নাটোরের লালপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক বিএনপি নেতাসহ ৩ জনকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে সকাল থেকে কয়েক দফা সড়ক অবরোধ করেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা।

শনিবার সকাল ৯টা থেকে লালপুর থানার সামনের ঈশ্বরদী-বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আটকদের মুক্তির ব্যাপারে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দের সমঝোতায় সাময়িকভাবে অবরোধ তুলে নেওয়া হলেও দুপুর ১টা থেকে আবারো মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা।

দফায় দফায় এই অবরোধে লালপুর ঈশ্বরদী ও লালপুর বাঘা সড়কে চলাচলকারী শত শত যানবাহন আটকা পড়লে ব্যাপক জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।

আটকরা হলেন লালপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালপুর কলোনি গ্রামের মৃত আনেজের ছেলে খোকন খাঁ (৫০), তার দুই ছেলে ছাত্রদল কর্মী ফিরোজ (৩০) ও অনিক (২৪)।

এর আগে শুক্রবার গভীর রাতে লালপুর কলোনীতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, চাঁদাবাজির অভিযোগে শুক্রবার গভীর রাতে সেনাবাহিনী লালপুর কলোনীতে অভিযান চালিয়ে খোকন ও তার দুই ছেলেকে আটক করে লালপুর থানায় হস্তান্তর করে। পরে সকালে তাদের মুক্তির দাবিতে প্রথমে লালপুর থানার সামনে বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হন। পরে ঈশ্বরদী-বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিলে তারা পুনরায় লালপুর ত্রিমোহনী সড়কে অবস্থান নেন। পরে সেখানে গিয়েও পুলিশ অবরোধকারীদের সরিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব হারুন রশীদ পাপ্পু স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি। একটি ভুল বোঝাবুঝির কারণে সেনাবাহিনী তাদের আটক করেছে। আমরা তাদের মুক্তি চাই।

লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগে সেনাবাহিনী রাতে তিনজনকে লালপুর থানায় হস্তান্তর করেছে। তাদের মুক্তির দাবিতে সমর্থকরা সড়ক অবরোধ করেছে। পুলিশ তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন ত সড়ক অবর ধ ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের আগে তরল ও গুঁড়া দুধের দাম বাড়তি

ঈদের আগে দাম বেড়েছে মিল্ক ভিটার তরল দুধের। গত সপ্তাহে মিল্ক ভিটার প্রতি লিটার দুধে ১০ টাকা দাম বাড়ানো হয়। খুচরায় কোথাও কোথাও গুঁড়া দুধের দামও বাড়তি। এ ছাড়া ঈদের দিনের পণ্য হিসেবে পরিচিত সেমাই, নুডলস, পোলাওয়ের চাল প্রভৃতি আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে।

ঈদের আগমুহূর্তের বাজারে আরও বেড়েছে মুরগির দাম। গরু ও খাসির মাংসের দামও কিছুটা বাড়তি। এ ছাড়া লেবু, শসা ও বেগুনের দাম আগের মতোই বেশি রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের তালতলা বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রতি লিটার তরল দুধ ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সর্বশেষ ২১ মার্চ রাষ্ট্রীয় দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড (মিল্ক ভিটা) তরল দুধের দাম বাড়ায়। তাতে আধা লিটার প্যাকেটের দুধের দাম ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫৫ টাকা এবং এক লিটার প্যাকেটের দুধের দাম ৯০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০০ টাকা করা হয়েছে। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আড়ং ও প্রাণ একইভাবে তাদের প্রস্তুতকৃত তরল দুধের দাম বাড়িয়ে ১০০ টাকা করেছিল।

অন্যদিকে বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি গুঁড়া দুধ ৮২০ থেকে ৮৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যেমন বাজারে এখন প্রতি কেজি ডিপ্লোমা দুধ ৮৬০ টাকা, ফ্রেশ দুধ ৮১০–৮২০ টাকা ও স্টারশিপ ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানান, দুই মাস আগে খুচরা পর্যায়ে গুঁড়া দুধের দাম কেজিতে ৩০ টাকার মতো বাড়িয়েছিল কোম্পানিগুলো। ডিপ্লোমা, ডানো, ডানো ডেইলি পুষ্টি, ফ্রেশ, মার্কস, স্টারশিপসহ প্রায় সব কোম্পানিই তখন গুঁড়া দুধের দাম বাড়ায়। যদিও রোজার মধ্যে কোম্পানিগুলো গুঁড়া দুধের দাম বাড়ায়নি বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা। তবে কয়েকজন ভোক্তা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, পাড়া-মহল্লায় কোথাও কোথাও খুচরা দোকানে গুঁড়া দুধের দাম আগের চেয়ে কিছুটা বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা।

ঈদের দিনের পণ্য হিসেবে পরিচিত সেমাই, নুডলস, পোলাওয়ের চাল প্রভৃতি অনেকটা আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। যেমন খুচরায় প্যাকেটজাত ২০০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই ৪৫ টাকা ও সাধারণ লম্বা সেমাই ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা সেমাইয়ের দাম আরও পাঁচ টাকা কম। পোলাওয়ের চাল ১০০-১৩০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। এ ছাড়া বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ আগের চেয়ে বেড়েছে। তবে বিক্রেতারা জানান, সব কোম্পানি নিয়মিত সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে না। আর বিভিন্ন ধরনের চালের বাড়তি দাম এখনো কমেনি।

বেড়েছে মুরগির দাম

ঈদের আগমুহূর্তে বাজারে আরও বেড়েছে মুরগির দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লারের দাম কেজিতে ৩০ টাকার মতো বেড়েছে। তাতে বাজারভেদে গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। আর এক সপ্তাহের ব্যবধানে সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ৪০ টাকার মতো বেড়েছে।

গতকাল প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকায়। তবে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম কম রয়েছে। বর্তমানে ঢাকার বাজারগুলোতে এক ডজন ডিম ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়। পাড়া-মহল্লায় এ দাম কিছুটা বেশি।

এদিকে বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছাগলের মাংসের দাম আরও ১০০ টাকা কম। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ঈদের জন্য বাজারে মুরগি ও গরুর মাংসের

চাহিদা বেড়েছে; দামও কিছুটা বাড়তি। এ ছাড়া কয়েক ধরনের মাছের দামও বেড়েছে। যেমন চাষের চিংড়ি মাছের দাম কেজিতে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়ে এখন ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চলতি বছর রোজার শুরু থেকেই লেবু, শসা ও বেগুনের দাম চড়া রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৮০ থেকে ১২০ টাকা, শসা ৮০ থেকে ১০০ টাকা ও প্রতি হালি লেবু ৪০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সবজি আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে।

রাজধানীর মগবাজারের বাসিন্দা রাইসুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোজার মধ্যে বেশির ভাগ পণ্যের দাম নিয়ে আমরা স্বস্তিতে ছিলাম। তবে চাল, লেবু, শসার বাড়তি দাম আমাদের কষ্টে রেখেছে। আর এখন ঈদের আগে মুরগির দামও বাড়ল।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ