কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষ্ণানন্দ বকশী সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে পাঁচ বাংলাদেশিকে মারধর করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। 

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে বারোমাসিয়া নদীর তীরে ৫০০ গজ অভ্যন্তরে সীমান্তের ৯৩০ সাব পিলার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, দুপুরে ভারতের ১৩৮ নারায়ণগঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা গোড়কমন্ডল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বিএসএফ সদস্যরা। এসময় বাংলাদেশিরা তাদের বাধা দিলে বিএসএফ সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে তাদের মারধর করে। পরে গ্রামবাসী জড়ো হয়ে বিএসএফ সদস্যদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।

বিএসএফ-এর মারধরের ঘটনায় পাঁচ বাংলাদেশি আহত হয়েছে। তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

আহতরা হলেন- কৃষ্ণানন্দ বকসী গ্রামের ইসরাইল হোসেনের ছেলে মো.

শামসুল, খোকা মিয়ার ছেলে জাবেদ আলী, আবুল কাশেমের ছেলে তাজুল ইসলাম, মুকুল মিয়ার ছেলে মো. রিপন ও মো. মান্নানের ছেলে কাশেম আলী।

স্থানীয় রুবেল ইসলাম বলেন, “দুপুরে ভারতের জওয়ানরা বাংলাদেশের ভিতরে এলে আমরা বাধা দেই। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের মারধর করে।”

অপর বাসিন্দা বেলাল হোসেন বলেন, “বিএসএফরা স্থানীয়দের মারধর করলে আমরা গ্রামবাসী একজোট হয়ে ধাওয়া দিই। ধাওয়া খেয়ে তারা পালিয়ে যায়।”

গোরকমন্ডল বিওপি ক্যাম্পের হাবিলদার দেলোয়ার হোসেন বলেন, “গ্রামবাসীদের সাথে বিএসএফের মারধরের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আমরা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছি।”

এ বিষয়ে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ্ মো. শাকিল আলম জানান, স্থানীয়দের অভিযোগ গোড়কমন্ডল সীমান্তের কৃঞ্চনন্দ গ্রামে বাংলাদেশের অভ্যান্তরে প্রবেশ করে বাংলাদেশিদের মারধর করেছে বিএসএফ। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।”

ঢাকা/বাদশাহ্/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসএফ

এছাড়াও পড়ুন:

অন্তর্বর্তী সরকার ঢাকার বাইরের মানুষের প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করছে: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার ঢাকা এবং বড় শহরের বাইরে নজর দিয়েছে। ঢাকার বাইরের মানুষের কী প্রয়োজন, সেটা বুঝতে চেষ্টা করছে। সেটা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

আজ বুধবার ঢাকা-নরসিংদী-ভৈরববাজার-নরসিংদী-ঢাকা রুটে চলাচলকারী নরসিংদী কমিউটার-১ ও নরসিংদী কমিউটার-৪ ট্রেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ফাওজুল কবির খান। আজ সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে এই গন্তব্যের ট্রেনযাত্রার উদ্বোধন করা হয়।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, গত পরশু চট্টগ্রাম থেকে সন্দীপ রুটে একটা ফেরিসেবা চালু করা হয়েছে। সেখানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য সব উপদেষ্টা যাননি। নৌপরিবহন উপদেষ্টা ঘাট উদ্বোধনের জন্য, আর তিনি বিআরটিসি বাস উদ্বোধনের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন। অন্যরা নিজ নিজ আওতাধীন বিষয়গুলো দেখতে—যেমন পরিবেশ উপদেষ্টা সেখানে বেড়িবাঁধ দেখেছেন, পরিবেশ দেখেছেন। স্বাস্থ্যের বিশেষ সহকারী হাসপাতাল দেখেছেন। প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা দেখেছেন।

ফাওজুল কবির খান বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ আছে, ঢাকার বাইরে উন্নয়নকে পৌঁছাতে হবে। এ উন্নয়ন হবে নাম ফলকবিহীন উন্নয়ন। কোনো নাম প্রচার, কারও নাম ফলকে থাকবে না। যে ঘাট উদ্বোধন করা হয়েছে, সেখানে কারও নাম নেই। শুধু সময় আছে।

রেলওয়ে একটা লোকসানের প্রতিষ্ঠান বলে উল্লেখ করেন ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, এখানে প্রতি এক টাকা রোজগারের জন্য আড়াই টাকার মতো খরচ হয়। এর দুটো কারণ আছে। একটি হচ্ছে রেলওয়ের দুর্নীতি, রেলের অপচয়। দুর্নীতি যাতে কমে, অপচয় যাতে বন্ধ হয়, সে জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আরেকটি কারণ হচ্ছে, বিনা টিকিটে অনেক যাত্রী রেলে ভ্রমণ করেন।

যাত্রীসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, রেলের সেবার মূল্য তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এরপরও কিছু কিছু এলাকার যাত্রী ভাড়া দেন না। এভাবে চলতে থাকলে রেলের সেবা বন্ধ হয়ে যাবে। কাউকে ভাড়া দিতে না দেখলে তা রেলের নজরে আনতে অনুরোধ জানান তিনি।

নতুন গন্তব্যের যাত্রীদের উদ্দেশে ফাওজুল কবির খান বলেন, যাঁরা নরসিংদীর মানুষ, ভৈরবের মানুষ, তাঁরা সামাজিকভাবে উদ্বুদ্ধ করবেন, যাতে মানুষ টিকিট কেটে ভাড়া দিয়ে চলাচল করেন। রেলের লোকসান আরও বাড়লে এটাকে মোকাবিলা করার জন্য সেবা কমানো ছাড়া বিকল্প থাকবে না।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছে দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মে ভৈরববাজার থেকে নরসিংদী হয়ে ঢাকা আসা প্রথম যাত্রার ট্রেনটিকে সকাল ৯টা ৬ মিনিটের দিকে স্বাগত জানান। এ সময় তিনি ট্রেনের যাত্রীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। তিনি ট্রেনটির বগিতে ঢুকে পরিবেশ দেখেন।

এরপর পাশের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢাকা থেকে ছেড়ে যেতে অপেক্ষায় থাকা রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ফাওজুল কবির খান। তিনি যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৯টা ১৩ মিনিটে কমলাপুর থেকে ছেড়ে যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ