আদানি নিয়ে প্রশ্ন করতেই ‘ব্যক্তিগত বিষয়’ বলে এড়িয়ে গেলেন মোদি
Published: 15th, February 2025 GMT
হাজারটা অভিযোগ উঠলেও শিল্পপতি গৌতম আদানির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে আজ পর্যন্ত মুখ খোলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যুক্তরাষ্ট্রেও খুললেন না। তবে প্রশ্ন শুনে নিজের বিরক্তিও তিনি চাপা দিতে পারলেন না।
গত ১১ বছরে দেশের মাটিতে একবারও সংবাদ সম্মেলন করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সফরে সে দেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর প্রথাগতভাবে প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়াটা এড়াতে পারেননি।
আগেও অপছন্দের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন, গত বুধবারও হতে হলো। সরাসরি শুনতে হলো আদানি–সংক্রান্ত প্রশ্ন। যদিও কৌশলে উত্তরটি তিনি এড়িয়ে যান এই বলে যে দুই রাষ্ট্রপ্রধান যখন বৈঠক করেন, তখন এই ধরনের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আলোচনার অবকাশ থাকে না।
‘ব্যক্তিগত বিষয়’ বলে আদানি প্রসঙ্গ মোদি এড়ালেন বটে, তবে ভারতে তা নিয়ে বয়ে যাচ্ছে সমালোচনার ঝড়।
সংসদে আদানি–মোদি প্রসঙ্গ একাধিকবার তুলেছেন বিরোধী নেতারা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সরাসরি জানতে চেয়েছিলেন, কেন আদানির বিমান প্রধানমন্ত্রী ব্যবহার করেন? কেন মোদির বিদেশ সফরে সব সময় আদানি সঙ্গী হন? কেন শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, ইসরায়েল সফরের পরই সে সব দেশে আদানির সংস্থা বিপুল বরাদ্দ পায়? বরাদ্দ পাওয়া নিয়ে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ বিদেশে কেন ওঠে?
বস্তুত, রাহুল যেসব প্রশ্ন তুললেন, সেসব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের কোনো জবাবই সংসদের ভেতরে বা বাইরে মোদি আজ পর্যন্ত দেননি। এমনকি এ–ও দেখা গেছে, সংসদীয় বিতর্ক থেকে আদানির উল্লেখ পর্যন্ত স্পিকারের নির্দেশে মুছে দেওয়া হয়েছে। উপায়ান্তর না দেখে বিরোধীরা শেষ দিকে আদানির নামের আদ্যক্ষর উচ্চারণ করে বুঝিয়ে দিতেন, কাকে তাঁরা বোঝাতে চাইছেন। কোনো কোনো দল মোদি ও আদানিকে ‘মোদানি’ বলেও উল্লেখ করেছেন।
আদানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কই শুধু নয়, শেয়ার বাজারে কারচুপি নিয়ে আদানি সংস্থার বিরুদ্ধে আনা হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ নিয়েও সংসদে আলোচনা করতে দেওয়া হয়নি।
ভারতীয় শিল্পপতি গৌতম আদানি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানে ভারত নিয়ে চিন্তা নেই
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিটা আজকের জন্য শুধুই ভারত–পাকিস্তানের। বিশ্ব ক্রিকেটের দৃষ্টি আজ থাকবে কেবলই দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ম্যাচটার দিকে। রাজনৈতিক বৈরিতায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রতিবেশী দেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক এমনিতেই অম্লাত্মক। ভারত নিজেদের ম্যাচগুলো পাকিস্তানে খেলছে না বলে এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি তার ঝাঁজ আরও বাড়িয়েছে। শুধু ভারতের কারণেই টুর্নামেন্টটা হচ্ছে দুই দেশে। যদিও ভারত নিজেরা খেলছে শুধু দুবাইয়ে।
তবে যদি বলা হয়, খোদ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক পাকিস্তানের দৃষ্টিই আজ পুরোপুরি দুবাইয়ের দিকে নেই, খুব বেশি ভুল বলা হবে না বোধহয়। অনেক বছর ধরেই পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মানে দেশটির রাষ্ট্রযন্ত্র থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সবার একটাই চিন্তা—অঘটন এড়িয়ে খেলাটা যেন ঠিকঠাকভাবে হয়, নিরাপদে থাকতে পারে অতিথি দলগুলো। দুবাইয়ের ভারত–পাকিস্তান ম্যাচের চেয়েও তাই তাদের বড় চিন্তা পাকিস্তানে থাকা দলগুলোর নিরাপত্তা ও সুযোগ–সুবিধা নিশ্চিত করা।
পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক দলগুলোর নিরাপত্তা শঙ্কা অনেক আগে থেকেই ছিল। সেটি আরও বেড়ে যায় ২০০৯ সালের মার্চে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার পর। ওই ঘটনায় পাঁচ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দূরে সরে ছিল পাকিস্তান থেকে। ২০১৫ সাল থেকে আবার বিদেশি দলগুলো দেশটিতে আসতে শুরু করে এবং তখন থেকে এই দেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মানেই সফরকারী দলগুলোর সবার আগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার শর্ত জুড়ে দেওয়া।
আরও পড়ুন‘পাকিস্তান যদি ভারতকে হারায়, সেটা হবে অঘটন’১০ ঘণ্টা আগেঅতিথিদের স্বস্তি দিতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড সে আয়োজনে ত্রুটি রাখে না কখনো। তা এতটাই যে অনেক সময় বাড়তি এ নিরাপত্তাব্যবস্থা কিছু সম্পূরক প্রশ্নও তুলে দেয়। যেখানে সেনা, পুলিশ আর ভারী অস্ত্র দিয়ে ক্রিকেটকে সুরক্ষিত রাখতে হয়, সেখানে খেলা হওয়ার দরকার কী?
এটা তো কোনো খেলার জন্যই স্বাভাবিক পরিস্থিতি হতে পারে না! হোটেল আর মাঠবন্দী জীবন কি একধরণের মানসিক চাপও তৈরি করে না ক্রিকেটারদের ওপর? কাল ইসলামাবাদে পিসিবি–সংশ্লিষ্ট একজনকে প্রশ্নটা করা হলে অবশ্য তিনি পাল্টা যুক্তি দিলেন, ‘বিদেশি দলগুলো চায় বলেই তো তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। এটা না হলে তারাই পাকিস্তানে আসবে না খেলতে।’
দুবাইয়ে কাল অনুশীলনে ভারতের বিরাট কোহলি