গাজীপুরে টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমায় দ্বিতীয় পর্বে নাজমুল হোসেন (৭৫) ও মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ শেখ (৬০) নামে আরো দুই মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দ্বিতীয় পর্বে মৃত মুসল্লির সংখ্যা দাঁড়ালো তিনজনে।

মৃত মুসল্লি নাজমুল হোসেন বগুড়া জেলার শেরপুর থানার খামার কান্দি গ্রামের মৃত মজিবর পন্ডিতের ছেলে ও মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ শেখ শরিয়তপুর জেলার মোহাম্মদ এলেম শেখের ছেলে। 

মিডিয়া সমন্বয়ক মো.

সায়েম জানান, শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০ টার সময় শ্বাসকষ্টজনিত কারণে অসুস্থ নাজমুল হোসেনকে আহসানুল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি ইজতেমা ময়দানে ৭২ নম্বর খিত্তায় ছিলেন। একই রাতে সাড়ে ১০ টার সময় মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ শেখ অসুস্থ হয়ে মারা যান। তিনি ময়দানে ২৭ নম্বর খিত্তায় ছিলেন। জানাজা শেষে তার মৃতদেহ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সোয়া ১২ টার সময় দিদার তরফদার (৫৫) নামে এক মুসল্লীর মৃত্যু হয়। তিনি খুলনা জেলার সদর থানার বাঙ্গালগলি গ্রামের মৃত তৈয়ব আলী তালুকদারের ছেলে। 

৫৮ তম বিশ্ব ইজতেমা দ্বিতীয় পর্ব বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) আসরের নামাজের পর বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। আজ শনিবার বাদ ফজর বয়ান করেন মাওলানা ইলিয়াস বিন সাদ। বাংলায় তরজমা করেন মাওলানা ওয়াসামা ইসলাম। দশটার মধ্যে খিত্তায় খিত্তায় মওজু তালিম করেন মুফতি ইয়াকুব নিজামুদ্দিন। যোহরের নামাজের পর বয়ান করবেন আরব মেহমান। তরজমা করবেন মোস্তফা খলিল। আসরের পরে বয়ান করবেন হাফেজ মঞ্জুর (নিজামুদ্দিন)। তরজমা করবেন মাওলানা রুহুল আমিন। আসরের নামাজের পর অনুষ্ঠিত হবে যৌতুকবিহীন বিয়ে। 

ঢাকা/রেজাউল/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর করব ন ইজত ম

এছাড়াও পড়ুন:

৫ দফা দাবিতে রংপুরের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, সড়ক অবরোধ

এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া চিকিৎসকের স্বীকৃতি দেওয়া বন্ধসহ ৫ দফা দাবিতে রংপুরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি সড়ক অবরোধ করে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেছেন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী, চালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। একই দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরাও কর্মবিরতিতে আছেন।

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহীদ মুখতার ইলাহী চত্বরে (মেডিকেল মোড়) সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ কর্মসূচিতে রংপুর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ, প্রাইম মেডিকেল কলেজ, রংপুর আর্মি মেডিকেল কলেজের কয়েক শ শিক্ষার্থী অংশ নেন। এক ঘণ্টার সড়ক অবরোধ শেষে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁরা রংপুর মেডিকেল কলেজের ভেতর পথসভা করেন। পরে মহাসড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, একই দাবিতে ১৭, ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি এই তিন দিন ধারাবাহিক বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছেন তাঁরা। ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ও শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করছেন। এসব দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

রংপুর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আবু রায়হান প্রথম আলোকে জানান, ৫ দফা দাবিতে তাঁরা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেছেন। তাঁরা আন্দোলন করছেন যাতে মানুষের সঙ্গে স্বাস্থ্য নিয়ে প্রতারণা করা না হয়। দেড় বছর বা ৬ মাসের একটি প্রশিক্ষণ নিয়ে কেউ চিকিৎসক লিখে মানুষের সঙ্গে যাতে প্রতারণা করতে না পারে।

শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো,
১. এমবিবিএস/বিডিএস ব্যতীত কেউ চিকিৎসক লিখতে পারবে না। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। বিএমডিসি নিবন্ধন শুধু এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। ২০১০ সাল থেকে হাসিনা সরকার ম্যাটসদের (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া শুরু করেছে। এই ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

২. উন্নত বিশ্বের চিকিৎসাব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওভার দ্য কাউন্টার বা ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করতে হবে। এমবিবিএস বা বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওটিসি লিস্টের বাইরের ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারবে না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি লিস্টের বাইরের কোনো ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না।

৩. স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে দ্রুত ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে সব শূন্য পদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে আগের মতো সপ্তম গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে। প্রতিবছর ৪-৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। চিকিৎসকদের বিসিএসে বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে।

৪. সব মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট স্কুল (ম্যাটস) ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ করতে হবে। ইতিমধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ