আগে স্থানীয় নির্বাচনের মানে হলো রাজনীতিকদের অবিশ্বাস করা: রিজভী
Published: 15th, February 2025 GMT
স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে আয়োজনের দাবির বিরোধিতা করে বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে দেওয়া মানে হলো রাজনীতিবিদদের অবিশ্বাস করা। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সরকারের অধীনেও যে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে, এটা দেখার জন্য তো আগে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে।
আজ শনিবার দুপুরে মেঘনা উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার কারণটা কি, সে প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, ‘কেন এই কথাগুলো সামনে আসছে, আমি জানি না। তাহলে কি যারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছে, শেখ হাসিনা যাদের দমন-পীড়ন করেছে, তাদের প্রতি কি আপনাদের বিশ্বাস নেই?’ অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রথমে আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করা, তার জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগে দিতে হবে। পরবর্তী পর্যায়ে সব নির্বাচন হবে। রাজনৈতিক সরকারের অধীনেও যে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে, এটা দেখার জন্য তো আগে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে।’
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘এই দানব টিকে থাকলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, ইজ্জত-সম্মান কিছুই থাকত না। ছাত্র-জনতা ও মাসুম বাচ্চারা ঝাঁপিয়ে পড়ার কারণেই আজ আমরা মুক্তভাবে নিশ্বাস নিতে পারছি, কিছুটা স্বস্তিতে জীবনযাপন করতে পারছি, গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। এখন আমাদের প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং চর্চা করার জন্য কাজ করতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়ে রিজভী বলেন, জনগণের প্রত্যাশা এই সরকার জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার কারণটা কী, আমি জানি না। তার মানে কি তারা বিশ্বাস করছেন না যে, রাজনৈতিক দলের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন সুষ্ঠু হবে? তাহলে তো অবিশ্বাস থেকেই গেল, যে অবিশ্বাস শেখ হাসিনা সৃষ্টি করেছিলেন।’
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়া, মোস্তাক আহমেদ প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অব শ ব স র জন ত ক র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমাদের রাজনীতিতে ভুল ছিল বলেই চব্বিশ ঘটেছে’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ছিলেন। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে কখনো আপস করেননি। দুঃসময়েও তিনি গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের পক্ষে দৃঢ়তার সঙ্গে অবস্থান নিয়েছিলেন। দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে তিনি সংগ্রাম করেছিলেন। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিতে হবে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় সমাজকল্যাণ ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এভাবেই স্মৃতিচারণা করেন। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সবার ভেতর আলো জ্বেলেছেন—এমন মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এই দেশ স্বাধীন হলো। কিন্তু এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। তাঁদের সুস্থ করতে পারিনি। মুক্তিযোদ্ধাদের খালি হাতে খালি পায়ে গ্রামে ফিরে যেতে হয়েছিল। দেশটাও গত ৫০ বছরে গড়েই উঠল না। গণতন্ত্র, সাম্য, সমাজতন্ত্র, ন্যায়বিচার—সবই আড়ালে থেকে গেল। আমাদের রাজনীতি নিশ্চয় ত্রুটিপূর্ণ ছিল। সেই রাজনীতি ভুল ছিল বলেই চব্বিশ ঘটেছে।’
শারমীন এস মুরশিদ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে সংস্কৃতি বিরাজমান, সেটির পরিবর্তন ঘটেনি। তরুণদের এই শিক্ষাটা মাথায় রাখতে হবে। পেছনের পচে যাওয়া প্রথাগুলো গ্রহণ করে রাজনৈতিক দল গড়তে চাইলে ভুল হবে। আদর্শের জায়গায় দাঁড়াতে হবে। এ জন্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পথ অনুসরণ করতে হবে।
চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে ওই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। এই সভার মাধ্যমে গতকাল সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। সভায় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আমাদের হৃদয়ে বিচিত্র রেখা এঁকে গেছেন। তিনি ছিলেন আমাদের বটবৃক্ষ। দেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি ছিলেন আপসহীন। এই বিষয়টি তরুণ প্রজন্মের কাছে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে অক্ষয় অমর করে রাখবে।’
স্মরণসভায় বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম