তিমির পেট থেকে বেঁচে ফিরলেন তিনি
Published: 15th, February 2025 GMT
লোকে বলে, ভাগ্য সহায় হলে নাকি অনেক অসম্ভবও সম্ভব হয়ে যায়। চিলির আদ্রিয়ান সিমানকাসের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে হয়তো এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ বলা যেতে পারে। কেননা, তিমির পেটে গিয়েও প্রাণ নিয়ে ফিরে এসেছেন তিনি।
আদ্রিয়ানের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটেছে গত শনিবার। চিলির মাগেলান প্রণালিতে বাবার সঙ্গে কায়াকিং করছিলেন আদ্রিয়ান। এমন সময় একটি তিমি তাঁর কায়াকে (ফাইবার, কাঠ ও পাটের তন্তু দিয়ে তৈরি ১০ ফুট লম্বা সরু নৌকা) আক্রমণ করলে আদ্রিয়ান পানিতে পড়ে যান।
আদ্রিয়ান কায়াক থেকে সমুদ্রে পড়ে যাওয়ার পর তিমিটি আবার তাঁকে আক্রমণ করে। কিছুক্ষণ তাড়া করার পর একপর্যায়ে তাঁকে গিলে ফেলে তিমিটি। তবে আদ্রিয়াকের ভাগ্য ছিল ভালো। বেশিক্ষণ তাঁকে তিমির পেটে থাকতে হয়নি। কয়েক মুহূর্ত পর তিমিটি তাঁকে পেট থেকে উগরে দেয়।
ছেলে এত বড় বিপদের মুখে পড়লেও বাবা ছিলেন এ সময় একেবারে শান্ত। তিনি পুরো ঘটনাটি মুঠোফোনের ক্যামেরায় ধারণ করেন। সেই ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোয় ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, হলুদ রঙের কায়াকে বসে বইঠা বাইছেন আদ্রিয়ান। হঠাৎ সমুদ্র থেকে একটি তিমি ভেসে ওঠে। এরপর তিমিটি আদ্রিয়ানকে গিলে ফেলে। কিছুক্ষণ পরই আদ্রিয়ানকে আবার পানিতে ভেসে থাকতে দেখা যায়। এ সময় তাঁর বাবা ছেলের উদ্দেশে বলছিলেন, ‘ধৈর্য ধরো, শান্ত থাকো।’
তিমির পেটে কয়েক মুহূর্ত থাকার পর আদ্রিয়ান আবার পানিতে ভেসে উঠলে দ্রুত তাঁর কাছাকাছি যান বাবা। তিনি আদ্রিয়ানকে টেনে তাঁর কায়াকে তোলেন। এরপর বাবা–ছেলে মিলে তীরে ফেরেন। তবে এ ঘটনায় দুজনের কেউই আহত হননি।
ভয়াল সে মুহূর্তের বর্ণনা দিয়ে আদ্রিয়ান বলেন, ‘তিমিটি আমাকে খেয়ে ফেলবে মনে করেছিলাম। কিন্ত একপর্যায়ে তিমির পেট থেকে বেরিয়ে আসি। এ সময় ভয় আরও বাড়ে। তখন একটা কথাই মনে হচ্ছিল, যদি ঠিক সময়ে তীরে ফিরতে না পারি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চলচ্চিত্রের ইতিহাসে নাবিলাকে কেউ অগ্রাহ্য করতে পারবে না: জয়
অভিনেত্রী মাসুমা রহমান নাবিলার ভূয়সী প্রশংসা করলেন অভিনেতা, নির্মাতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়। বলা যায়, প্রশংসায় পঞ্চমুখ! মূলত, বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) জয় তার অফিসিয়াল ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসে ‘আয়নাবাজি’খ্যাত অভিনেত্রীকে নিয়ে সুখ্যাতি করেন।
এ ধরনের স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণ লেখার শুরুতে ব্যাখ্যা করেছেন নেটিজেনরা। জয় বলেন, “সবাই বলে জীবিত অবস্থায় মানুষের প্রশংসা করা উচিত। কিংবা তাকে নিয়ে দুই-চার লাইন লেখা উচিত। শুভাকাঙ্ক্ষী এবং ভক্তদের কিংবা বন্ধু-বান্ধবের। জন্মদিনে আমরা ছোট করে কিছু লিখি আবার অনেকেই লিখি না। আজকে ওর জন্মদিন না, যাকে নিয়ে আমি লিখলাম। আমি ভাবছি, আমার চেনাজানা সকলকে নিয়ে সময় পেলে কিছু না কিছু লিখব।”
মাসুমা রহমান নাবিলা
আরো পড়ুন:
মা হচ্ছেন স্বাগতা, প্রকাশ্যে বেবি বাম্পের ছবি
মেহজাবীনের বিয়ে: আদনান আল রাজীবকে কতটা জানেন?
নাবিলার সৌন্দর্যের প্রশংসা করে জয় বলেন, “আজ যাকে নিয়ে লিখছি, সেই অভিনেত্রীর নাম নাবিলা। অনেক অনেক ছোটাছুটি তাড়াহুড়ো তাকে করতে হয়নি ক্যারিয়ারে। কাজের সংখ্যা বাড়াতে হয়নি অনেক। খুব অ্যাভারেজ কাজে কখনই দেখা যায়নি তাকে। হোস্ট হিসেবেও উজ্জ্বল নাবিলা। মায়া, টেরা চোখ কিংবা দাঁতের সৌন্দর্য— তার কথা বলাকে আকর্ষণীয় করে তুলেছিল, সঙ্গে ব্যক্তিত্ব এবং শিক্ষা এই দুটোর ছাপ বোঝা যেত। হাসিটাও আকর্ষণীয়।”
জয় মনে করেন চলচ্চিত্রের ইতহাস থেকে নাবিলা হারিয়ে যাবেন না। তার ভাষায়, “অনেক শিল্পী আছেন, যারা হাজার হাজার কাজ করে আবার সামান্য বিরতিতেই দর্শক এবং ইতিহাস থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে হারিয়ে যায়। নাবিলা মাত্র দুটি কাজ দিয়ে হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন। ইতিহাস মনে রাখবে ‘আয়নাবাজি’ এবং ‘তুফান’। চলচ্চিত্রের ইতিহাস যতদিন লেখা হবে, ততদিন এই দুই সিনেমার নায়িকা নাবিলাকে কেউ অগ্রাহ্য করতে পারবে না।”
বিস্ময় প্রকাশ করে জয় বলেন, “আমার অবাক লাগে, এরকম বড় কাজ করার পর একজন শিল্পী স্বাভাবিক জীবনে কীভাবে ফিরে যায়? কারণ তার ভেতর চরিত্রের ট্রমা কাজ করে। দীর্ঘদিন কাজ করে। তখন ইচ্ছে করে সব ভেঙেচুরে শুধু অভিনয় করতে। কিন্তু নাবিলারা পারে না। সমাজ-সংসার-বাস্তবতা, সিন্ডিকেট ও মিডিয়া পলিটিক্স এবং অসংখ্য কম্পিটিটার অতিক্রম করা সবার পক্ষে সম্ভব না। তারপর সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে কাজ করলেই প্রেমের তকমা লাগিয়ে দেওয়া, সব পরিবার গ্রহণও করে না। এইসব সীমাবদ্ধতার বাইরে শুধু পরিপূর্ণ শিল্পী হওয়া, শিল্পকর্ম করা, শিল্পে খাওয়া, শিল্পে ঘুমানো ভারতবর্ষের সম্ভব হলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গত ২৫ বছরে এর সম্ভাবনা দুই-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া একেবারেই অসম্ভব।”
প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়ার পাশাপাশি প্রত্যাশা ব্যক্ত করে জয় বলেন, “নাবিলা যেমন কাজের ছাপ চিরস্থায়ীভাবে অল্প কাজ দিয়ে রেখে গেল সবাই কি তা পারে? নাবিলার দুইটি কাজ নয় অন্তত ছয়টি কালজয়ী কাজ তার জীবদ্দশায় তৈরি হোক। শুভকামনা।”
মাসুমা রহমান নাবিলা
শাহরিয়ার নাজিম জয়ের প্রশংসাসূচক লেখাটি নাবিলার নজরে পড়েছে। লেখাটি পড়ে মন্তব্যের ঘরে নাবিলা লেখেন, “শাহরিয়ার নাজিম জয় ভাইয়া, মৃত্যুর পর অনেকেই অনেক কিছু লিখে, বলে। এই মৃত্যুর পর লেখা বা বলাটা একটা ট্রেন্ড আর বেঁচে থাকতে কাউকে মুখ ফুটে প্রশংসা না করা আরেকটা ট্রেন্ড। আপনার এই লেখা আমাকে অনেক উৎসাহ দিল, বেঁচে থাকতে অন্তত ৬টা কাজ (আরো বেশি হলে তো কথাই নেই) করে যেতেই হবে! অনেক ধন্যবাদ, আমাকে নিয়ে এই সুন্দর কথাগুলোর জন্য।”
সৌদি আরবের জেদ্দায় জন্মগ্রহণ করেন মডেল-অভিনেত্রী মাসুমা রহমান নাবিলা। বাবার চাকরির সূত্রে সেখানে এসএসসি পাশ করেন। এরপর ঢাকায় ফিয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন। তারপর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
২০০৬ সালে একটি টিভি অনুষ্ঠান সঞ্চালনার মাধ্যমে শোবিজ অঙ্গনে পথচলা শুরু করেন নাবিলা। একই বছর মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মিত একটি বিজ্ঞাপনে মডেল হয়ে আলোচনায় উঠে আসেন। এরপর অনেক নামিদামি প্রতিষ্ঠানের পণ্যের বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন। তা ছাড়া খেলা বিষয়ক কিছু অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেও প্রশংসা কুড়ান। এরই মাঝে নাম লেখান টিভি নাটকে।
মাসুমা রহমান নাবিলা
২০১৬ সালে অমিতাভ রেজা নির্মাণ করেন ‘আয়নাবাজি’ সিনেমা। এতে হৃদি চরিত্রে অভিনয় করেন নাবিলা। সিনেমাটিতে চঞ্চল চৌধুরীর বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। এটি তার অভিষেক চলচ্চিত্র হলেও দর্শকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ান নাবিলা। এরপর বিয়ে-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি।
দীর্ঘ চার বছর কোনো চলচ্চিত্রে দেখা যায়নি নাবিলাকে। কেবল চলচ্চিত্র নয়, বলা যায় অভিনয় থেকেই দূরে ছিলেন তিনি। তবে বিরতি ভেঙে ২০২১ সালে ‘১৯৭৫ অ্যান আনটোল্ড স্টোরি’ সিনেমায় অভিনয় করেন। এ সিনেমা নিয়ে বিশেষ আলোচনা না হলেও গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে আলোচনার শীর্ষে উঠে আসেন নাবিলা। কারণ ওই সময়ে ‘তুফান’ সিনেমায় শাকিব খানের নায়িকা হিসেবে নাবিলার নাম ঘোষণা করা হয়। সিনেমাটি মুক্তির পরও প্রশংসা কুড়ান এই অভিনেত্রী।
ঢাকা/শান্ত