ইসলামী যুব আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার নব কমিটির শপথ গ্রহণ
Published: 15th, February 2025 GMT
ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলার নবগঠিত জেলা কর্মপরিষদের শপথ গ্রহণ ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা শাখার সভাপতি মুহাম্মাদ মামুনুর রশীদ এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ হাসান।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ফতুল্লার শিবু মার্কেটস্থ আই.জে.এ.বি মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ এবং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, "যুবকরা যেকোনো দেশের মূল চালিকাশক্তি। তারা যদি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে দেশ ও জাতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যায়। জুলাই পরবর্তী এ দেশের পট পরিবর্তনে যুবকদের ভূমিকা ছিল অপরিসীম।
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দেশ পরিচালনা করলেও তারা বারবার দেশের সম্পদ লুটপাট করেছে এবং মানুষের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। তাই দেশের মানুষ ইসলামের সোনালী যুগের ন্যায় ন্যায়বিচারভিত্তিক শাসন দেখতে চায়, যা আগামীর যুবকদের আকাঙ্ক্ষা।"
বক্তব্য শেষে প্রধান অতিথি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলার ২০২৫-২৬ সেশনের জন্য নবগঠিত জেলা কর্মপরিষদের দায়িত্বশীলদের নাম ঘোষণা করেন ও তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান।
নবগঠিত ২৫ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কর্মপরিষদ হলো: সভাপতি: মুহাম্মাদ মামুনুর রশিদ, সহ-সভাপতি: মাওলানা আব্দুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক: ডা.
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ দ্বীন ইসলাম এবং ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সদ্য সাবেক সভাপতি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মাদ জোবায়ের হোসাইন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মুহাম্মাদ আলীসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ল দ শ ন র য়ণগঞ জ জ ল উপস থ ত ছ ল ন ইসল ম অন ষ ঠ হ স ইন ল আম ন
এছাড়াও পড়ুন:
পোশাকশ্রমিকদের ঈদভাবনা: নেওয়ার চেয়ে পরিবারকে দিতে পারাই বেশি আনন্দের
বাবা অর্থনৈতিকভাবে খুব সচ্ছল ছিলেন না। তবু ঈদ এলে নতুন জামা দেওয়ার চেষ্টা করতেন। কোনো কোনো সময় তা-ও পারতেন না। এ জন্য মন খারাপ হতো। এখন বুঝতে পারেন, যতটা না তাঁদের মন খারাপ হতো, সন্তানদের নতুন জামা দিতে না পারায় মা–বাবার বেশি খারাপ লাগত। আসলে নেওয়ার চেয়ে পরিবারকে দিতে পারার মধ্যেই বেশি আনন্দ। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারাটাই বেশি আনন্দের।
কথাগুলো বলছিলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার একটি ডাইং কারখানায় সহকারী সুপারভাইজার মো. জুয়েল (৩০)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ডে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। নোয়াখালীর চর আলেকজান্ডারে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন।
ঈদযাত্রার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে জুয়েল ফিরে যান শৈশবে। তিনি জানান, শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে যখন উপার্জন করতে শুরু করেছেন, তখনই তাঁর ঈদের উপলব্ধি বদলে গেছে। শৈশবে ঈদের উপহার না পেলে যতটা যন্ত্রণা হতো, বড় হওয়ার পর পরিবারকে পছন্দমতো দিতে না পারলে তার চেয়ে বেশি মন খারাপ হয়।
জুয়েলের ঈদভাবনার কথা শোনার সময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর সহকর্মী মো. রাহীম। জুয়েলের আলাপে মাথা নাড়িয়ে সায় দিচ্ছিলেন তিনি। মা–বাবা, চাচা-ভাতিজার জন্য ঈদের উপহার নিয়ে তিনি নরসিংদীতে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। অর্থনৈতিক দৈন্যদশায় উচ্চমাধ্যমিক শেষ করতে না পারা রাহীম জুয়েলের সঙ্গে ফতুল্লার মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডাইং কারখানায় অপারেটর সহকারীর কাজ করেন।
রাহীম বলেন, তাঁর কাছে এখনো ঈদ মানে হাতে মেহেদি দেওয়া। মা–বাবাকে সালাম করে তাঁদের কাছ থেকে সালামি নেওয়া। তাই প্রতিবারই কষ্ট করে হলেও গ্রামে ঈদ করতে যান।
তৈরি পোশাক কারখানার এই দুই শ্রমিক জানান, মার্চ মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের কারখানা ছুটি হয়েছে। সব মিলিয়ে আট দিনের ছুটি পেয়েছেন। সময়মতো বেতন, বোনাস ও লম্বা ছুটি এবার তাঁদের ঈদের আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে।
তবে নিজেরা বেতন-বোনাস পেলেও অনেক শ্রমিক বেতন না পাওয়ায় তাঁদের এখনো আন্দোলন করতে হচ্ছে বলে জানান। জুয়েল বলেন, ‘সারা বছর আমরা নানাভাবে কষ্ট করে দিন কাটাই। আশা থাকে ঈদ-পার্বণে পরিবার নিয়ে আনন্দ-উৎসব কাটানোর। পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর। কিন্তু যখন বেতন–বোনাস হয় না, তখন শ্রমিকদের আর ঈদ বলতে কিছু থাকে না।’
জুয়েল ও রাহীম জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে গাড়ির টিকিট পেতে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে নরসিংদীর টিকিটের জন্য ১০ টাকা ও নোয়াখালীর জন্য প্রতিটি টিকিটে ৫০ টাকা বেশি দিতে হয়েছে তাঁদের।
বৃহস্পতিবার বিকেলের পর সাইনবোর্ড ও শিমরাইল মোড়ে আসা অধিকাংশ শ্রমিকই জুয়েল, রাহীমের মতো নারায়ণগঞ্জের তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। ঈদের লম্বা ছুটি পেয়ে তাঁরা প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে ফিরছেন। পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোটাই তাঁদের ঈদের আনন্দ।