গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে ওই ভূখণ্ডের দখল নিতে চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এ ধরনের প্রস্তাব সামনে এনেছেন। এর জবাবে ফিলিস্তিনের ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে আরব দেশগুলো বিকল্প প্রস্তাব আনতে জরুরি চেষ্টা চালাচ্ছে। এর নেতৃত্ব দিচ্ছে সৌদি আরব। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ১০টি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনের ভবিষ্যৎ নিয়ে এ মাসেই সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করতে যাচ্ছে সৌদি আরব, মিসর, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো আরব দেশগুলো। এ বৈঠকে ফিলিস্তিন নিয়ে খসড়া নানা প্রস্তাব আলোচনা হতে পারে। এসব প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে উপসাগরীয় দেশগুলোর নেতৃত্বে ফিলিস্তিন পুনর্গঠন তহবিল গঠন। এ ছাড়া হামাসকে পাশ কাটিয়ে একটু চুক্তি সম্পাদন করা। পাঁচটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের ‘নির্মূল’ করে জর্ডান ও মিসরে পুনর্বাসনের ট্রাম্পের পরিকল্পনায় আরব বিশ্বের দেশগুলো বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। ট্রাম্পের এ প্রস্তাব তৎক্ষণাৎ প্রত্যাখ্যান করেছে কায়রো ও আম্মান। তারা বলেছে, এ ধরনের পরিকল্পনা করা হলে তা এ অঞ্চলকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে।

সূত্র জানায়, ট্রাম্পের পরিকল্পনায় সৌদি আরব বেশি হতাশ। কারণ, এই পরিকল্পনায় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার শর্ত হিসেবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের জন্য তাদের দাবি টিকবে না।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স সৌদি আরব, মিসর, জর্ডানসহ আরব বিশ্বের ১৫টি সূত্রের সঙ্গে কথা বলেছে। তারা ট্রাম্পের পরিকল্পনার বদলে বিকল্প প্রস্তাব আনার জন্য দ্রুত কাজ করার কথা বলেছে। এর মধ্যে সৌদি আরব সরকারের সূত্র বলেছে, গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে ইতিমধ্যে কমপক্ষে চারটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। তবে ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিকল্প হিসেবে এ মুহূর্তে মিসরের একটি খসড়া প্রস্তাব আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে।

মিসরের খসড়া প্রস্তাব

মিসরের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, একটি জাতীয় ফিলিস্তিনি কমিটি গঠন করে গাজার শাসন করা হবে, যাতে হামাসের কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকবে না। ফিলিস্তিনিদের বিদেশে পুনর্বাসনের পরিবর্তে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে গাজায় পুনর্গঠন কাজ চালানো হবে। এরই ধারাবাহিকতায় দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের দিকে এগোনো হবে।

মিসরের তিনজন নিরাপত্তা সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য জানিয়েছে। সৌদি আরব, মিসর, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিরা এ প্রস্তাব পর্যালোচনা করে রিয়াদে এ নিয়ে আলোচনায় বসবেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি এ পরিকল্পনা আরব সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে।

এ ক্ষেত্রে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান কী ভূমিকা রাখবেন, সেটিই এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। জর্ডানের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বলেছি, আমরা একটি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি। আমাদের সৌদি যুবরাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’

২০১৬ সালে ট্রাম্পের প্রথম প্রশাসনের সঙ্গে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের উষ্ণ সম্পর্ক ছিল। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রশাসনের সঙ্গেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম আঞ্চলিক অংশীদার হিসেবে যুবরাজ ব্যবসা এবং বৈশ্বিক ক্ষমতার রাজনীতির মাধ্যমে সৌদি আরবের সম্পর্ক সম্প্রসারণ করছেন।

সৌদি আরবের উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে এ মাসে একটি সম্মেলন হতে যাচ্ছে, যেখানে ট্রাম্পের যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একটি সাক্ষাতের আয়োজন করছে রিয়াদ।

আরব দেশগুলোর পরিকল্পনা নিয়ে হোয়াইট হাউস কোনো মন্তব্য করেনি। তবে গত বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘এই মুহূর্তে একমাত্র পরিকল্পনা, যদিও তারা এটি পছন্দ করে না, কিন্তু একমাত্র পরিকল্পনা হলো ট্রাম্পের পরিকল্পনা। তবে তাদের যদি আরও ভালো পরিকল্পনা থাকে, এখনই উপস্থাপন করার সময়।’

এ বিষয়ে আরব দেশগুলোর মুখপাত্ররা কোনো মন্তব্য করেননি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য বর জ ব কল প

এছাড়াও পড়ুন:

পার্বত্য উপদেষ্টার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতসহ চার বিদেশি

পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রকৃতি ও সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতসহ চার বিদেশি প্রতিনিধিদল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বান্দরবান জেলা পরিদর্শনে আসেন।

প্রতিনিধিদল বান্দরবানের নীলাচলে এসে পৌঁছালে সেখানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমার সঙ্গে তারা সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন।

পার্বত্য চট্টগ্রামের অপার সৌন্দর্যের বিষয়ে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা প্রতিনিধিদলকে ধারণা দেন এবং বান্দরবান জেলার পর্যটন স্পট নীলাচল, মেঘলা ও পর্যটনের রূপবৈচিত্র্যময় অপার সৌন্দর্যের ভিউগুলো  তাদের ঘুরিয়ে দেখান।

আরো পড়ুন:

‌‘নয় মাসে অর্জন করেছি এক চিমটি ঘৃণা, একমুঠো অবিশ্বাস ও এক আকাশ ভালোবাসা’

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিবের সাক্ষাৎ
আমাদের সম্পর্ক হিমায়িত ছিল, বাধা অতিক্রম করতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ইতালিয়ান, নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের প্রতিনিধিদের মধ্যে ইইউই অ্যাম্বাসেডর মাইকেল মিলার ও মিজ ক্যাটেরিনা মিলার, ইতালিয়ান নাগরিক আন্তেনিও আলেসান্দ্রো ও পাওলা বেনিফিওর এবং ডাচ আইনজীবী এন্ড্রে কার্স্টেন্স উপস্থিত ছিলেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, উপদেষ্টা পার্বত্য চট্টগ্রামে পাঁচ দিনের সরকারি সফরে বৃহস্পতিবার বান্দরবান এসে পৌঁছান।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য উপদেষ্টার সহধর্মিণী নন্দিতা চাকমা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানসামা লুসাই, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম, যুগ্ম সচিব কঙ্কন চাকমা, বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার, উপদেষ্টার একান্ত সচিব (উপসচিব) খন্দকার মুশফিকুর রহমান, সহকারী একান্ত সচিব (সিনিয়র সহকারী সচিব) শুভাশিস চাকমা, বান্দরবান জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ