‘ভ্যান ছিনতাইয়ের’ জন্য বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে চালককে হত্যা, লাশ পুকুরে
Published: 15th, February 2025 GMT
পাবনার সাঁথিয়ায় একটি পুকুর থেকে ভ্যানচালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকালে মাধপুর-সাঁথিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশের একটি পুকুর থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় তাঁর ভ্যান ও ব্যবহৃত মুঠোফোন পাওয়া যায়নি। পুলিশের ধারণা, ভ্যান ছিনতাই করতেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
ওই ভ্যানচালকের নাম সজল হোসেন (৩৮)। তাঁর বাড়ি উপজেলার খয়েরবাড়িয়া গ্রামে। সম্প্রতি তিনি ভ্যানটি কিনেছিলেন বলে পরিবার জানিয়েছে।
পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা বলেন, সমিতি থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে একটি নতুন ভ্যান কেনেন সজল। নিজেই ভ্যান চালিয়ে যা আয় করতেন, তা দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি ঋণের কিস্তিও শোধ করতেন। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে তাঁর মুঠোফোনে কল দিয়ে কে বা কারা ভাড়ার কথা বলে তাঁকে ডেকে নেন। এর পর থেকে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রাতে তিনি বাড়ি না ফিরলে পরিবারের লোকজন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। আজ সকালে স্থানীয় লোকজন মাধপুর-সাঁথিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশের একটি পুকুরে লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সেটি সজলের লাশ বলে শনাক্ত করেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যদের দাবি, নতুন ভ্যানটির লোভেই দুর্বৃত্তরা সজলকে হত্যা করেছে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, নতুন কেনা ভ্যানটি ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে দুর্বৃত্তরা মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তাঁর মুঠোফোন খোয়া গেলেও কললিস্ট ও পরিচিত ব্যক্তিদের নম্বর বের করার উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। লাশের গলায় দড়ি দিয়ে প্যাঁচানোর দাগ আছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে: টিউলিপ
বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিক জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি ও ও সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আপনারা বুঝবেন যে, এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারকে কোনো প্রসঙ্গ বা মন্তব্যের মাধ্যমে আমি বিশেষ গুরুত্ব দিতে পারি না। এটা পুরোপুরি আমাকে হয়রানি করার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। এমন কোনো প্রমাণ নেই যে আমি ভুল কিছু করেছি।’ খবর-বিবিসি
বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে সোমবার লন্ডনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বলেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষগুলোর কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। পুরোটা সময় তারা মিডিয়া ট্রায়াল চালিয়েছে। আমার আইনজীবীরা উদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছিলেন। তবে তারা কখনও এর জবাব দেয়নি।’
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা তিনটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা এবং রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা পৃথক তিন মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে রোববার এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব। আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেল কিনা, সে-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত। ১০ কাঠা প্লট নেওয়ার অন্য অভিযোগে শেখ রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের একজন সহকারী পরিচালক। মামলায় শেখ হাসিনা, টিউলিপসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়।
এর আগে জানুয়ারির মাঝামাঝিতে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) ছিলেন। দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে।
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপের খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কের বিষয়ে বারবার প্রশ্ন ওঠায় টিউলিপ সিদ্দিক মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
সম্প্রতি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠে। এরপর নিজের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগকে তদন্তের আহ্বান জানান টিউলিপ। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস।
টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যে তদন্ত হয়েছে সেখানে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস তার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি। কেয়ার স্টারমার অফিসিয়াল চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিককে বলেন, ‘আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার সময় এটা পরিষ্কার করতে চাই যে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস আমাকে আশ্বস্ত করেছেন- তিনি আপনার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি এবং আর্থিক অসঙ্গতির কোনো প্রমাণ খুঁজে পাননি।’