মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে কবি সোহেল হাসান গালিবকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহর আদালত রিমান্ড ও জামিনের আবেদন নাকচ করে শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এ আদেশ দেন।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) আদালতের অপরাধ ও প্রসিকিউশন বিভাগের সাধারণ নিবন্ধন শাখার সাব-ইন্সপেক্টর স্বপন কুমার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সোহেল হাসান গালিবকে আদালতে হাজির করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিবি) কোতয়ালি জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক হুমায়ন কবীর। তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। কবি সোহেল হাসান গালিবের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
আদালত রিমান্ড ও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে সোহেল হাসান গালিবকে কারাগারে পাঠিয়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
ডিবির আবেদনে বলা হয়েছে, আসামি সোহেল হাসান গালিব (Sohel Hasan Galib) নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘তৌহিদি জনতা’ শিরোনামে একটি কবিতা পোস্ট করেন। এতে কিছু বিতর্কিত কথা রয়েছে।
পরবর্তী সময়ে আরো জানা যায়, সোহেল হাসান গালিবের লেখা ‘আমার খুতবাগুলি’ নামের একটি বই ‘উজান প্রকাশনী’ নামের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত হয়েছে। ওই বইয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো কবিতা ছাপা হয়েছে। তার লেখা বই শাহবাগ থানাধীন এলাকায় চলমান অমর একুশে বইমেলায় উজান প্রকাশনীর ৬২৩- ৬২৪ নং স্টলে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রিয় নবিজীর নামে প্রথমে ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মানহানিকর পোস্ট ও বইয়ে এরূপ কবিতা থাকায় বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ মুসলিমের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এতে বইমেলাসহ দেশে যেকোনো স্থানে দাঙ্গা হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আসামির ফেসবুক অ্যাকাউন্টের বিষয়ে বিপুল সংখ্যক লোক রিপোর্ট করায় তা ডিঅ্যাকটিভ হয়। সোহেল হাসান গালিবের অপরাধের বিষয়টি জনসাধারণের মধ্যে ভাইরাল হওয়ায় তার সার্বিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। এমতাবস্থায় আসামির কর্মকাণ্ড ধর্তব্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে তাকে ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন সানারপাড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসামিকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে কোন উদ্দেশ্যে কার প্ররোচনায় এরূপ অপরাধকর্ম সম্পাদন করেছে, তা জানা সম্ভব হবে বলে প্রতীয়মান হয়। এমতাবস্থায় তাকে ১০ দিনের পুলিশি রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
ঢাকা/মামুন/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিবিসির সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের পর ফেরত পাঠাল তুরস্ক
যুক্তরাজ্যের সরকারি সংবাদমাধ্যম ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) সাংবাদিক মার্ক লোয়েনকে গ্রেপ্তারের পর ফেরত পাঠিয়েছে তুরস্ক। তিনি দেশটিতে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করছিলেন। লোয়েনকে ফেরত পাঠানোর ঘটনাকে বিবিসি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে।
বিবিসি বলেছে, লোয়েনকে বুধবার ইস্তাম্বুলে গ্রেপ্তার করা হয়। চলমান বিক্ষোভের খবর সংগ্রহে কয়েক দিন তিনি সেখানে অবস্থান করছিলেন। গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের পর এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
এক বিবৃতিতে বিবিসি বলেছে, ‘আজ (বুধবার) সকালে বিবিসি নিউজের প্রতিবেদক মার্ক লোয়েনকে ইস্তাম্বুল থেকে ফেরত পাঠিয়েছে তুরস্কের কর্তৃপক্ষ। যে হোটেলে তিনি অবস্থান করছিলেন, সেখান থেকে আগের দিন তুলে এনে তাঁকে ১৭ ঘণ্টা আটক রাখা হয়। সাম্প্রতিক বিক্ষোভের খবর সংগ্রহে মার্ক লোয়েন তুরস্কে অবস্থান করছিলেন। আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি হওয়ায় তাঁকে তুরস্ক ছাড়তে বলা হয়।’
দেশজুড়ে চলা সাম্প্রতিক বিক্ষোভে ১ হাজার ৮৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তুরস্কের ১১ জন সাংবাদিকও রয়েছেন।
আরও পড়ুনতুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী কে এই একরেম ইমামোগলু২৬ মার্চ ২০২৫রোববার রাতে বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ব্যাপকতা বাড়ে। এ সময় কিছু বিক্ষোভকারীকে লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। এর আগে ২০ মার্চ বিক্ষোভ দমনে পিপার স্প্রে ও জলকামান ব্যবহার করা হয়।
ইমামোগলুকে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হয়। তাঁকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। গ্রেপ্তারের পর ইমামোগলুকে ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)।