আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে গণ অধিকার পরিষদ কোনো আপস করবে না বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি বলেছেন, ভোট ও নির্বাচন নিয়ে অনেকের যত কথা শোনা যায়, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ নিয়ে তত আওয়াজ শোনা যায় না।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীতে গণ অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ ও গণমিছিলে এ কথাগুলো বলেন নুরুল হক। গণহত্যার বিচার ও গণহত্যাকারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে পুরানা পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এই বিক্ষোভ ও গণমিছিল শুরু হয়। নাইটিঙ্গেল মোড়, ফকিরাপুল মোড়, দৈনিক বাংলা মোড় ঘুরে মিছিলটি পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

বিক্ষোভ ও গণমিছিলে নুরুল হক বলেন, ভোট ও নির্বাচন নিয়ে অনেকের যত কথা শোনা যায়, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে তত আওয়াজ শোনা যায় না। ৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গণ অধিকার পরিষদ ডিসিদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে। ১২ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদের আমলে ১৬ বছরের লুটপাটের বিচারের দাবিতে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ চলবে। ১৯ ফেব্রুয়ারি জেলায় জেলায় বিক্ষোভ হবে।

গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের ছয় মাস পরও কেন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে রাজপথে নামতে হবে? গত ছয় মাসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারের জন–আকাঙ্ক্ষা পূরণে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে। গণ-অভ্যুত্থানে প্রকৃত অংশীজনদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করে সংস্কারের প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে গণ অধিকার পরিষদ কোনো আপস করবে না।

আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে নুরুল হক বলেন, ‘ছয় মাস যাবৎ স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি নেই। জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে। আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচন দিন। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন একটা ভালো পদক্ষেপ হতে পারে। এতে প্রশাসনের ফিটনেসও বোঝা যাবে।’

বিক্ষোভ ও গণমিছিলে গণ অধিকার পরিষদের সম্পাদক মো.

রাশেদ খাঁন বলেন, ক্ষমতায় এসে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব ছিল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা। কিন্তু ছয় মাসেও তারা আওয়ামী লীগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করলে জনগণ ক্ষমা করবে না। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, শেখ হাসিনার নির্দেশনায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে গণহত্যা চালিয়েছে। এই প্রতিবেদনের পর আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার এবং গণহত্যার বিচার করার অবস্থান তৈরি হয়েছে।

বিক্ষোভ ও গণমিছিলে সভাপতিত্ব করেন গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দীন। সঞ্চালনা করেন মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা। এ ছাড়া বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের সহসভাপতি ফারুক হাসান, উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম, আরিফ তালুকদার, মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ক ষ ভ ও গণম ছ ল ন র ল হক গণহত য ছয় ম স আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

নববর্ষে জাবিতে গাজার মানচিত্র এঁকে গণহত্যার অভিনব প্রতিবাদ 

বর্ষবরণের দিনে নানা উৎসবে মেতেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। এরই মাঝে ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে গাজার প্রতীকী মানচিত্র এঁকে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন জাবির একদল শিক্ষার্থী। 

সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনের মাঠে তারা এ মানচিত্র অঙ্কন করেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, টিএসসির সামনের মাঠে অঙ্কিত এ মানচিত্রে ব্যবহার করা হয়েছে নিমার্ণাধীন ভবনের পরিত্যক্ত কংক্রিট। সীমানা চিহ্নিত করা হয়েছে সাদা রঙে। এছাড়া লাল রঙে চিহ্নিত করা হয়েছে সেইসব অঞ্চল, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী গণহত্যা চালিয়েছে। মানচিত্রের মাঝখানে স্থাপন করা হয়েছে ফিলিস্তিনের পতাকা। এছাড়া শান্তির প্রতীক হিসেবে রোপণ করা হয়েছে একটি জলপাই গাছ।

আরো পড়ুন:

জাবিতে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত 

জাবিতে চালু হলো ইলেকট্রিক কার্ট, কমবে দুর্ভোগ

দুপুর সাড়ে ১২টায় এই প্রতীকী মানচিত্রের উদ্বোধন ও ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদসহ প্রক্টর, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

এ সময় প্রতিবাদ কর্মসূচির অন্যতম উদ্যোক্তা ৪৮তম ব্যাচের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার। আজ আমরা যেমন আনন্দের সঙ্গে পহেলা বৈশাখ উদ্‌যাপন করেছি, তেমনি গাজায় চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এবং সেখানকার মানুষের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এই মানচিত্র নির্মাণ করেছি। ভবিষ্যতেও এ ধরনের সামাজিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ আমরা চালিয়ে যাবো।”

উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, “এই আয়োজন আমাদের শিক্ষার্থীদের মানবিক বোধ, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং রাজনৈতিক সচেতনতার অনন্য দৃষ্টান্ত। একটি রাষ্ট্রের নিরীহ জনগণের ওপর যখন নির্বিচারে হামলা চলছে, তখন একজন শিক্ষার্থী হিসেবে নীরব থাকা নয়, বরং প্রতিবাদ জানানোই দায়িত্বশীলতার পরিচায়ক। এই প্রতীকী মানচিত্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা ন্যায় ও মানবতার পক্ষে তাদের স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরেছে।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নতুন মামলায় গতি পুরোনোতে স্থবির
  • ফেনীতে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে মানুষের ঢল
  • নববর্ষে জাবিতে গাজার মানচিত্র এঁকে গণহত্যার অভিনব প্রতিবাদ 
  • জুলাই আন্দোলনে গুলির নির্দেশ: সহকারী কমিশনার ও অতিরিক্ত এসপি গ্রেপ্তার
  • ট্রাইব্যুনালের মামলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম গ্রেপ্তার