গণ–অভ্যুত্থানের ছয় মাস পর ছেলের লাশ পেয়ে কান্না থামছে না মায়ের
Published: 14th, February 2025 GMT
গণ–অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন (গত বছরের ৫ আগস্ট) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিতে প্রাণ হারান মো. হাসান (১৯)। এরপর ছয় মাসের বেশি সময় তাঁর মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পড়ে ছিল। গত বুধবার তাঁর মরদেহ শনাক্ত করে পরিবার। এরপর থেকে হাসানের মা গোলেনুর বেগমের মায়ের কান্না যেন থামছেই না।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে হাসানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ পরিবারের কাছে তুলে দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সন্তানের মরদেহ পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাসানের মা গোলেনুর বেগম। এ সময় পাশেই ছিলেন তাঁর বাবা মো.
মনির হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলে ৫ আগস্ট হারিয়ে যায়। পরে তাকে আমরা প্রায় সব হাসপাতাল, ক্লিনিক, কবরস্থান, আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামসহ আমাদের পক্ষ যত জায়গায় যাওয়া সম্ভব, সবখানে খুঁজেছি কিন্তু কোথাও তাকে পাইনি। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে যাই এবং কাপড়চোপড় দেখে ছেলেকে শনাক্ত করি।’
ছেলে হত্যার বিচার দাবি করে মনির হোসেন আরও বলেন, ‘আমি চাই আমার মতো কোনো বাবাকে যেন এভাবে তার সন্তান না হারাতে হয়। আমি সরকারের কাছে আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই।’ হাসানের খালা মোছা. শাহিনুর বলেন, ‘ড. ইউনূসের সরকারের কাছে ভাগনে হত্যার বিচার চাই। তাদের পরিবারের সে ছিল আয়ের অন্যতম উৎস। তাকে ছাড়া তার বাবা–মা কীভাবে বেঁচে থাকবে?’
হাসান রাজধানীর কাপ্তানবাজারে একটি দোকানে কাজ করতেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলায়। তাঁর বাবা জানালেন, শনিবার সকালে দ্বিতীয় জানাজা শেষে গ্রামের বাড়িতে তাঁকে দাফন করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম জানাজা পড়ে শহীদ হাসানের কফিন নিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ‘কফিনমিছিল’ বের করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
চিকিৎসক জানালেন, তামিমের জটিলতা এখনো কাটেনি
অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ক্রিকেটার তামিম ইকবালের অবস্থা এখনো জটিল। আজ বিকেএসপিতে মোহামেডানের হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলতে গিয়ে বুকে ব্যথা অনুভব করেন তিনি। এরপর তাকে পাশেই ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হার্টে ব্লক ধরা পড়ার পর রিং পরানো হলেও এখনো জটিলতা এখনো কাটেনি বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির মেডিকেল ডিরেক্টর রাজিব।
তামিমের চিকিৎসার সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে দুপুরে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘যতগুলো চিকিৎসা প্রয়োজন, সবকিছু করা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে কন্ডিশনটা অনুকূলে আছে। ওনার একটা হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। এটার জন্য একটা এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি এবং স্টেন্ট করা হয়েছে। এটা খুব স্মুথলি এবং এফিশিয়েন্টলি হয়েছে। ওনার এই ব্লকটা পুরোপুরি চলে গেছে এখন।’
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে সকালে শাইনপুকুরের বিপক্ষে টস করেন মোহামেডানের অধিনায়ক তামিম। এরপর অসুস্থ অনুভব করলে বিকেএসপিতেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাকে হাসপাতালে আনলে ব্লক ধরা পড়ে। ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে কার্ডিওলজিস্ট মনিরুজ্জামান মারুফের তত্ত্বাবধানে তাঁর ব্লক সরানো হয়।
তবে এখনো পুরোপুরি জটিলতা কাটেনি বলে জানান ডাক্তার রাজিব, ‘একটু ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে ছিল। স্টেন্ট পরও তিনি অবজারভেশনে আছেন। এবং ক্রিটিক্যাল কন্ডিশন এখনো কাটেনি, একটু সময় লাগবে।’
তবে সবার কাছে দোয়া চেয়ে তামিমকে নিয়ে আশার কথাও শুনিয়েছেন তিনি, ‘আমরা আশাবাদী তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসতে পারবেন।’
তামিমের অসুস্থতার খবরে আজ বিসিবির পরিচালকদের সভা স্থগিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই হাসপাতালে ছুটে গেছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ও অন্যান্য পরিচালকরা। হাসপাতালে আছেন তামিমের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকী ও ভাই নাফিস ইকবাল।