চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্বে শক্তিশালী ভারত, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লড়বে বাংলাদেশ। সেমিফাইনালে যেতে হলে অন্তত দুই ম্যাচে জয় পেতে হবে টাইগারদের। তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ও প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তার বিচারে সেই পথ সহজ হবে না।

অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ক্রিকেটার রিকি পন্টিং মনে করেন, এবারের আসরে বাংলাদেশের ভালো করার সম্ভাবনা খুবই কম। আইসিসির এক পডকাস্টে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কঠিন হতে চলেছে। দলটিতে সেরকম মান আছে বলে মনে হয় না, বিশেষ করে অন্য দলের সঙ্গে তুলনা করলে। উপমহাদেশে খেলা হলেও একেবারে ঘরের মাঠের মতো কন্ডিশন পাবে না তারা, ফলে ভুগতে হবে।'

তবে পন্টিংয়ের এই মতামতের সঙ্গে একমত নন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম। গণমাধ্যমে তিনি বলেন, 'গত কয়েক মাসে বাংলাদেশ দল অনেক উন্নতি করেছে, যা হয়তো পন্টিং দেখেননি বা অনুমান করতে পারেননি। কিছু জায়গায় আমরা রান তুলতে পারছিলাম না, আত্মবিশ্বাসের অভাব ছিল—সেগুলোতে পরিবর্তন এসেছে। এবার মাঠে পার্থক্য দেখা যাবে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলার সুযোগ হলে বাংলাদেশ কঠিন সময় উপহার দেবে তাদের।'

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ নিজেদের অভিযান শুরু করবে ২০ ফেব্রুয়ারি, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ড ও ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে শান্তবাহিনী।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘বাংলাদেশি হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে আমি গর্ববোধ করি’

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা কূটনীতিক হিসেবে চাকরি করাকালীন কোনো এক বিদেশি কূটনীতিক তার শারিরীক গঠন ও চেহারার আকৃতি দেখে তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে নয়, বরং ভিন্ন দেশের নাগরিক হিসাবে আখ্যায়িত করতে চাইলে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা তাতে প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, “আমি নিজেকে বাংলাদেশি হিসাবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি।”

রবিবার বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ভিন্টেজ কনভেনশন হলে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মাতৃভাষার চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা এমন স্মৃতিচারণ করেন।

সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “আমি ঐ কূটনীতিকের এমন প্রশ্নের আলোকে আরো বলেছিলাম, যদি আমাদের জীবনে ১৯৫২ ও ১৯৭১ না আসতো তাহলে আমি এখন তোমাদের কেরানি হয়ে থাকতাম। স্বাধীনতা যুদ্ধ হওয়ার কারণেই আজ আমি তোমাদের মতো কূটনীতিক হতে পেরেছি। তাই আমি ধন্য যে আমি বাংলাদেশি।” 

উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমাদের দায়বদ্ধতার পাশাপাশি সুন্দর মন থাকতে হবে। সবারই নিজের এলাকার প্রতি মায়া থাকতে হবে। সবাইকে আঞ্চলিক প্রীতির মুহূর্তগুলো স্মরণে রাখতে হবে। তবেই আমাদের স্বদেশ প্রেমবোধের পূর্ণতা পাবে।”

সুপ্রদীপ চাকমা আরো বলেন, “আমাদের প্রধান উপদেষ্টা প্রায়ই বলেন লোক দেখানো কোনো কিছু করে নয় বরং আমাদেরকে মনেপ্রাণে ভালোবাসা, সৌন্দর্য, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দিয়ে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে। আমরা সেই লক্ষ্যই কাজ করে যাচ্ছি।”

উপদেষ্টা মাতৃভাষার চলচ্চিত্র নিয়ে সুন্দর এমন উৎসব এর আয়োজন করার জন্য এর আয়োজকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

এ উৎসবে থাকছে সর্বমোট ১৫টি চলচ্চিত্র। এর মধ্যে চাকমা, মারমা, ম্রো বম, গারো ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র রয়েছে। এ চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে দেশে প্রথম বারের মতো নির্মিত হয়েছে ম্রো ভাষার চলচ্চিত্র ‘ক্লোবং ম্লা’ বাংলায় নামকরণ করা হয়েছে গিরিকুসুম। থাকছে খেয়াং ভাষায় দেশে প্রথম বারের মতো নির্মিত চলচ্চিত্র ‘খেতসু’ বা প্রেয়সী। বম ভাষায় দেশে প্রথম বারের মতো নির্মিত চলচ্চিত্র মুনখাত দুত হেন যার বাংলা নাম বন্ধন। নতুন এই তিনটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন ডা. মং উষা থোয়াই এবং পরিচালনা করেছেন প্রদীপ ঘোষ।

বাংলা ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ সিনেমা ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের নির্মিত ‘রক্তকরবীর খোঁজে নন্দিনী’। এ চলচ্চিত্রে নন্দিনী চরিত্রে অভিনয় করেছে অবনী মিঠু। রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের পোস্ট মাস্টার গল্প অবলম্বনে নূর আবসার প্রযোজিত ও শাঁওলি মজুমদার পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘ঘরে ফেরা’। মৃত্তিকা রাশেদ পরিচালিত কালারস অব হোপ। উৎসবে থাকছে নজমুল মুহাম্মদ পরিচালিত নেকলেস, এস এম শাফিনুর আলম পরিচালিত  আচিক ঐক্য, রাশেদুল ইসলাম রনি পরিচালিত নো ল্যান্ড’স টক, মোবারক হোসেন পরিচালিত  পৈতৃক ভিটা, ফিদেল দ্রং পরিচালিত ছাতা, পার্থ ফোলিয়া পরিচালিত আরো কিছু দিন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ, এ বি এম শামসুল হুদা, ডা. দিবালোক সিংহ, ডা. মুশতাক হোসেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বান্দরবান জেলার চিকিৎসক এবং চলচ্চিত্র প্রযোজক ডা. মং উষা থোয়াই। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টায় শেষ হবে উৎসব।

ঢাকা/হাসান/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ