ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় নিজ বাড়ির শোবার ঘর থেকে এক নারীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। একই ঘরে ঘুমিয়েছিলেন তার স্বামী, একমাত্র ছেলে ও এক নাতি। পুলিশ বলছে, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার সকালে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের আনন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নাসিমা বেগম (৫৫) আনন্দপুর গ্রামের মিজান মোল্লার স্ত্রী। এ ঘটনায় তার ছেলে সিয়াম আটক হয়েছেন। নাসিমা-মিজান দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে সিয়াম সবার ছোট।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাতে একই ঘরে নাসিমা তার স্বামী, ছেলে সিয়াম ও এক নাতিকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোরে মিজান মোল্লা মসজিদে নামাজ পড়তে যান। ৭টার দিকে ঘর থেকে চিৎকার চেচামেচি শুনে আশপাশের লোকজন এসে দেখেন, খাটের ওপর নাসিমার রক্তাক্ত মরদেহ।

জানা গেছে, সিয়াম মানসিকভাবে অসুস্থ। ছেলেকে চোখে চোখে রাখতেন মা। বাইরে যেতে দিতেন না।

নাসিমার স্বামী মিজান মোল্লা জানান, তিনি সকাল ৬টার দিকে মসজিদে যান। নামাজ পড়ে হাঁটাহাঁটির সময় খবর পান, তার স্ত্রীকে কে বা কারা কুপিয়েছে। বাড়িতে এসে বিছানায় রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি জানান, তার ছেলে মানসিকভাবে অসুস্থ। তিনি খুন করতে পারেন না।

একই মন্তব্য করে সিয়ামের বোন নাদিরা বেগম জানান, তার ভাই বোকাসোকা। তিনি ২০ টাকার নোটও চেনেন না। তিনি কীভাবে মাকে খুন করবেন। এটি তার বিশ্বাস হয় না। অন্য কেউ হত্যা করেছে। সকালে খবর পেয়ে তিনি স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে এসেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, তিনিও সকালে খবর পেয়ে সিয়ামদের বাড়িতে যান। সিয়ামের স্বজনেরা দাবি করছিলেন, জমি নিয়ে প্রতিবেশী কামরুল ইসলাম শাহীন ও এমদাদুলদের সঙ্গে তাদের মামলা চলছে। এ কারণে প্রতিবেশিরা ঘটনাটি ঘটাতে পারেন। তবে সিয়ামের ভাগনে সাত বছরের ওমর ফারুক বলছে, তার মামাই তার নানিকে আঘাত করেছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মুছা মিয়া বলেন, নাসিমার নাতির কথাবার্তায় বোঝা যাচ্ছে, ছেলেই মাকে হত্যা করেছেন। সিয়াম কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধী। তিনি প্রায়ই বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেন। বারবার তাকে ফিরিয়ে আনা হতো।

আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছমিউদ্দিন বলছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সিয়াম স্বীকার করেছেন, তিনি বটি দিয়ে কুপিয়ে মাকে হত্যা করেছেন। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য়

এছাড়াও পড়ুন:

আজহারির তাফসিরে স্বর্ণালঙ্কার চোর চক্রের ৮ নারী আটক

চাঁপাইনবাবগঞ্জে জনপ্রিয় ইসলামিক আলোচক ড. মিজানুর রহমান আজহারীর তাফসির মাহফিলে স্বর্ণালঙ্কার চোর চক্রের ৮ নারী সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। 

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের লালাপাড়া সংলগ্ন একটি আম বাগানে তাফসির মাহফিল থেকে তাদের আটক করা হয়। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইস উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, “তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।”

আটককৃত নারীদের মধ্যে হবিগঞ্জ জেলার ৫ জন, নরসিংদী জেলার ১ জন, সাভারের ১ জন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ১ জন। তবে তাদের নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ড. মিজানুর রহমান আজহারীর ইসলামিক আলোচনা শোনার জন্য মহিলাদের আলাদাভাবে বসার ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে নারী চোর চক্রের সদস্যরা হিজাব ও বোরকা পরে অবস্থান নিয়েছিল। ইসলামিক আলোচনা চলাকালে ওই চক্রের সদস্যরা কয়েকজনের গলায় হাত দিয়ে স্বর্ণালঙ্কার চুরির চেষ্টা করছিল। তখনই তাদের একজনকে আটক করে স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে পুলিশে সপোর্দ করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের খুঁজে বের করে আটক করে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ওসি রইস উদ্দিন বলেন, “আজহারী সাহেবের তাফসীরে স্বর্ণালংকার চোরচক্রের ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।”

তিনি আরো বলেন, “তাফসির মাহফিলে মোবাইল চুরির ঘটনায় ১৩ জন থানায় জিডি করেছেন। তাদের মোবাইল উদ্ধারে কাজ করছে পুলিশ।”

ঢাকা/শিয়াম/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ