সাভারের আশুলিয়ার গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নারী ও শিশুসহ ১১ জন দগ্ধ হয়েছেন। 

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে আশুলিয়ার গোমাইল এলাকার আমজাদ ব্যাপারীর বাড়িতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

দগ্ধরা হলেন- মোছা. সূর্য্য বানু (৫৫), মোছা. জহুরা বেগম (৭০), মো. মনির হোসেন (৪৩), সোহেল (৩৮), সুমন মিয়া (৩০), শিউলি আক্তার (২৫), শারমিন (২৫), ছামিন মাহমুদ (১৫), মাহাদী (০৭), সোয়ায়েদ (০৪) ও মোছা.

সুরাহা (০৩)। 

স্থানীয়রা জানান, দুই তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় সুমন দুই সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকেন। রাতে তার মা ও ভাই সোহেলের পরিবার সুমনের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। রাতে রান্নার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ধরে যায়। এসময় তাদের পরিবারের শিশু ও নারীসহ মোট ১১ জন দগ্ধ হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় নারী ও শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।  

আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সময় দগ্ধ সোহেল রানা উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, “শবে বরাত উপলক্ষে আমার ভাই সুমনের বাসায় পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসি। সেখানে পিঠা বানানোর সময় হঠাৎ সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এতে ঘরে আগুন ধরে গেলে পরিবারের সবাই দগ্ধ হয়।” 

আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালের কাস্টমার কেয়ার অফিসার মেসবাহ বলেন, “রাত সাড়ে ১০ টার দিকে নারী ও শিশুসহ দগ্ধ ১১ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিলো। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা/সাব্বির/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েটে হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সন্ত্রাসবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের ছাত্রকল্যাণ কেন্দ্র থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিভিন্ন আবাসিক হলের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণের পর আবার ছাত্রকল্যাণ কেন্দ্রে এসে শেষ হয়।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্ররাজনীতির কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ছাত্ররাজনীতির দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, বিএনপির দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘শিক্ষা-সন্ত্রাস একসাথে, চলে না চলে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, হামলার ঘটনার চার দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত চিহ্নিত সন্ত্রাসী কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছেন। সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। সরকারের একজন প্রতিনিধি আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে আসেননি। ছয় দফার প্রতিটি দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ক্যাম্পাসে অবস্থানের ঘোষণা দেন।

একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের উপাচার্য রাজনীতিমুক্ত কুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনীতির অনুপ্রবেশের অপচেষ্টায় জড়িত। ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের আক্রমণ থেকে তিনি আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার পরও ব্যর্থতার দায় নিতে অস্বীকার করেছেন তিনি। যথোপযুক্ত প্রমাণ থাকার পরও কুয়েট ছাত্রদল, স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের দ্বারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকে তিনি স্বীকার করেননি।’

সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয়ে আরেকজন বলেন, হামলার ঘটনায় যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করে তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। ছবি প্রদর্শনীর মাধ্যমে হামলার দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হলো না। তাঁরা স্বাভাবিক শিক্ষাক্রমে ফিরে যেতে চান। প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ সমস্যার সমাধানের দাবি জানান তিনি।

এর আগে গতকাল শুক্রবার রাতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভের এক পর্যায়ে ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। তার আগে বিকেলে ‘রক্তাক্ত কুয়েট ১৮.০২.২৫’ শিরোনামে ছবি প্রদর্শনী করা হয়। ছাত্রকল্যাণ কেন্দ্রে এই প্রদর্শনীতে আহত শিক্ষার্থীদের ছবি ও শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির আন্দোলনের বিভিন্ন ছবি প্রদর্শন করা হয়। গতকাল নতুন করে উপাচার্য ও সহ–উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠি দেন শিক্ষার্থীরা।

গত মঙ্গলবার ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাতে সংবাদ সম্মেলন করে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে উপাচার্য, সহ–উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার বেলা একটার মধ্যে দাবি পূরণের সময় বেঁধে দেন তাঁরা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার সম্পৃক্ততা পেলে আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও কোনো ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। সভায় ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ওই ঘটনার তদন্তে কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। ওই ঘটনায় বুধবার রাতে খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছে কুয়েট প্রশাসন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ