মাদারীপুরে মোটরসাইকেল পার্কিং করা নিয়ে তর্কের জেরে বাবা ও ছেলেকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার রাত আটটার দিকে সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগছাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত দুজন হলেন ওই এলাকার হানিফ মল্লিক (৫৮) ও তাঁর ছেলে রিয়াজুল মল্লিক (৩৫)।

ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার খাগছাড়া এলাকায় হোসনে আরা কুদ্দুস উচ্চবিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠান দেখতে আসেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। বিদ্যালয়ের ভেতর মোটরসাইকেল প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সেখানে পার্কিং করেন দক্ষিণ খাগছাড়া গ্রামের কামরুল কাজীর ছেলে সাকিব কাজী (২৩)। এর প্রতিবাদ করেন একই এলাকার ইতালিপ্রবাসী রিয়াজুল মল্লিক। এ নিয়ে রিয়াজুল ও সাকিবের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই জেরে গতকাল সন্ধ্যায় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে সাকিব তাঁর লোকজন নিয়ে রিয়াজুল ও তাঁর বাবার ওপর অতর্কিত হামলা চালান। কুপিয়ে জখম করা হয় বাবা ও ছেলেকে। তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। পরে রিয়াজুল ও তাঁর বাবা হানিফ মল্লিককে মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। ঘটনার পর থেকে হামলাকারীরা পালাতক।

আহত রিয়াজুল মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভেতর মোটরসাইকেল প্রবেশ করলে চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়। আমি শুধু এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি। তার জন্য ওরা (হামলাকারীরা) আমার বাবার ওপর হামলা করেছে। আমাকে কুপিয়ে জখম করেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে হামলার কথা অস্বীকার করে সাকিব কাজী বলেন, ‘আমি বা আমার লোকজন কেউ কোনো ধরনের হামলার সঙ্গে জড়িত নই। ষড়যন্ত্র করে এলাকায় হেয় করতে আমাদের নাম বলা হচ্ছে। আমার সঙ্গে রিয়াজুলের ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই।’

বিদ্যালয়টির সভাপতি সাগর মল্লিক বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে এভাবে হামলা চালাবে বুঝতে পারিনি। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। বিষয়টি আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। আশা করছি, তারা আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হামলার শিকার ভুক্তভোগী পরিবারকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে পুলিশ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঘটন র এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

চুরি-ছিনতাই-খুন প্রতিরোধে তৎপরতা বাড়িয়েছি: র‍্যাব ডিজি

সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, খুন ও ডাকাতি প্রতিরোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‍্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত ২টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে র‍্যাবের টহল ও চেকপোস্ট পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন তিনি।

র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র‌্যাবও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে কতিপয় দুষ্কৃতকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল হামলা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

শহিদুর রহমান বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস কায়দায় হামলা ও আক্রমণ চালাচ্ছে। এসব অপরাধ দমনে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র‌্যাব ফোর্সেসও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে। এরইমধ্যে র‌্যাবের সব ব্যাটালিয়ন তাদের নিজস্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় রোবাস্ট প্যাট্রোলিং পরিচালনা করছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিরতিহীনভাবে অতিরিক্ত টহল মোতায়েনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

র‍্যাব ডিজি বলেন, ব্যাটালিয়নগুলোতে নিজস্ব কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে ঢাকাসহ সারাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। দেশব্যাপী বিভিন্ন জায়গায় অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য র‌্যাব বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব মেট্রোপলিটন শহর, জেলা শহর ও উপজেলা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন, পর্যাপ্ত সংখ্যক টহল মোতায়েন এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান মহাপরিচালক।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যদের খুন, হত্যাচেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক কারবারি এবং চাঞ্চল্যকর সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। এসব গ্রুপের সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে মারামারি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য মোহাম্মদপুরের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান আনোয়ার ওরফে শুটার আনোয়ার ওরফে কবজি কাটা আনোয়ার, জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ সন্ত্রাসী বুনিয়া সোহেল এবং জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি সেলিম আশরাফি ওরফে চুয়া সেলিমসহ তাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

র‍্যাব ডিজি আরও বলেন, সব মেট্রোপলিটন শহর ও গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহরগুলোতে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানী থেকে ৪০ জন, ময়মনসিংহে ২৫ জন, রাজশাহী থেকে ২৪ জন, সিলেট থেকে ১৭ জন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ১৫ জনসহ মোট ১৮০ জন আসামিকে গ্রেপ্তার এবং অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এ ছাড়া সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ যেকোনো ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

বিএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ