Prothomalo:
2025-02-22@09:32:12 GMT

সুরা ইয়াসিনের সার কথা

Published: 15th, February 2025 GMT

সুরা ইয়াসিন পবিত্র কোরআনের ৩৬তম সুরা। সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়। এর ৫ রুকু, ৮৩ আয়াত। প্রথম দুটি অক্ষর থেকে এই সুরাটির নাম। মহানবী (সা.) এই সুরাকে পবিত্র কোরআনের হৃৎপিণ্ড বলে বর্ণনা করেছেন। আল্লাহর একত্ব ও মহানবী (সা.)-এর রিসালাত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। অংশীবাদের সমালোচনা, পৌত্তলিকদের অমরতা, অবিশ্বাসীদের কূটতর্কের উল্লেখ করে ইসলামের সত্যতা ও কিয়ামতের পুনরুত্থানের বর্ণনা রয়েছে। মহানবী (সা.

) বলেন, যে ব্যক্তি নিয়মিত এই সুরা পাঠ করবে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা উন্মুক্ত থাকবে। রোদ-তাপ ও বিপদ-আপদ নিরসন, মুমূর্ষু ব্যক্তির মৃত্যুযন্ত্রণা লাঘব এবং মৃত ব্যক্তির শান্তির জন্য তার কবরের পাশে এ সুরা পাঠ করা হয়।

শান্তিপূর্ণ মৃত্যুর জন্য এ সুরাটি অনেকে পড়ে থাকেন। এ সুরা আমল করার মধ্যে রয়েছে প্রকৃত পূণ্য। সুরার শুরুতে আল্লাহ রাসুল (সা.) রিসালাতের সত্যতার ব্যাপারে কোরআনে শপথ করেছেন। এরপর কুরাইশ কাফেরের আলোচনা করা হয়েছে, যারা কুফর ও গোমরাহ করত, তাদের জন্য রয়েছে শাস্তি। এরপর এক জনপদের আলোচনা করা হয়েছে, যারা একে একে তিনজন নবীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে চেয়েছ। আল্লাহ সেই জনপদের হেদায়েতের জন্য নবী পাঠানো সত্ত্বেও তারা হেদায়েতের পথে চলেনি। তারা একে একে তিনজন নবীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে। তখন এক ব্যক্তি দৌড়ে সে সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে আসেন। মুফাসসিররা বলেন, তাঁর নাম ছিল হাবিবে নাজ্জার। তিনি বলেন, নবীদের পীড়ন করলে আল্লাহর আজাব নেমে আসতে পারে। তিনি তাঁর সম্প্রদায়কে সতর্ক করে তাদের নবীদের অনুসরণ করার পরামর্শ দেন। এর পর সবার সামনে নিজের ইমান আনার ঘোষণা দিলে সবাই তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে হত্যা করে। মৃত্যুর পর তিনি জান্নাতে প্রবেশ করেন।

আরও পড়ুনসুরা আহকাফের সারকথা২৮ নভেম্বর ২০২৩

আল্লাহর প্রতিশ্রুত জান্নাতের নেয়ামত প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পাওয়ার পর তাঁর মুখ থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেরিয়ে আসে, আল্লাহ যে আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। আমাকে সম্মানিত ও সৌভাগ্যবান করেছেন, আমার সম্প্রদায় যদি তা জানত! (তাফসিরে ইবনে কাসির)

আল্লাহর অস্তিত্ব, একত্ব এবং সৃষ্টির বিষয় কোরআনে উল্লেখ হয়েছে। বৃষ্টি ঝরিয়ে মাটিকে সতেজ রাখা, দিন–রাত ও চন্দ্র-সূর্যের অস্তিত্ব, সমুদ্রে চলাচলরত জাহাজ ও নৌকা ইত্যাদি জাগতিক সচলতা হিসেবে আল্লাহ্‌ যেসব নিয়ামত দেয়েছেন, তার বিবরণ এতে রয়েছে। এ সুরার বিষয়বস্তু: মৃত্যুর পর পুনরুত্থান। এ সুরায় বলা হয়েছে, ‘আমি মৃতকে জীবিত করি আর লিখে রাখি ওরা যা পাঠায় ও ওদের যে পায়ের চিহ্ন রেখে যায়। এক সুস্পস্ট গ্রন্থে আমি সব সংরক্ষণ করে রেখেছি।’ (আয়াত: ১২)

নবীদের প্রতি যারা ইমান এনেছে এবং নবীদের যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে চেয়েছে—উভয় দলের দৃষ্টান্ত উপস্থাপন এবং তাদের প্রতিদানও এতে বর্ণনা করা হয়েছে। যুক্তি দিয়ে এতে মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের বর্ণনা করা হয়েছে। সুরা ইয়াসিনে রয়েছে মোমিন ও কাফিরদের প্রতি প্রতিদানের কথা এবং জাগতিক নিদর্শন নিয়ে চিন্তা করে আল্লাহ যে একত্ব ও অদ্বিতীয় তার নিশ্চয়তা বিধান।

আরও পড়ুনরুমির মুদিদোকানি ও তোতা পাখির গল্প২৮ নভেম্বর ২০২৩

যে রাসুলদের প্রতি ইমান আনে এবং তাদের সত্যায়ন করে, সে স্বজাতিকে আল্লাহর পথে আহ্বান করে এবং জীবনে-মরণে তাদের কল্যাণ কামনা করে। বিশ্বাসীরা আরেক বিশ্বাসীতে সহায়তা করে। একে অপরের মাধ্যমে শক্তিশালী হয়।

বিশ্বজগতের সৃষ্টি, বিন্যাস ও শৃঙ্খলা অবিশ্বাস্য সূক্ষ্ম ও নিখুঁত। এর উদাহরণ অগণিত। এমন সময় কিয়ামত এসে হানা দেবে, যখন মানুষ বাজারে কেনাকাটার মতো দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ব্যস্ত থাকবে। কোরআন থেকে কেবল জীবিতরাই উপকৃত হতে পারে।

শিঙায় দুটি ফুৎকারের কথা আল্লাহ উল্লেখ করেছেন: প্রথম ফুৎকারে পৃথিবীর সবাই ভীত-প্রকম্পিত হবে, সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে এবং আল্লাহ যাদের ইচ্ছা করেন, তারা ছাড়া সবাই মারা যাবে।

আল্লাহ বলেন, ‘আর যেদিন শিঙায় ফুৎকার দেওয়া হবে, সেদিন আসমানমণ্ডলী ও জমিনের সবাই ভীত-বিহ্বল হয়ে পড়বে, তবে আল্লাহ যাদের চাইবেন তারা ব্যতীত এবং সকলেই তাঁর নিকট আসবে বিনীত অবস্থায়। আর (কিয়ামতের দিন) শিঙায় ফুৎকার দেওয়া হবে, তখন যাদের আল্লাহ ইচ্ছা করেন, তারা ব্যতীত আসমানমণ্ডলী ও জমিনের সবাই।’

আরও পড়ুনজান্নাতের সুসংবাদ২৭ নভেম্বর ২০২৩

এ সুরায় রয়েছে রাসুল হিসেবে মুহাম্মদ (সা.) সত্যতা এবং তাঁকে পাঠানোর উদ্দেশ্য। মানুষের সমস্ত কর্ম ও কর্মের প্রভাব এতে লেখা রয়েছে। অতীতে অনেকেই রাসুলদেরও প্রত্যাখ্যান করেছে, কিন্তু পুনরুত্থান ও বিচার অনিবার্য। মানুষের কল্যাণে চাঁদ ও সূর্যের জন্য আল্লাহ কক্ষপথ ও অক্ষপথ নির্ধারণ করেছেন। কিয়ামত সংঘটিত হবে একটি প্রচণ্ড শব্দে।

দ্বিতীয়বার সিঙায় ফুঁ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ পুনরুত্থিত হবে। মানুষের পার্থিব জীবনের কর্মকাণ্ডের ন্যায্য বিচার করা হবে। সেদিন পূর্ণবানদের থেকে পাপীদের আলাদা করা হবে। কারণ শয়তান সম্পর্কে মানুষকে দুনিয়াতেই সতর্ক করা হয়েছিল। পাপীদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গও সেদিন তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে।

আরও পড়ুনসুরা লোকমানের উপদেশগুলো২৬ নভেম্বর ২০২৩

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আল ল হ য কর ছ ন র জন য ক রআন

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতি-প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণ

একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

রীতি অনুযায়ী রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধান উপদেষ্টার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে একুশের কর্মসূচি শুরু হয়।

রাষ্ট্রপতি ১১টা ৫৯ মিনিটে শহীদ মিনারে আসেন। এ সময় তাকে অভ্যর্থনা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান, একুশে উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান এবং সদস্যসচিব সাইফুদ্দীন আহমেদ।  

আরো পড়ুন:

নতুন বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে সাংবাদিকদের প্রতি রাষ্ট্রপতির আহ্বান

কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্তের অনুমতি দিলেন রাষ্ট্রপতি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রাত ১২টা ১০ মিনিটে শহীদ মিনারে আসেন। তাকেও উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান, একুশে উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান এবং সদস্যসচিব সাইফুদ্দীন আহমেদ অভ্যর্থনা জানান। 

প্রধান উপদেষ্টা রাত ১২টা ১৩ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।  

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা রাত ১২টা ১৬ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক ও হাইকমিশনাররা এরপর পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।  

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর তিন বাহিনীর প্রধান শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শুরুতে সেনাবাহিনীর পক্ষে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ১২টা ২২ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান। বিমানবাহিনীর পক্ষে চিপ এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।  

এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) নতুন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।

এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা শ্রদ্ধা জানান। 

পরে ভাষাসৈনিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানান।

একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার রাজপথ ও দেয়াল বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। চারুকলার শিক্ষার্থীরা রাত-দিন খেটে রং-তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলেছেন প্রতিবাদের নানা ভাষা। শহীদ মিনারের বেদি, কালো রাজপথ, দেওয়াল হেসে উঠছে বর্ণিল আল্পনায়।

ঢাকা/হাসান/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫ হত্যার ১৫ বছর পর একই স্থানে ৩ জনকে গুলি করে হত্যা 
  • আদালতের ভেতরে ঢুকে গ্যাংস্টারকে গুলি করে হত্যা
  • আশির দশকের বিয়ে ‘তেলাই থেকে ঘুরানি’
  • কুয়েতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
  • আফগানিস্তানকে ৩১৬ রানের টার্গেট দিলো দ. আফ্রিকা
  • আইসিসির মঞ্চে অভিষেক সেঞ্চুরিতে ভাস্বর রিকেলটন
  • নিখোঁজ সন্তানের খোঁজ চান মা-বাবা
  • সৌরভ গাঙ্গুলীর বায়োপিকের নায়ক কে? জানালেন নিজেই
  • কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানুষের ঢল
  • শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতি-প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণ