ফরিদপুরে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে মানুষের ঢল
Published: 14th, February 2025 GMT
ফরিদপুরের সদরপুরে আটরশী বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে বিশ্বওলি হজরত মাওলানা শাহ্ সুফি খাজাবাবা ফরিদপুরির ( কু ছে আ) চার দিনব্যাপী পবিত্র ওরস শুরু হচ্ছে শনিবার। শনিবার ওরস শুরু হলেও একদিন আগে শুক্রবার থেকেই দরবার শরীফে মানুষের ঢল নেমেছে। কয়েক কিলোমিটার এলাকাব্যাপী তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সড়ক ও নৌপথে লাখো আশেকান ও জাকেরানরা জাকের মঞ্জিলে সমবেত হয়েছেন।
এর আগে শুক্রবার লক্ষাধিক মানুষের অংশগ্রহণে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে জুমার নামাজ আদায় করা হয়। নামাজের আগে ওরস উপলক্ষে দরবার শরিফের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে সাংবাদিকদের ওরস বিষয়ে বিভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
বিশ্ব জাকের মঞ্জিল কর্মী গ্রুপের প্রধান সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম শাহিন জানান, শনিবার ফজর নামাজের পর ফাতেহা শরীফ পাঠ ও তরিকতের আমল পালনের মধ্য দিয়ে ওরসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। প্রতিদিন ফরজ আমলের পাশাপাশি পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত, জিকির আজগার, মোরাকাবা-মোশাহেদা, ওয়াজ নসিহত, ওয়াজ মাহফিল এবং সুন্নাত এবাদতের পাশাপাশি নফল এবাদত চলবে।
তিনি বলেন, যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পবিত্র ওরস সফলভাবে আয়োজনে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দেশ-বিদেশের বিপুল সংখ্যক ভক্ত-মুরিদান এবারের ওরসে অংশ নেবেন। তাদের জন্য পঁচিশ হাজার সেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে তিন শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।
বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের কর্মী গ্রুপের বৃহত্তর ফরিদপুরের প্রধান ও ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী জানান, প্রতিবছরের মতো এ বছরও অসংখ্য আশেকান-জাকেরান, ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিরা বিশ্ব দরবার শরিফে উপস্থিত হচ্ছেন। ওরসে আসা সবার জন্য তবারকের ব্যবস্থা, রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা ও বিভিন্ন যানবাহন পার্কিংয়ের জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য নেওয়া হয়েছে বাড়তি ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, বিশ্ব অলি হজরত মাওলানা শাহ সুফি খাজাবাবা ফরিদপুরী (কু ছে আ) কেবলাজান ছাহেবের স্থলাভিষিক্ত পীরজাদা মাহফুজুল হক মুজাদ্দেদী ওরস চলাকালীন চার দিনই আশেকান জাকেরানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রদান করবেন। মঙ্গলবার ফজর নামাজ পর শাহসুফি ফরিদপুরী (কু ছে আ) রওজা জিয়ারত করা হবে। এরপর বিশ্ব শান্তি কামনায় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে চার দিনের এই ওরস শরীফ শেষ হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ন ষ র ঢল ব যবস থ র ওরস
এছাড়াও পড়ুন:
পাঁচ স্তরের নিরাপত্তায় প্রস্তুত শোলাকিয়া ঈদগাহ, থাকছে বিশেষ ট্রেনও
দেশের সবচেয়ে বড় ঈদুল ফিতরের জামাতের জন্য প্রস্তুত কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। এবার ১৯৮তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। মুসল্লিদের জন্য এ বছর পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা দেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঈদের দিন ঈদগাহে আসার প্রতিটি রাস্তায় থাকবে তল্লাশিচৌকি। মোতায়েন থাকবে বিপুলসংখ্যক র্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্য। সাদাপোশাকে দায়িত্ব পালন করবেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। থাকবে সেনাসদস্যদের বিশেষ টহল। সব মিলিয়ে দেড় হাজারের ওপরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন উপস্থিত থাকবেন।
নজরদারির জন্য মাঠে ইতিমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে ছয়টি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। এ ছাড়া ঈদ জামাতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ক্যামেরাযুক্ত শক্তিশালী চারটি ড্রোন মুসল্লিদের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করবে। তিনটি আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে মেটাল ডিটেক্টরের তল্লাশির মাধ্যমে মুসল্লিদের মাঠে প্রবেশ করানো হবে। ঈদগাহে মুসল্লিরা শুধু জায়নামাজ ও জরুরি প্রয়োজনে মুঠোফোন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে ছাতা, ব্যাগ ও অন্যান্য ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ।
মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে ঈদের জামাত আদায়ের সুবিধার্থে পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে মাঠ। সারির দাগ কাটা হয়েছে। সীমানাপ্রাচীরসহ মাঠের ভেতরের গাছগুলোকে রং করা হয়েছে। মিম্বরের চারপাশে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থায়ী অজুখানার পাশাপাশি নির্মাণ করা হয়েছে অসংখ্য অজুখানা। সুপেয় পানির জন্য মাঠের বিভিন্ন স্থানে ও আশপাশে স্থাপন করা হয়েছে টিউবওয়েল ও পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির ট্যাংকি। মুসল্লিদের জরুরি প্রয়োজন সারতে রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত অস্থায়ী শৌচাগারের ব্যবস্থা। মুসল্লিদের স্বাগত জানানোর জন্য নির্মাণ করা হয়েছে বেশ কয়েকটি তোরণ।
সকাল ১০টায় ঐতিহ্য ও রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরুর আগে পরপর তিনবার বন্দুকের ফাঁকা গুলি ছুড়ে এ ময়দানে শুরু হবে ঈদুল ফিতরের জামাত। জামাতে ইমামতি করবেন মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে ঈদের দিন কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ ও ভৈরব-কিশোরগঞ্জ রোডে শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে।
শনিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ মাঠ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, র্যাব-১৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি নাইমুল হাসান শোলাকিয়া মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ফৌজিয়া খান বলেন, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবারের ঈদ জামাত হচ্ছে। জনগণের স্বতঃস্ফূর্তিতে এবার মুসল্লিদের সংখ্যা বিগত দিনের চেয়ে বেশি হবে বলে আমরা আশা করছি। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ১৯৮তম পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে।’
ঈদ স্পেশাল ট্রেনের ব্যাপারে ডিসি বলেন, ‘ঈদ স্পেশাল-১১ ট্রেনটি ভৈরব থেকে ছাড়বে সকাল পৌনে ছয়টায় এবং কিশোরগঞ্জ পৌঁছাবে সকাল আটটায়। আর শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল-১২ ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাবে দুপুর ১২টায়, যা ভৈরব পৌঁছাবে বেলা দুইটায়। এ ছাড়া শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল-১৩ ট্রেনটি ময়মনসিংহ থেকে ছাড়বে সকাল পৌনে ছয়টায় ও কিশোরগঞ্জ পৌঁছাবে সকাল সাড়ে আটটায়। অন্যদিকে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল-১৪ ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাবে দুপুর ১২টায় এবং ময়মনসিংহে পৌঁছাবে বেলা তিনটায়।’
দেশের সবচেয়ে বড় ঈদুল ফিতরের জামাতের জন্য প্রস্তুত কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান