বসন্তে ১০ ছবিতে রুনা খানের বিশেষ বার্তা
Published: 15th, February 2025 GMT
বাংলা বছরের সর্বশেষ ঋতুরাজ বসন্ত আগমনকে বিভিন্নভাবে উদযাপন করছেন সকলে। ফাল্গুনী আমেজে নিজেকে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন অনেকে। আর এতে বাদ ছিল না দেশের তারকা অঙ্গনও।
এবার বসন্তের আগমনের প্রথমদিন এই ঋতুকে বরণ করে নিলেন জনপ্রিয় ও আলোচিত অভিনেত্রী রুনা খান। ছবি: ফেসবুক
সামাজিক মাধ্যমে ১০টি ছবি ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। ছবিতে রুনাকে দেখা গেল হলুদ রাঙা বাসন্তী শাড়িতে। সঙ্গে ঋতুরাজের আবহ ঘিরে দিলেন বিশেষ বার্তাও। ছবি: ফেসবুক
ফাল্গুনের প্রথম দিনেই নিজেকে অলকানন্দা রূপে ধরা দেন রুনা খান। এক গুচ্ছ ছবিতে যেন হয়ে ওঠেন বাগানের সেই হলুদ ফুলটিই! বসন্ত কন্যার এমন রূপে মুগ্ধতা ছড়ান অনুরাগীরা। ছবি: ফেসবুক
সেই পোস্টে রুনা খান লেখেন, ‘একদা গহীন অরণ্যে ফুটিয়াছিলো অলকানন্দা, আজ বসন্ত.
রুনা খানের এই কথার মাধ্যমে যেন ফাল্গুনী আমেজে বসন্তের আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার বার্তা দিলেন রুনা খান। তার অনুরাগীরাও শুভেচ্ছা জানান তাকে। ছবি: ফেসবুক
একজন লিখেছেন, ‘এতো সুন্দর হলুদ পরী এই বসন্তে আর কোথাও দেখি নাই, মাশাআল্লাহ এমন সুন্দর থাক বইন।’ ছবি: ফেসবুক
সেই অনুরাগীর মন্তব্যে হলুদ ভালোবাসা দিয়ে উত্তর দেন রুনা। এমনকি তার প্রায় সব মন্তব্যের জবাব দেন অভিনেত্রী। ছবি: ফেসবুক
ছিটকিনি, হালদা, গহীন বালুচর-এর মতো সিনেমা কিংবা কষ্টনীড়, অসময়-এর মতো ওটিটির কাজ দিয়ে দর্শকদের মন জয় করেছেন রুনা খান। ছবি: ফেসবুক
কাজের বাইরে নানাবিধ কর্মকাণ্ডে আলোচনায় চলে আসেন অভিনেত্রী। বিশেষ করে তিনি সামাজিক মাধ্যমে নানান ধরনের পোশাক-আশাকের কারণে বিতর্কিত হন। ছবি: ফেসবুক
সম্প্রতি ২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে (ডিআইএফএফ) প্রিমিয়ার হয়েছে রুনা খানের পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘নীলপদ্ম’। এখানে তিনি একজন যৌনকর্মীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ছবি: ফেসবুক
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শখের কলের গান ও একজন আব্দুল আলী
নিমাই দাঁড়ারে, তীর ভাঙা টেউ আর নীড় ভাঙা ঝড়, কালা আমায় পাগল করলি রে, কাওয়ায় কমলা খাইতে জানে না, মেরা জুতা হে জাপানি, ঠাকুর জামাই এলো বাড়িতে– কালের সাক্ষী হয়ে থাকা জনপ্রিয় এসব গান সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানে অহরহ শুনতে পেতাম অথবা দূরের কোনো গ্রাম থেকে গানের আওয়াজ বাতাসে ভেসে আসত কানে। সেসব দিন কেবল আমাদের জীবন থেকেই হারিয়ে যায়নি; বরং হারিয়ে যেতে বসেছে এ গল্পগুলো। ইন্টারনেটের সাহায্যে ইউটিউব কিংবা গুগলে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কারণে গান শোনা অতি সহজ হয়েছে। অথচ কয়েক দশক আগেও গান শোনার প্রধান মাধ্যম ছিল মাইক। ছিল কলের গান নামক আরও একটি যন্ত্র; যা রেকর্ডের মাধ্যমে গান শোনা যেত। কলের গান এ দেশ থেকে বিদায় নিয়েছে অনেক আগেই। তবে কেউ কেউ সেই স্মৃতি ধারণ করে আছেন এখনও। এমন একজন ব্যক্তি যার নাম আব্দুল আলী। তিনি ঢাকা জেলার দোহারের ঘাটা গ্রামের কুটি ব্যাপারীর ছেলে। পেশায় একজন মাইক ব্যবসায়ী। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি নিজেই আটকে গেছেন এক অন্ধপ্রেমে। অসংখ্য কলের গানের সংগ্রাহক তিনি। অন্তত ৭০টি রেকর্ডে ৫ শতাধিক গান রয়েছে তাঁর সংগ্রহে। কলের গানের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেলেও ৬০ দশকের অনেক গান তিনি যত্নে রেখেছেন তাঁর শখের তালিকায়। এটি এখন তাঁর সুখস্মৃতি। মন চাইলেই তিনি এখনও কলের গান শোনেন। অন্যকে শোনান। কেউ কেউ কলের গান দেখতে আসেন তাঁর বাড়িতে। আব্দুল আলীর বয়স এখন ৭৮ বছর। অনেক স্মৃতি মনে করতে পারেন না; আবার যেগুলো মনে আছে, সে কথা ঠিকঠাক গুছিয়ে বলতে পারেন না। তবে জীবনের অধিকাংশ সময় যে পেশায় কাটিয়েছেন সে কথা বলতে তিনি উদগ্রীব! জীবন সায়াহ্নে এসে ফেলে আসা দিনগুলো মনে পড়তেই মুহূর্তেই জীবন রঙিন হয়ে ওঠে।
দরিদ্র পরিবারে জন্ম আব্দুল আলীর। যখন বাবা মারা যান তখন তাঁর বয়স ১৫। মা, দুই ভাই, দুই বোনের সংসারের দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর কাঁধে।
ওই বয়সে উপার্জনের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। উপজেলার মধুরচর এলাকার পূর্ব পরিচিত আলেপ সরদারের সঙ্গে ধান কাটার আগের দিন বিকেলে তাদের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন, ওই বাড়িতে একটি অনুষ্ঠানের জন্য মাইক ভাড়া করে আনা হয়েছে। অনেক চেষ্টা করেও মাইক বাজাতে পারছেন না মাইকম্যান। তখন তিনি মাইক বাজানোর চেষ্টা করেন এবং হাতের স্পর্শে বেজে ওঠে! তখন আনন্দে ভরে যায় পুরো বাড়ি। ওইদিন খুশি হয়ে দুই পয়সা দিয়ে পুরস্কৃত করা হয় তাঁকে। পরেরদিন ভোরে আলেপ সরদারের সঙ্গে ধান কাটার জন্য চলে যান ফরিদপুরে। দুই মাস ধান কাটার পর ফের বাড়িতে চলে আসেন। কিছুদিন অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজও করেন। নিকটাত্মীয়ের সহযোগিতায় উপজেলার জয়পাড়া বাজারে বাদলের মাইকের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন। এভাবে কেটে যায় কয়েক বছর। একটা সময় নিজ বাড়িতে মাইকের দোকান দেন। একটি মাইক দিয়ে শুরু করেন ব্যবসা। নাম দেন বুলেট মাইক সার্ভিস। জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ব্যবসা। আব্দুল আলীর শাশুড়ি জমি বিক্রি করে কিছু টাকা দিলে ১৬০ টাকা দিয়ে কলের গান কেনেন। মাইক এবং কলের গান ভাড়ায় দিয়ে আয় থেকে ভালোই চলছিল। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে এর ব্যবহার। একদিকে সংসারে ব্যয় বাড়তে থাকে এবং অন্যদিকে আয় কমতে থাকে। দুই মেয়েকে বিয়েও দেন। এক সময় মাইক ভাড়া বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়েন তিনি। হারানো বিজ্ঞপ্তি ও ঘোষণা ছাড়া অন্য কোনো কাজে মাইকের ব্যবহার উঠে যাওয়ায় সীমিত আয় দিয়েই চলে আব্দুল আলীর সংসার।
আব্দুল আলী বলেন, ‘দোহার উপজেলায় সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করেছি। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে আমার বাড়িতে আসত মাইক ভাড়ার জন্য। এখন তা কেবলই স্মৃতি। মাইকের দিন শেষ হওয়ায় ঘরেই পড়ে রয়েছে এসব। শখের কলের গানের সেটটি আছে। অনেকে কিনতে চেয়েছেন। বিক্রি করিনি। স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছি। জীবিত থাকাকালে বিক্রি করব না। আমার মৃত্যুর পর কেউ যদি বিক্রি করে দেয় তখন আফসোস থাকবে না।’ v