্য কেন্দ্রীয় সুবেদার মেজর নুরুল ইসলাম রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদের মর্যাদা পান। ২০০৯ সালের ২০ আগস্ট নুরুল ইসলামের কবরে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয় এবং পরবর্তীতে বিজিবির সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’ ভূষিত হন।
তিনি আরও বলেন, নিষ্ঠাবান এ সুবেদার মেজর কর্মজীবনে চারবার ডিজি পদক পেয়েছেন। পাশাপাশি অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে সরকারি খরচে পবিত্র হজ্জ পালনের সুযোগ দিয়েছিলেন।