Risingbd:
2025-04-15@11:03:21 GMT

টুপি ও আতরের দোকানে ভিড় 

Published: 14th, February 2025 GMT

টুপি ও আতরের দোকানে ভিড় 

আজ পবিত্র শবে বরাত। হিজরি সনের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতটি সৌভাগ্যের রাত হিসেবে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পরম করুণাময় মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতে মগ্ন থাকবেন। অতীতের পাপ ও অন্যায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণে দোয়া করেন।

পবিত্র শবে বরাতকে কেন্দ্র করে মুসলমানদের অনেকেই এখন ভিড় জমাচ্ছেন টুপি, আতর আর জায়নামাজের দোকানে।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম-সংলগ্ন রাজধানীর আতর-টুপির প্রধান মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, বেচাকেনা বেশ জমজমাট।

আরো পড়ুন:

শবে বরাতের রাতে আতশবাজি-পটকা ফোটালে ব্যবস্থা

শবে বরাতে কিছু পেতে হলে চেষ্টা করতে হবে

গাজী স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো.

কামলউদ্দিন বলেন, “২০ টাকা থেকে টুপির দাম শুরু হয়ে ২ হাজার টাকা দামের টুপি রয়েছে। অধিকাংশ ক্রেতা ৫০ থেকে ৫০০ টাকা দামের মধ্যে টুপি খুঁজছেন। কিছু টুপি ভারত, পাকিস্তান ও তুরস্ক থেকে আসে। পাশাপাশি দেশি টুপিও আছে, দাম কিছুটা কম।”

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মনির হোসেন টুপি দেখছিলেন। তিনি বলেন, “আজ শবে বরাত। নতুন একটি টুপি কিনেছি। ২৫০-৪০০ টাকার মধ্যে বেশ সুন্দর টুপি পাওয়া যায়।”

‘ইসলাম আতর হাউসে’র মফিজুর রহমান বলেন, “আজ সকাল থেকেই আতরের বিক্রি ভালো। উআল হারমাইন, মুস্তাহ আল তাহারা, আল আরাবিয়া, আসওয়াদ আতর রয়েছে। ভালো মানের আতরের দাম প্রতি মিলিলিটার ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা।”

আতর কিনতে আসেন আনসারুল হক হক। তিনি বলেন, “আজ সবাইকে নিয়ে শবে বরাতে নামাজে যাব। নতুন টুপির সঙ্গে আতর দেই। তাই আজ আতর কিনেছি।

ঢাকা/এএএম/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আনন্দের বন্যা বইছে জুলেখার পরিবারে

মায়ের কোলে থাকা সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুকে কখনও কোলে নিচ্ছেন প্রতিবেশীরা, কখনও শিশুটির ছোট বোন। আবার কেউ কেউ কোলে নিয়ে আদর করছে শিশুটিকে, কেউ আবার সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া-চাইছেন শিশুটির জন্য। ঝিনাইদহের হরিনাকুণ্ডু উপজেলার দুর্লভপুর উত্তরপাড়া গ্রামে কৃষক আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে তাঁর নাতিকে নিয়ে এমনই আনন্দের বন্যা বইছে।

মঙ্গলবার সকালে ওই বাড়িটিতে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। বাংলা নববর্ষের প্রথম প্রহরে সকাল পৌনে ৬টার দিকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে মা জুলেখা বেগমের কোল আলোকিত করে জন্ম নেয় ফুটফুটে ছেলে শিশু।

জানা যায়, ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সিদ্ধি গ্রামের রাশেম মণ্ডলের স্ত্রী জুলেখা বেগম। জুলেখা বেগম অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন আর এখন তিনি গৃহিণী। তাঁর স্বামী এইচএসসি পাস করে বর্তমানে ব্র্যাক ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখায় চাকরি করেন। ২০০৫ সালে তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছিল। মেয়ের বাবার বাড়ি ঝিনাইদহের হরিনাকুণ্ডু উপজেলার দুর্লভপুর উত্তরপাড়া গ্রামে আর ছেলের বাড়ি শৈলকুপা উপজেলার সিদ্ধি গ্রামে। স্বামীর সঙ্গে কুষ্টিয়া শহরে থাকতেন জুলেখা। পরে সন্তানসম্ভবা হওয়ার কিছুদিন পর ঝিনাইদহের হরিনাকুণ্ডু উপজেলার দুর্লভপুর উত্তরপাড়া গ্রামে বাবা আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে চলে আসেন জুলেখা।

গর্ভাবস্থায় বাবার বাড়িতে থাকার সময় নিয়মিতই সেখানে আসতেন জুলেখার স্বামী রাশেম মণ্ডল। খোঁজখবর নিতেন স্ত্রীর। গর্ভের সন্তানকে ভালো রাখতে যত্নের কমতি রাখেননি জুলেখা। তাঁর স্বামীও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত চেকআপ করানোসহ অন্যান্য দিকে নজর রাখতেন। তাঁর কোনো শারীরিক জটিলতাও দেখা দেয়নি।

রোববার রাত ১২টার পর থেকে প্রসব বেদনা শুরু হয় জুলেখা বেগমের। এরপর তাঁর মা-বাবাসহ অন্যান্য আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা পাখি ভ্যানযোগে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ওই রাত ২টার দিকে নিয়ে আসেন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। সে সময় হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সরা তাঁর শারীরিক খোঁজখবর নেন। এরপর সকাল পৌনে ৬টার দিকে হাসপাতালের ‘ই ও সি’ বিভাগে নরমাল ডেলিভারিতে জুলেখা বেগম জন্ম দেন এক ফুটফুটে ছেলে শিশু। জন্মের পরপরই হাসপাতাল থেকে আজান শোনানো হয় শিশুটিকে। তার ওজন হয়েছিল দুই কেজি পাঁচশ গ্রাম। এটি জুলেখা বেগমের তৃতীয় সন্তান। তাঁর বড় ছেলে নয়ন মণ্ডল এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে আর মেয়ে রাবেয়া খাতুনকে এখনও স্কুলে ভর্তি করাননি।

সদর হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. মার্ফিয়া খাতুন বলেন, নরমাল ডেলিভারিতে শিশুটির জন্ম হয়েছে। শিশু ও মা শারীরিকভাবে সুস্থ আছে, কোনো জটিলতা নেই। এর আগেও এ নারীর নরমাল ডেলিভারিতে দুটি সন্তানের জন্ম হয়েছিল। আমরা হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছাড়পত্র দিয়েছি। তবে বিশেষ করে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে, প্রথম প্রহরে এই শিশুটির জন্ম হওয়াতে আমরা খুবই খুশি, শিশুটি যেন বড় হয়ে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারে সেই প্রত্যাশা রইল।

এদিকে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুটির মা জুলেখা বেগম বলেন, বাচ্চা হওয়ার কথা ছিল মে মাসের ৫ তারিখে। তবে একটু আগে হলেও সম্পূর্ণ সুস্থ থাকায় আমি খুবই খুশি। হাসপাতালের ডাক্তার নার্স সবাই খুবই আন্তরিক ছিল। তারা সবসময় খোঁজখবর নিয়েছে। জন্মের পর থেকেই বুকের দুধ খাচ্ছে সন্তানটা। সন্তান পেটে আসার পর থেকেই আমি এবং আমার স্বামী খুবই সতর্ক থাকতাম।

তিনি আরও জানান, আমাদের তিন সন্তান। বড় ছেলে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে, মেয়েটার বয়স ছয় বছর, ওকে স্কুলে ভর্তি করাব। এরপর ইচ্ছা ছিল একটা ছেলে সন্তান হবে। মেয়েটা জন্মের ৬ বছর পর আল্লাহ আমাদের ইচ্ছা পূরণ করেছেন। বিশেষ করে বাংলা নববর্ষের মতো বিশেষ একটি দিনে আমার সন্তান হয়েছে, আমিসহ পরিবারের সবাই খুবই খুশি। এখন আমাদের প্রত্যাশা তিন সন্তানকেই যেন লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলতে পারি। ছেলেটিকে প্রথম কোলে নিয়েছিল আমার ফুফু অর্থাৎ ছেলেটির নানি। তিনি প্রথম সাদা গেঞ্জি কিনে দিয়েছেন।

ছেলের বাবা রাশেম মণ্ডল বলেন, খুবই খুশি আমরা। বিশেষ করে নববর্ষের দিনে সন্তান হওয়াতে।

শিশুটির নানি সুন্দরী খাতুন বলেন, আমরা খুবই খুশি এমন ফুটফুটে নাতি ছেলে পেয়ে। নাতি ও আমার মেয়ে সুস্থ আছে। আল্লাহ যেন আগামী দিনেও এদের ভালো রাখে।

এদিকে শিশুটির নানা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এ আনন্দ আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। নাতি-নাতনি যে কী আদরের জিনিস, সেটা যার আছে সেই ভালো জানে। সদ্য ভূমিষ্ঠ নাতিকে কোলে নিয়েছি, মনে হচ্ছে আল্লাহ যেন আমাদের বড় একটি উপহার দিয়েছে। নাতনিটা মাঝেমধ্যে এসে বলছে, নানা তুমি কি ভাইয়াকে বেশি আদর করবা। তখন বলছি, তোরা যে আমার কলিজার টুকরা। তোরা দুই ভাই ও বোন সবাই আমার কাছে সমান। তোদের কাউকেই আদরের কমতি রাখব না।

এদিকে শিশুটি জন্মের সময় সদর হাসপাতালে ছিলেন সম্পর্কে শিশুর নানি সালেহা খাতুন। তিনি বলেন, রাতে হাসপাতালে আনার সময় অনেক চিন্তায় ছিলাম। শেষমেশ হাসপাতালে সবার আন্তরিকতায় ছেলে সন্তানের জন্ম হলো। আমরা খুবই খুশি, আনন্দিত।

ছোট শিশুটিকে দেখতে এসে প্রতিবেশীরা বলেন, জুলেখার কোলজুড়ে একটি সুস্থ সন্তান জন্ম নিয়েছে। এতে আমরা খুবই খুশি। আল্লাহ যেন তাদের ভালো রাখে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ