ভালোবাসা দিবসে ‘বৈষম্যবিরোধী প্রেম যাত্রা’
Published: 14th, February 2025 GMT
আজ পহেলা ফাল্গুন, বসন্তের প্রথম দিন। এদিন (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব ভালোবাসা দিবসও বটে। দেশের বিভিন্ন স্থানে এ দুই উপলক্ষকে উপযাপন করেছেন অসংখ্য মানুষ। তবে, এর ব্যতিক্রমও হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভালোবাসার সুষ্ঠু বণ্টনের দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী প্রেম যাত্রা’ শীর্ষক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ প্রেমবঞ্চিত সংঘ।
শুক্রবার সকাল ১১টায় রাবি ক্যাম্পাসের পরিবহন মার্কেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পশ্চিম পাড়াসহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় একই স্থানে এসে মিছিল শেষ হয়।
বৈষম্যবিরোধী প্রেম যাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা ‘তুমি কে, আমি কে; বঞ্চিত, বঞ্চিত’, ‘কেউ পাবে, কেউ পাবে না; তা হবে না, তা হবে না’, ‘দেহ দিয়ে প্রেম নয়, মন দিয়ে প্রেম হয়’, ‘প্রেমের নামে প্রহসন; চলবে না, চলবে না’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ কর্মসূচিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেমবঞ্চিত সংঘের সদস্যসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেছেন, “ভালোবাসা বলতে আমরা শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার ভালোবাসাকেই বুঝি। কিন্তু, আমাদের এই সংঘের থিম হলো—সব ধরনের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিতদের যে ব্যথা, সেটা তুলে ধরা। আমাদের শিক্ষকদের কথা যদি বলি, তারা মেয়ে বন্ধুদের যেভাবে ট্রিট করে, আমাদেরকে সেভাবে করে না। আবার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে গেলে, আমাদের বলে লাঞ্চের পরে আসতে। কিন্তু, কোনো মেয়ে গেলে তাকে বলে আমাদের সাথেই লাঞ্চ করো। এগুলোও বৈষম্য। তাই, ভালোবাসার ব্যাপারে ছেলে-মেয়েদের আলাদাভাবে না দেখে সমানভাবে বণ্টন করা হোক।”
প্রেমবঞ্চিত সংঘের সভাপতি শাহ্ পরান বলেছেন, “প্রেম শুধু প্রেমিক-প্রেমিকা করবে, বিষয়টা এরকম না। বাবা-মায়ের সাথে সন্তানের প্রেম হয়, শিক্ষকের সাথে শিক্ষার্থীর প্রেম হয়। কিন্তু, আমাদের সমাজের সব ক্ষেত্রে প্রেমের অসম বণ্টন দেখতে পাওয়া যায়। আপনি কতটুকু ভালোবাসা পাবেন, তা নির্ভর করে অর্থ-সম্পদের ওপর। এর ফলে আপনার সন্তানও প্রেম থেকে বঞ্চিত হয়।”
প্রেমবঞ্চিত সংঘের দুষ্টু পুরুষ শনাক্তকরণবিষয়ক সম্পাদক সারথি অনি বলেছেন, “যেসব পুরুষ প্রেমের নামে ধোঁকা দেয়, একসাথে ২-৩ জনের সাথে প্রেম করে, তাদেরকে আমরা সাবধান করে দিতে চাই। বাংলাদেশের আইনে তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। ছোটবোনদের সুরক্ষা দিতেই আমার এই পদে আসা।”
ঢাকা/ফাহিম/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চুরি-ছিনতাই-খুন প্রতিরোধে তৎপরতা বাড়িয়েছি: র্যাব ডিজি
দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, খুন ও ডাকাতি প্রতিরোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত ২টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে র্যাবের টহল ও চেকপোস্ট পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র্যাবও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে কতিপয় দুষ্কৃতকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল হামলা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
শহিদুর রহমান বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস কায়দায় হামলা ও আক্রমণ চালাচ্ছে। এসব অপরাধ দমনে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র্যাব ফোর্সেসও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে। এরইমধ্যে র্যাবের সব ব্যাটালিয়ন তাদের নিজস্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় রোবাস্ট প্যাট্রোলিং পরিচালনা করছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিরতিহীনভাবে অতিরিক্ত টহল মোতায়েনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
র্যাব ডিজি বলেন, ব্যাটালিয়নগুলোতে নিজস্ব কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে ঢাকাসহ সারাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। দেশব্যাপী বিভিন্ন জায়গায় অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য র্যাব বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব মেট্রোপলিটন শহর, জেলা শহর ও উপজেলা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন, পর্যাপ্ত সংখ্যক টহল মোতায়েন এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যদের খুন, হত্যাচেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক কারবারি এবং চাঞ্চল্যকর সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। এসব গ্রুপের সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে মারামারি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য মোহাম্মদপুরের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান আনোয়ার ওরফে শুটার আনোয়ার ওরফে কবজি কাটা আনোয়ার, জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ সন্ত্রাসী বুনিয়া সোহেল এবং জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি সেলিম আশরাফি ওরফে চুয়া সেলিমসহ তাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব ডিজি আরও বলেন, সব মেট্রোপলিটন শহর ও গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহরগুলোতে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানী থেকে ৪০ জন, ময়মনসিংহে ২৫ জন, রাজশাহী থেকে ২৪ জন, সিলেট থেকে ১৭ জন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ১৫ জনসহ মোট ১৮০ জন আসামিকে গ্রেপ্তার এবং অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব। এ ছাড়া সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ যেকোনো ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
বিএইচ