অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক শুরু হয়েছে। আজ শনিবার বেলা তিনটার কিছু পরে ঢাকার বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই বৈঠক শুরু হয়েছে।

বৈঠকে বিএনপিসহ দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল ও কয়েকটি সংগঠনের নেতারা অংশ নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের জোটে থাকা কোনো দল ও জাতীয় পার্টিকে এই বৈঠকে ডাকা হয়নি।

পূর্বঘোষিত এই বৈঠকে অংশ নিতে বেলা সোয়া দুইটা থেকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রবেশ করতে থাকেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সালাউদ্দীন আহমেদ, মেজর (অব) হাফিজ উদ্দীন আহমেদকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এই বৈঠকে অংশ নেবে বলে দলটির পক্ষ থেকে প্রথম আলোকে জানানো হয়েছিল।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুছ আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীসহ তিনজন, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব) অলি আহমেদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিমসহ অন্যান্য দল ও সংগঠনের নেতারা অংশ নিয়েছেন।

গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজকে এই কমিশনের সহসভাপতি করা হয়েছে।

কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফররাজ হোসেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড.

ইফতেখারুজ্জামান।

বৈঠকে কমিশন আগামী নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনগুলোর সুপারিশগুলো বিবেচনা করবে। এ ছাড়া কমিশন জাতীয় ঐকমত্য গঠনের জন্য রাজনৈতিক দল ও শক্তিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঐকমত য ইসল ম সদস য আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

বিচারিক প্রক্রিয়ায় গণহত্যাকারী আ. লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে: হেফাজতে ইসলাম

বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান। রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান তারা।

বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষের সমর্থন ও সমন্বয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত নির্দিষ্ট কৌশল ও পরিকল্পনা প্রকাশ করা। আওয়ামী পরিচয়ে কোনো সামাজিক ও রাজনৈতিক তৎপরতা চলতে দেয়া যাবে না। এছাড়া, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছদ্মবেশী ভারতীয় দালালদের কারণে ৫ মে শাপলার গণহত্যা, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন ও চব্বিশের গণহত্যার বিচারিক প্রক্রিয়া গতিহীন হয়ে পড়েছে। প্রতিটি গণহত্যার ঘটনায় আরো গভীর অনুসন্ধান ও তদন্তের মধ্য দিয়ে পূর্ণ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে করুন। যে বা যারাই এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে, তারা দেশের জনগণ ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত হবে।’

হেফাজত নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মতভেদ তীব্র আকার ধারণ করেছে। আমরা মনে করি, কোনো একক গোষ্ঠী বা ব্যক্তিবিশেষের ইচ্ছার ওপর এটি নির্ভর করার সুযোগ নেই। বরং পর্যাপ্ত রাষ্ট্র-সংস্কার, গণহত্যার বিচার, জাতীয় ঐকমত্য ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত চাহিদার ভিত্তিতে সংসদ নির্বাচন হতে হবে। আমাদের রাষ্ট্রকে পুরনো ফ্যাসিস্ট কাঠামো ও দাসত্বের শৃঙ্খলে আমরা ফিরে যেতে দিব না ইনশাআল্লাহ।’ 

তারা বলেন, দেশের সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমান জনগণের ঈমান আকীদা, ধর্ম, সংস্কৃতি, শিক্ষা, সভ্যতা অটুট রেখে রাষ্ট্র কাটামো সংস্কার করতে হবে। পাশ্চাত্য ও হিন্দুত্ববাদী চেতনা নির্ভর ভোগবাদী দর্শনে কোন কল্যাণ বয়ে আনবেনা। সব রাজনৈতিক দলকে মনে রাখতে হবে, আলেম ওলামা ও তৌহিদি জনতার সমর্থন ছাড়া কারো পক্ষে বৈধ পন্থায় ক্ষমতায় যাওয়া কিংবা টিকে থাকা সম্ভব হবে না।’    

বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ৬ মাসের পর্যবেক্ষণে আমাদের মনে হয়েছে, এ মুহূর্তে রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি উপদেষ্টা পরিষদের সংস্কারও আবশ্যক হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ উপদেষ্টার অদক্ষতা ও ব্যর্থতা ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান। অনেকের মধ্যে জুলাই বিপ্লবের চেতনাও অনুপস্থিত। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপে কাজ না করে কেউ কেউ হঠাৎ পেয়ে যাওয়া চেয়ার নিছক উপভোগ করছেন। এভাবে বেশিদিন চলতে পারে না। জনগণের মধ্যে অনিশ্চয়তা ভর করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংবিধান সংস্কার পরিষদের কাছে নির্বাচনের প্রস্তাব গণসংহতি আন্দোলনের
  • বিএনপির চাওয়া সংসদ নির্বাচনই কি সংস্কার বাস্তবায়নের শ্রেষ্ঠ উপায়
  • ঐকমত্য কমিশনে প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে নেজামে ইসলাম পার্টি
  • মুক্তিযুদ্ধের বয়ানে থাকুক জনগণের মালিকানা
  • গণপরিষদ নির্বাচন চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি
  • বিচারিক প্রক্রিয়ায় গণহত্যাকারী আ. লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে: হেফাজতে ইসলাম
  • টিক চিহ্ন নয়, আলোচনায় মতামত তুলে ধরবে সিপিবি
  • সব পক্ষের ধৈর্য ও বিচক্ষণতা কাম্য
  • সংস্কার প্রস্তাবে অনির্বাচিতদের ক্ষমতায়নের চেষ্টা
  • এনসিপির প্রস্তাব: ভোটারের বয়স ১৬, প্রার্থীর ২৩