প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে ফিরলেন লাশ হয়ে
Published: 14th, February 2025 GMT
ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে বেড়াতে বের হয়েছিলেন মাহমুদ বাবু। তিনি মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন, আর পেছনে বসেছিলেন তার প্রেমিকা। পথে রাজধানীর ডেমরায় সুলতানা কামাল সেতুর ওপর ঘটে দুর্ঘটনা। হঠাৎ কনটেইনারবাহী একটি ট্রাকের ধাক্কায় ছিটকে পড়েন দু’জন। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাহমুদ। তার বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আব্দুল্লাহবাদ গ্রামে। বাবার নাম বোরহান উদ্দিন ব্যাপারী।
নিহতের ভাই আরাফাত হোসেন শাওন জানান, ঢাকার মিরপুরে থাকতেন মাহমুদ। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। তার প্রেমিকার বাসা রামপুরা এলাকায়। তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগে পড়েন। দুজনের বিয়ের কথা চলছিল। শুক্রবার সকালে তারা মোটরসাইকেলে বেড়াতে বের হন।
ডেমরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, বেলা ১১টার দিকে ওই দুর্ঘটনার পর পথচারীরা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে দুপুর ২টার দিকে মাহমুদকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। সঙ্গে থাকা তরুণী একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনায় দায়ী যানটি জব্দ এবং এর চালককে আটক করা হয়েছে। মাহমুদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠানে ৭ দেশের কবি
তারা ভিন দেশের নাগরিক। কবিতা পাঠ করলেন নিজ নিজ ভাষায়। জানালেন তাদের অনুভূতিও। আবার সেই কবিতা আর অনুভূতির মর্মার্থ ইংরেজিতে বুঝিয়েও দিলেন সবাই।
শুক্রবার কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ‘সার্ধশততে একুশের দ্রোহ’ শিরোনামে ভিন্নধর্মী এ অনুষ্ঠান হয়। এর আয়োজন করে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (কসউবি) প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ।
কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন জাপান, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, কাজাখিস্তান ও সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। যারা কক্সবাজারে কর্মরত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।
বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়িয়ে জাপানি নাগরিক মাছিকো ফুকোমারা বলেন, নিজের ভাষায় কথা বলতে পারাটা অনেক আনন্দের। স্কুল দেখে আমি আমার নিজের দেশ, বাড়ি, শৈশব ও নিজের ভাষাকে মনে পড়ছে। তিনি জানান, এবারই প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছেন।
নাইজেরিয়ান নাগরিক হাওয়া হাসান কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এখানে আমরা অনেক ভাষাভাষী মানুষ একসঙ্গে হয়েছি, এটা খুব ভালো লাগছে।
ফিলিপাইনের নাগরিক হেলেন বেশ কয়েক বছর ধরেই আছেন বাংলাদেশে। তিনি বলেন, কথা বলতে পারার স্বাধীনতা অনেক বড় বিষয়। অনেক আনন্দের।
ইসাবেল সুয়োরাজ কলম্বিয়ান নাগরিক। এই আয়োজনে এসে তিনি শিশু বয়সে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, স্কুলের বাচ্চাদের দেখে আমার স্কুলের সময়ের কথা মনে পড়ছে।
কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের গৌরবময় ১৫০ বছর পূর্তির ধারাবাহিকতায় এ আয়োজন মাতৃভাষার বৈচিত্র্য ও ঐক্যের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, বিদেশিদের উপস্থিতি মাতৃভাষার গুরুত্বকে বিশ্বজনীন পরিসরে তুলে ধরার প্রয়াস থেকেই এমন আয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা কবি জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত শহীদ মিনারটি কক্সবাজার জেলার প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে স্বীকৃত। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষকদের অবদান গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। বিশেষ করে খালেদ মোশাররফ, যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তার নেতৃত্বে কক্সবাজার হাইস্কুলের ছাত্ররা ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে অংশ নেয়।
বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর উপলক্ষে বছরব্যাপী নানা আয়োজনের অংশ হিসেবে ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের কথা জানিয়ে ছাত্র পরিষদের সংগঠক ইয়াসির আরাফাত জানান, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দিবসেই তাদের কর্মসূচি থাকবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত।