গভীর রাতে বিআরটিএ ভবনে আগুন, ‘পেট্রলবোমা’ ছোড়া হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে
Published: 14th, February 2025 GMT
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বাইরে থেকে ভবনের নিচতলায় ‘পেট্রলবোমা’ নিক্ষেপ করে এই অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল রাত দুইটার দিকে চার–পাঁচ ব্যক্তি তুরাগের দিয়াবাড়ির বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো-৩ সার্কেলের ১ নম্বর ভবনের সামনে যান। তাঁরা ভবনের নিচতলায় ‘পেট্রলবোমা’ নিক্ষেপ করলে আগুন ধরে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আগুন নেভান।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, বাইরে থেকে কাচের বোতলে পেট্রল ভরে ভবনটিকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। এতে ভবনটির ফটকে আগুন ধরে যায়। কিছু বৈদ্যুতিক তার পুড়ে গেছে। নিচতলার বিদ্যুৎ ও জেনারেটরের লাইনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে আগুন ওপরের দিকে যেতে পারেনি। কোনো হতাহতের ঘটনাও ঘটেনি। এই আগুনে বিআরটিএর ৪০-৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার (এসি) সাদ্দাম হোসেন আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পেরেছেন, চার–পাঁচজন যুবক পেট্রল, অকটেন বা এ–জাতীয় দাহ্য কোনো পদার্থ বোতলে ঢুকিয়ে বিআরটিএ ভবনের উদ্দেশে মেরেছেন। এ ঘটনায় তুরাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে: টিউলিপ
বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিক জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি ও ও সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আপনারা বুঝবেন যে, এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারকে কোনো প্রসঙ্গ বা মন্তব্যের মাধ্যমে আমি বিশেষ গুরুত্ব দিতে পারি না। এটা পুরোপুরি আমাকে হয়রানি করার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। এমন কোনো প্রমাণ নেই যে আমি ভুল কিছু করেছি।’ খবর-বিবিসি
বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে সোমবার লন্ডনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বলেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষগুলোর কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। পুরোটা সময় তারা মিডিয়া ট্রায়াল চালিয়েছে। আমার আইনজীবীরা উদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছিলেন। তবে তারা কখনও এর জবাব দেয়নি।’
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা তিনটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা এবং রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা পৃথক তিন মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে রোববার এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব। আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেল কিনা, সে-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত। ১০ কাঠা প্লট নেওয়ার অন্য অভিযোগে শেখ রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের একজন সহকারী পরিচালক। মামলায় শেখ হাসিনা, টিউলিপসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়।
এর আগে জানুয়ারির মাঝামাঝিতে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) ছিলেন। দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে।
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপের খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কের বিষয়ে বারবার প্রশ্ন ওঠায় টিউলিপ সিদ্দিক মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
সম্প্রতি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠে। এরপর নিজের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগকে তদন্তের আহ্বান জানান টিউলিপ। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস।
টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যে তদন্ত হয়েছে সেখানে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস তার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি। কেয়ার স্টারমার অফিসিয়াল চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিককে বলেন, ‘আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার সময় এটা পরিষ্কার করতে চাই যে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস আমাকে আশ্বস্ত করেছেন- তিনি আপনার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি এবং আর্থিক অসঙ্গতির কোনো প্রমাণ খুঁজে পাননি।’