শ্যামনগরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে রক্ষা পেল ‘মিজান হুজুরের আস্তানা’ ও মাদ্রাসা
Published: 14th, February 2025 GMT
ছবি: প্রথম আলো
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রস্তাবিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিটি দায়সারা
নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতির একটি খসড়া তৈরি করে নাগরিকদের মতামত চেয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এটি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাড়াহুড়ায় করা প্রস্তাবিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি দায়সারা হয়েছে। এতে দেশের জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না। বরং জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবসার স্বার্থ রক্ষা করবে এবং তারা আরও বেশি মুনাফাভোগী হবে। জনগণের ওপর নতুন করে আর্থিক চাপ বাড়বে।
উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোটের (ক্লিন) উদ্যোগে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতির একটি খসড়া নিয়ে রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আজ রোববার বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে উপস্থাপন করা লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা প্রণয়নে সব সময় সমন্বয়হীনতা লক্ষ করা যায়। এর ফলে এ খাতের সফলতা অধরা থেকে যাচ্ছে এবং ব্যয়বহুল জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর আরও নির্ভরশীল হতে হচ্ছে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, প্রস্তাবিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালাটি প্রণয়নে সরকার বেশ তাড়াহুড়ো করছে। আগের সরকারের সময় করা খসড়া কিছুটা কাটছাঁট করে এটি তৈরি হয়েছে। সরকারের ভিন্ন ভিন্ন নীতিমালায় আলাদা পরিকল্পনা থাকায় বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হতে পারেন। তাই সবার আগে জাতীয় জ্বালানি নীতিমালা তৈরি করা দরকার।
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চের পরিচালক মো. শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী বলেন, নীতিমালার খসড়ায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি পরিকল্পনাগুলো খুবই অস্পষ্ট। কোন উৎস থেকে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে, তা উল্লেখ করা নেই। শুধু কার্বন নিঃসরণ নয়, অর্থনৈতিক বিবেচনাতেই নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিকাশ দরকার। বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রযুক্তির দাম কমছে। এতে এ খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ কমে আসছে। সরকারের তরফ থেকে শুধু বাস্তবসম্মত নীতি সহায়তা প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ক্লিনের প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী। তিনি বলেন, সরকার একটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা প্রণয়নে চার বছরের বেশি সময় নিয়েছে। আর মতামত দিতে নাগরিকদের মাত্র ২১ দিন সময় দিয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, খসড়া নীতিমালাটিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য কমানো হয়েছে, যা বাস্তবসম্মত নয়। ২০৩০ সালের মধ্যে ৬ হাজার ১৪৫ মেগাওয়াট (২০%) এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ১৭ হাজার ৪৭০ মেগাওয়াট (৩০%) ধরা হয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন কৌশল বা অর্থায়ন ও বিনিয়োগ পরিকল্পনা খসড়ায় নেই। নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কোম্পানিগুলো ১০ বছর সম্পূর্ণ এবং ৫ বছর আংশিক কর অব্যাহতি পেলেও সাধারণ নাগরিকেরা কোনো কর–সুবিধা বা প্রণোদনা পাচ্ছেন না। অন্যদিকে অন্যান্য দেশে ছাদে সৌর প্যানেল স্থাপনে সরাসরি ৩০ শতাংশ পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়, কিন্তু প্রস্তাবিত নীতিমালায় এমন কোনো সুবিধা রাখা হয়নি।
ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ এশিয়া প্যাসিফিকের সমন্বয়কারী বারিশ হাসান চৌধুরী বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালার সংজ্ঞাগুলো অনেক ক্ষেত্রেই বিভ্রান্তিকর। এতে কার্বন নির্গমন হ্রাসের কথা উল্লেখ করেছে, তবে নির্দিষ্ট পরিমাণ বা সময়সীমা নির্ধারণ করেনি। নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছাড়া এই নীতিমালা একধরনের দিকনির্দেশনাহীন নৌকার মতো, যা বাস্তবে কার্যকর ফল দিতে পারবে না।