উদ্যমে উত্তরণে শতকোটি দিবস উপলক্ষে সংস্কৃতিকর্মীদের মানববন্ধন
Published: 14th, February 2025 GMT
বিশ্বের শতাধিক দেশের মতো ১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দেশেও কয়েকটি সাংস্কৃতিক ও মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা উদ্যমে উত্তরণে শতকোটি দিবস (ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং) উদ্যাপন করেছেন। এ দিবস উদ্যাপনে মানববন্ধনের পাশাপাশি সৃজনশীল আয়োজন ‘হিম্মতি মাই’ আয়োজন করেছে সংগঠনগুলো।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় সংসদ ভবনের সম্মুখে সাংগাত বাংলাদেশ এবং ওবিআর বাংলাদেশের উদ্যোগে এ দিবস পালন করা হয়। এ সময় সংস্কৃতি ও মানবাধিকারকর্মীরা লাঠি মাটিতে ঠুকে আওয়াজ তুলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদী স্লোগান দেন। সাংগাতের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আয়োজনে অংশ নিয়ে নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির বলেন, ‘বিশ্বের এক শর বেশি দেশে ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং দিবস উদ্যাপন করা হচ্ছে। বাংলাদেশে ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসও। একই সঙ্গে আজ বিশ্বব্যাপী ভালোবাসা দিবসও উদ্যাপিত হচ্ছে। কিন্তু বছরে এক দিন গোলাপ উপহার দিয়ে ভালোবাসা জানিয়ে বাকি ৩৬৪ দিন নারীর প্রতি সহিংসতা এবং অসম্মান প্রদর্শন করে ভালোবাসা দিবস পালন অর্থহীন। নারীকে ঘরে বন্দী রাখা যাবে না, তারা সম্মানের সঙ্গে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে। তাই নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে যুক্ত হতে হবে।’
প্রাগ্রসরের নির্বাহী পরিচালক ফওজিয়া খোন্দকার বলেন, এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও নারীকে তার প্রাপ্য সম্মানের জন্য প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হচ্ছে। পিতৃতান্ত্রিক সমাজের সব প্রতিষ্ঠান নারীকে দমন করার যন্ত্র হিসেবেই কাজ করে সব সময়। এই অন্যায় ও অন্যায্যতার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে আরও জোরালোভাবে।
এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন নারী সংস্কারবিষয়ক কমিশনের সদস্য নীরূপা দেওয়ান, নারীপক্ষের সদস্য কামরুন নাহার, প্রাগ্রসরের নির্বাহী পরিচালক ফওজিয়া খোন্দকার, ডিয়াকোনিয়ার নির্বাহী পরিচালক খোদেজা সুলতানা, কর্মজীবী নারীর প্রকল্প সমন্বয়ক কাজী গুলশান আরা, থিয়েটার অ্যাকটিভিস্ট রিতু সাত্তার, একশনএইড বাংলাদেশের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার নুরুননাহার বেগম, থিয়েটার অ্যাকটিভিস্ট নায়লা আজাদ, পথিকৃৎ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা হকসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বাদাবন সংঘ, কর্মজীবী নারী, ব্লাস্ট, নারীপক্ষ, বহ্নিশিখা, পথিকৃৎ ফাউন্ডেশন, সম্ভব ফাউন্ডেশন, অবয়ব, খাগড়াপুর মহিলা কল্যাণ সমিতি, ডিয়াকোনিয়া, একশনএইড বাংলাদেশ, স্পার্ক (সাপোর্টিং পিপল অ্যান্ড রিবিল্ডিং কমিউটিস), হিম্মতি মাই, ঋদ্ধ ফাউন্ডেশন, সুইস কন্ট্যাক্টের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সমকালের ঈদসংখ্যা প্রকাশ উপলক্ষে প্রীতি সম্মিলন
দেশের প্রথিতযশা লেখক-চিন্তক-শিল্পী-গবেষকদের রচনা এবং শিল্পীদের শিল্পকর্ম ও অলংকরণে সমৃদ্ধ সমকাল ঈদসংখ্যা ২০২৫ এলো বাজারে। গতকাল সোমবার ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত জমজমাট ইফতারসন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদসংখ্যা প্রকাশ করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক রওনক জাহান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান মানবাধিকারকর্মী শিরীন হক, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, গবেষক ও প্রাবন্ধিক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, টাইমস মিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ, সমকাল সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শরীফুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সমকালের উপসম্পাদক মাহবুব আজীজ।
এতে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশ জাসদ সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, কবি ও ঔপন্যাসিক হাসনাত আবদুল হাই, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব খালিকুজ্জামান, কবি মোহন রায়হান ও কথাশিল্পী নাসরীন জাহান।
ঈদসংখ্যার লেখকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন– সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, ইরাজ আহমেদ, উম্মে ফারহানা, রেজানুর রহমান, কুমার চক্রবর্তী, সেলিম জাহান, মযহারুল ইসলাম বাবলা, শামীম আমিনুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, মোহিত কামাল, সুমন্ত আসলাম, শাহনাজ মুন্নী, দীপু মাহমুদ, রুমা মোদক, ইমরান খান, কিযী তাহ্নিন, হামিম কামাল, মাহবুব ময়ূখ রিশাদ, মেহেদী উল্লাহ, মণিকা চক্রবর্তী, পিওনা আফরোজ, আবদুস সেলিম, হোসেন আবদুল মাননান, সুরমা জাহিদ, শোয়েব সর্বনাম, ফারুক মঈনউদ্দীন, শাকুর মজিদ, কামরুল হাসান, কাজী আজমিরী, আফরোজা সোমা, আবিদ আনোয়ার, সোহরাব হাসান, নাসির আহমেদ, বিমল গুহ, তুষার দাশ, ফারুক মাহমুদ, আশরাফ আহমদ, রেজাউদ্দিন স্টালিন, মারুফুল ইসলাম, মারুফ রায়হান, আলফ্রেড খোকন, শোয়াইব জিবরান, তুষার কবির, চঞ্চল আশরাফ, আরিফ মঈনুদ্দিন, মোশতাক আহমেদ, মতিন রায়হান, লোপা মমতাজ, ওবায়েদ আকাশ, মাহমুদ হাফিজ, শাহেদ কায়েস, রাজু আলীম, জুনান নাশিত, আহমদ জামাল জাফরী, নভেরা হোসেন, আলপনা আক্তার, পিয়াস মজিদ, অরবিন্দ চক্রবর্তী, নিজাম বিশ্বাস, নাহিদ ধ্রুব, কে এম আসাদ, মিনাক্ষী বিশ্বাস, রাগীব নাঈম, রফিক আজম, মীর সামী ও আলিফ রিফাত।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন সমকালের প্রকাশক আবুল কালাম আজাদ, উপসম্পাদক শাহেদ চৌধুরী, সহযোগী সম্পাদক জাকির হোসেন, শেখ রোকনসহ সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের বিশিষ্টজন।
ঈদসংখ্যা হাতে নিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রত্যেকে সমকালের মননশীল ও ঋদ্ধ ঈদ আয়োজনের প্রতি শুভকামনা ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, সমকালের ঈদ সংখ্যায় সব ধরনের লেখা থাকে। এবারও এই ঈদ সংখ্যা প্রকাশ করায় সমকালকে ধন্যবাদ জানাই।
রওনক জাহান বলেন, ‘বিদেশে থাকাকালে দেখেছি বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে আলাদা কোনো আয়োজন হয় না। এ দেশে এই রেওয়াজ আছে। আমি ছোটবেলা থেকেই ঈদসংখ্যা পড়ি।’
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ছিল না। কয়েক দশক ধরেই মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি তৈরি হয়েছে। হাজার হাজার মানুষের সংগ্রামের নির্যাস থেকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা পাই। একাত্তরের স্বপ্ন চেতনাকে তুলে ধরতে না পারার কারণেই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এবারের ঈদ সংখ্যায় আমার লেখা রয়েছে। এই লেখায় অনেক সংগ্রামের কথা তুলে ধরেছি। আমার এক বিদেশি বন্ধু আমাকে নিয়ে একটা বায়োগ্রাফি লিখেছেন। সেই লেখা থেকেই এই সংখ্যায় লেখার অনুপ্রেরণা পেয়েছি।
সমাপনী বক্তব্যে সমকাল সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী বলেন, পত্রিকাকে তাড়াহুড়োর সাহিত্য বলা হয়। ঈদ সংখ্যা হলো ধীরগতির সাহিত্য। এটি প্রকাশ করা হয় পাঠকের কাছে দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে।