জিম্মি-বন্দিবিনিময় আজ, গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা কাটছে
Published: 15th, February 2025 GMT
তিন জিম্মি—আয়ার হর্ন, সাগুই ডেকেল-চেন ও আলেকসান্দ্রে সাশা ত্রোফানভকে আজ শনিবার হামাস মুক্তি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে অচলাবস্থা এড়াতে মিসর আর কাতারের মধ্যস্থতার পর এই তিনজনের ইসরায়েলে ফেরার পথ খুলেছে। প্রায় এক মাস ধরে গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও সম্প্রতি এটি নিয়ে অচলাবস্থা দেখা দেয়।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে, গাজা থেকে আরও তিন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। বিনিময়ে ইসরায়েল তার কারাগার থেকে ৩৬৯ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে। এর মধ্য দিয়ে প্রথম দফা যুদ্ধবিরতির ৪২ দিনের সময়সীমা পেরোনোর আগেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা কার্যত দূর হয়েছে।
আরও পড়ুনগাজা নিয়ে বিকল্প প্রস্তাব আনছে আরব দেশগুলো১৪ ঘণ্টা আগেএর আগে হামাসের পক্ষ থেকে আরও জিম্মি মুক্তি না দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। সংগঠনটির অভিযোগ, যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত ভেঙেছে ইসরায়েল। সেই সঙ্গে গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনে তারা। তবে এর প্রতিক্রিয়ায় আবারও যুদ্ধ শুরুর হুমকি দেয় ইসরায়েল। দেশটির রিজার্ভ বাহিনীকেও সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের পাকাপাকিভাবে সরিয়ে দেওয়া ও উপত্যকাটি নিজেদের দখলে নিয়ে পুনর্গঠনের পরিকল্পনা প্রকাশ করার পর যুদ্ধবিরতি চুক্তি টিকে থাকার সম্ভাবনা ম্লান হয়ে পড়েছিল। ট্রাম্পের প্রস্তাবকে ইসরায়েল স্বাগত জানালেও হামাস আর আরব রাষ্ট্রগুলো দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
গত মাসে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় হামাস নারী-শিশু-প্রবীণসহ ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার শর্তে রাজি হয়। বিনিময়ে ইসরায়েল কয়েক শ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলে। ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিতে গাজা উপত্যকার বিভিন্ন জায়গা থেকে নিজেদের সেনা সরিয়ে নিয়েছে ইসরায়েল।
আরও পড়ুনমুক্তি দিতে যাওয়া তিন জিম্মির নাম ঘোষণা হামাসের১৪ ঘণ্টা আগেআজকের আগে পর্যন্ত হামাস ৩৩ জিম্মির মধ্যে ১৬ জনকে ছেড়ে দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে থাইল্যান্ডের একজন ছিলেন। গাজায় এখনো ৭৬ জন জিম্মি আছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁদের অর্ধেক বেঁচে আছেন।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার প্রথম দফা যুদ্ধবিরতি চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল, গাজা থেকে অবশিষ্ট জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে দ্বিতীয় পর্যায়ের শান্তি আলোচনার পথ উন্মুক্ত, চূড়ান্তভাবে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটানোর আগে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী পুরোপুরি প্রত্যাহার এবং ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া এবং খাবার, পানি ও বিদ্যুতের ঘাটতিতে ভোগা গাজার পুনর্গঠন নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুনচুক্তি মেনে জিম্মি মুক্তিতে রাজি হামাস১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫জিম্মিমুক্তি আটকে দেওয়ার হুমকি দিয়ে হামাস অভিযোগ করেছিল, গাজায় তাঁবু ও সহায়তাসামগ্রী ঢুকতে বাধা দিয়েছে ইসরায়েল। ফলে হাজার হাজার মানুষকে তীব্র শীতের মধ্যে মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে। ইসরায়েল এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও তারা হাজারো ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় ঢুকতে দিয়েছে। তারা নয়, বরং হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করছে।
আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলো বলছে, গাজায় যে পরিমাণ ত্রাণসহায়তা দরকার, সে তুলনায় সরবরাহ অপ্রতুল। এ সহায়তা গাজার মানুষদের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না।
আরও পড়ুনগাজায় আবার যুদ্ধ শুরু হওয়ার শঙ্কা১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাক থেকে ঝরে পড়া বালুর স্তর সড়কে
তাহেরুল ইসলাম একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, বাইসাইকেল চালিয়ে শহরের রেলগেট থেকে সাঁড়াগোপালপুরে নিজ বাড়ি ফিরছিলেন। পথে ট্রাক থেকে রাস্তায় ঝরে পড়া বালুর আস্তরণে চাকা পিছলে ইজিবাইকের ধাক্কায় উল্টে গিয়ে পড়েন রাস্তার পাশে পাতিবিলের কিনারায়। অল্পের জন্য তিনি পানিতে পড়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পান। অন্য যানবাহনের যাত্রীরা তাঁকে তুলে পাঠান বাড়িতে।
ঈশ্বরদীর টিপু সুলতান, উপজেলা, পাকশি পেপার মিল, ইপিজেডসহ বিভিন্ন সড়কে প্রতিদিন এমন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে যানবাহন। এতে শিক্ষক তাহেরুলের মতো বিপদে পড়ছেন অনেকে। জানা গেছে, বালু বহনকারী ট্রাক, ডাম্প ট্রাক ও ট্রাক্টর থেকে ঝরে পড়া বালু রাস্তায় জমতে জমতে পুরু আস্তরণ তৈরি হয়েছে।
এসব সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সরেজমিনে জানা গেছে, পদ্মা নদী থেকে ট্রাকে সড়কপথে বহন করা বালু ঝরে পড়ে বিভিন্ন সড়ক এখন বালুময় হয়ে গেছে। পাকা সড়ক ঢাকা পড়েছে বালুর আস্তরণে। চাকা পিছলে দুর্ঘটনায় পড়ছে যানবাহন।
টিপু সুলতান রোডে চলাচলকারী ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, এমনিতে এ সড়ক ভাঙা। এরই মধ্যে অতিরিক্ত ওজনের বালু বহন করায় ঝাঁকুনিতে ঝরে পড়ে। এতে বালু জমে সড়ক ঢাকা পড়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। ইজিবাইকচালক বদরুল আলমের ভাষ্য, বালুতে চাকা পিছলে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়তে হচ্ছে। বালু না সরানো হলে এবং ট্রাকে অতিরিক্ত ভার বহন বন্ধ করা না হলে এ অবস্থার সমাধান হবে না।
পদ্মা নদী থেকে বালু ভর্তি করে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পৌঁছাতে এক থেকে দেড় ফুট বালু সড়কে ঝরে পড়ে বলে জানান ট্রাকচালক জামাল হোসেন। আরেক চালক সামসুল আলম বলেন, ভাঙা সড়কের কারণে বারবার অতিরিক্ত ঝাঁকুনিতে ট্রাক থেকে বালু ঝরে পড়ে। বাধ্য হয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি বালু লোড করতে হচ্ছে। এতে গন্তব্যে পৌঁছানো পর্যন্ত ঝরে পড়ার পরও ট্রাকের আকার অনুযায়ী বালু থাকে।
ইউএনও সুবীর কুমার দাশ বলেন, বালুতে সড়কে এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তা জানা ছিল না। ট্রাফিক বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক সভায় বিষয়টি আলাপ করে সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।