ডিবি পরিচয়ে ডাকাতি, স্বর্ণাংকারসহ নগদ টাকা লুট
Published: 14th, February 2025 GMT
মধ্যরাতে অস্ত্র হাতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে পাবনা পৌর এলাকার দিলালপুর পাথরতলা মহল্লায় ব্যবসায়ী জাকির হোসেনের বাসায় দুর্ধর্ষ ডাকাতি হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ভোররাত সাড়ে তিনটার দিকে এই ডাকাতি সংগঠিত হয়। ডাকাতদল নগদ টাকা স্বর্ণালঙ্কারসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
ভুক্তভোগী ইলেকট্রনিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, “মধ্যরাতে বাসার প্রধান গেটের তালা কেটে ভেতরে প্রবেশ করেন তারা। প্রথম ফ্লাটের নিচতলার ভাড়াটিয়ার বাসায় ঢোকে। এরপরে দ্বিতীয় তলায় আমার ফ্লাটে আসে। প্রশাসনের পরিচয় দিয়ে আমার হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে বাড়িতে টাকা-পয়সা, সোনা-দানা যা আছে বের করে দিতে বলে। যেহেতু পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে ছিল না- আলমারির চাবির বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তারা প্রতিটি রুমে প্রবেশ করে আলমারি ভেঙে নগদ অর্থ ও স্বার্ণাংকার নিয়ে গেছে। বাসার তৃতীয় ও সবার উপরে চতুর্থ তলাতে সাবেক ডেপুটি স্পিকারের পরিবার বসবাস করতেন। আমরা এই বাড়ির ভাড়াটিয়া।”
জাকির হোসেন আরো বলেন, “তারা যাওয়ার সময় বেশ মানবতা দেখিয়ে গেছেন। হাতকড়া খুলে বেশ প্রশংসা করে বললেন, যা তোকে ছেড়ে দিলাম থানায় নিলাম না।”
তিনি বলেন, “সকালে পুলিশকে জানিয়েছি তারা এসেছেন তদন্ত করছেন। এলাকার প্রতিবেশিদের গেটে গেটে তালা দেয়া ছিল। কেউ যে বের হবেন তার উপায় ছিল না। প্রশাসন তদন্ত করে দেখবেন এবং দ্রুতই ডাকাত চক্রকে মালামাল সহ গ্রেপ্তার করবেন এটাই আমাদের চাওয়া।”
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একই বাসার নিচতলার ভাড়াটিয়া সবুজ হোসেন বলেন, “ডিবি পরিচয় দিয়ে আমাদের সাথে কথা বলেছেন। তারা টুকুর ছেলে রঞ্জনের ফ্লাট কোথায় জাতে চাইছিল। আমাদের বাসার ভেতরে ঢুকেছিল, তবে কিছু নেয়নি। আমাদের সবার মোবাইল ফোন প্রথমেই নিয়েছে তারা। তাদের কাছে দরজা তালা কাটার সব কিছুই ছিল।”
এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, “এই ধরনের ঘটনা সত্যই অপ্রত্যাশিত। প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে চুরি বা ডাকাতি করা এটা আমরা হতে দিতে পারি না। ঘটনার শোনার সাথে প্রশাসনের সকল দপ্তর মাঠে কাজ করছে পুলিশ। এলাকার সমস্ত সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। আশা করছি খুব দ্রুতই এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
ঢাকা/শাহীন/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানিদের বাংলাদেশ ভ্রমণে ‘ভিসা ক্লিয়ারেন্স’ লাগবে না
পাকিস্তানের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে এখন আর ভিসার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন হবে না। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আগে বাংলাদেশের ভিসার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স নিতে হতো পাকিস্তানিদের। এই ক্লিয়ারেন্স ছাড়া তাদের ভিসা দেওয়া সম্ভব ছিল না।
সম্প্রতি এই নিয়ম প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং এখন পাকিস্তানিরা ক্লিয়ারেন্স ছাড়াই ভিসা পাচ্ছেন।
২০২৪ সালে পাকিস্তানিদের জন্য ২ হাজার ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পরই ভিসা ইস্যু করা হতো। এখন এই নিয়ম বাতিল হয়েছে।
এদিকে, পাকিস্তানও বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করেছে। সম্প্রতি পাকিস্তান ১২৬টি দেশের জন্য ভিসা ফি মওকুফ করেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশও আছে।
পাকিস্তানি অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত অন্য যেকোনো দেশের নাগরিকরা যাতে সহজেই বাংলাদেশে আসতে পারেন, সে উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সম্প্রতি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।
সুরক্ষা সেবা বিভাগের বহিরাগমন শাখার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগে একজন পাকিস্তানি অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত নাগরিককে বাংলাদেশি ভিসা পেতে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হতো। এমনও হয়েছে ভিসাপ্রার্থীর আবেদন অনুমোদন পেতে বছরও পার হয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
তিনি বলেন, “আগে এক জন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত নাগরিক সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে ভিসার আবেদন করার পর তা ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হতো। সেখান থেকে সেটা আসত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এই মন্ত্রণালয় সেটা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠাত একটি গোয়েন্দা সংস্থায়। সেই গোয়েন্দা সংস্থা ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার পর ওই ব্যক্তি বাংলাদেশে প্রবেশ করার ভিসা বা অনুমতি পেতেন।”
বর্তমান সরকারের এ উদ্যোগের ফলে এখন আর সময়ক্ষেপণ হবে না। পাকিস্তানি বা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত অন্য কোনো দেশের নাগরিক বাংলাদেশে আসার ভিসা পাবেন কি না, সেটা শুধু সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের বিবেচনার বিষয় হিসেবে থাকবে। ভিসা দেওয়া এবং প্রত্যাখ্যান করার এখতিয়ার এখন থেকে তাদের হাতেই থাকবে।
পাকিস্তানের নাগরিকদের ভিসা ইস্যু সহজ করা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, তাদের ভিসাপ্রাপ্তি সহজ করতে এর আগে সুরক্ষা সেবা বিভাগের জারি করা (১১/০২/২০১৯ তারিখ) আদেশটি বাতিল করা হয়েছে। এখন থেকে পাকিস্তানি অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত অন্য দেশের নাগরিকদের ভিসার আবেদন বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস বা মিশন সরাসরি নিষ্পত্তি করতে পারবে।
এর আগে ২০১৯ সালে পাকিস্তানি পাসপোর্টধারী অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত যেকোনো দেশের নাগরিককে ভিসা দেওয়া প্রসঙ্গে জারি করা আদেশে বলা হয়েছিল, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় পাকিস্তানি পাসপোর্টধারী অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত পৃথিবীর যেকোনো দেশের নাগরিককে সুরক্ষা সেবা বিভাগের ‘অনাপত্তি’ নিয়ে ভিসা দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হলো।
ঢাকা/হাসান/রফিক