আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও দলটির নেতাকর্মীদের বিচার না হলে রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত মোহাম্মদ হাসানের জানাজা শেষে এ হুমকি দেন তিনি।

আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, “একদিকে অনেক শহীদ পরিবারের স্বজনরা প্রিয়জনের মরদেহ পর্যন্ত খুঁজে পাচ্ছে না, আরেকদিকে একটি গোষ্ঠী ও দল রাজনৈতিক স্বার্থে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা শুরু করেছে।”

তিনি বলেন, “গণহত্যায় আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা আন্তর্জাতিকভাবেও প্রমাণিত হয়েছে। তাই, নেতাকর্মীদের বিচার ও দলটি নিষিদ্ধ না হলে রাজপথ ছাড়ব না।”

পরে গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে কফিন মিছিল বের করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও শহীদদের পরিবারের সদস্যরা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পড়ে ছিল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত অজ্ঞাত সাত জনের মরদেহ। তাদের মধ্যে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে এক জনের পরিচয় মিলেছে। পরিচয় শনাক্ত হওয়া মো.

হাসান (১৯) রাজধানীর কাপ্তানবাজারের ইলেকট্রিক দোকানের কর্মচারী ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ডিএনএ পরীক্ষায় এ তথ্য পাওয়া যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মুনসুর।

জুলাই আন্দোলনে নিহত এক নারীসহ ছয় জনের মরদেহ এখনো ঢামেক হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে।

জুলাই বিপ্লবের পর নিখোঁজ স্বজনদের সন্ধানে হাসানের পরিবারসহ দুটি পরিবার ঢামেক হাসপাতালের মর্গে আসে। হাসানের পরিবারের সদস্যরা একটি মরদেহ দাবি করেন। পরিচয় নিশ্চিত করতে পরিবারের পক্ষ থেকে ডিএনএ নমুনা দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ডিএনএ পরীক্ষায় হাসানের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

মর্গ সূত্র জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসানের পরিবার আইনি প্রক্রিয়া শেষ করেছে। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) তারা মরদেহ দাফনের জন্য নিয়ে যান। এর আগে গত ১২ জানুয়ারি সকালে হাসানের পরিবার ঢামেক মর্গে এসে মরদেহটি শনাক্তের চেষ্টা করেছিল।  

শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মুনসুর জানিয়েছেন, ঢামেক মর্গে থাকা সাতটি মরদেহের মধ্যে ছয়টি এখনো অজ্ঞাত হিসেবে পড়ে আছে। আরেকটি মরদেহ যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ দেখছে। শহীদ হাসানের মরদেহ যাত্রাবাড়ী থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। 

হাসানের চাচা নুরে আলম জানিয়েছেন, ফেসবুকে ছবি দেখে মনে হয়েছিল, এটাই হাসান। মো. হাসান (১৯) গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন।  

হাসানের গ্রামের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার বাগচির গ্রামে। তার বাবা মনির হোসেন কৃষক। মা গোলেনুর বেগম গৃহিণী। পরিবারসহ রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর সুতি খালপাড় বালুর মাঠ এলাকায় বাস করতেন হাসান।  

হাসানের চাচা বলেন, “আমরা ফেসবুকে একটি ছেলের ছবি দেখেছিলাম, যার পায়ে তার প্যাঁচানো ছিল। মুখে হালকা দাড়ি, পায়জামা-পাঞ্জাবি পরা। তখনই আমাদের মনে হয়েছিল, সে আমাদের হাসান। আজ সেটাই সত্য হলো।”

ঢাকা/হাসান/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ স ন র পর ব র ন র মরদ হ পর ব র র ড এনএ

এছাড়াও পড়ুন:

গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে আইনের আওতায় আনতে হবে: রংপুরে জোনায়েদ সাকি

জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার দায়ে কেবল আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী নেতারা নন, দল হিসেবে আওয়ামী লীগকেও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তবে এখন পর্যন্ত তার কোনো উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

আজ রোববার সন্ধ্যায় রংপুরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর ও জেলা জনসংহতি আন্দোলন আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে জোনায়েদ সাকি এ কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সাত মাস পেরিয়ে গেছে। এখনো বিচারপ্রক্রিয়া দৃশ্যমান নয়। বিচারপ্রক্রিয়ার দৃশ্যমান মানুষ দেখতে চায়। আমরা পরিষ্কারভাবে দাবি তুলেছিলাম, কেবল আওয়ামী লীগ নেতারা নন, দল হিসেবে আওয়ামী লীগের এই হত্যাকাণ্ডের দায় কতটা, সেটাও বিবেচনায় আনতে হবে। আমরা এখন পর্যন্ত তার উদ্যোগ দেখিনি। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, এই বিচার করতে হবে। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী আইন প্রণয়ন করতে হবে।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতারা জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে সরাসরি হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই শেখ হাসিনাসহ যাঁরাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের রাজনীতিক সহযোগীরাসহ প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এটা বাংলাদেশের মানুষের দাবি।

দেশে নানা ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘আজ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান সেনাবাহিনীসহ অনেককেই নানাভাবে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা হচ্ছে। এ ধরনের অস্থিতিশীলতা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে। সেই কারণে আমরা সব রাজনীতির পক্ষ ও সব ব্যক্তিবর্গ অন্তর্বর্তী সরকারের আছে আহ্বান জানাই, যাতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে। অস্থিতিশীলতা কোনোভাবেই আমাদের মঙ্গল আনবে না।’ যারা অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে তাদের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানান তিনি।

অভ্যুত্থানের ওপর দাঁড়িয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করছেন উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, মানুষ আশা করেছে জুলাই শহীদেরা জাতীয় বীরের মর্যাদা পাবেন। কিছু কিছু পদক্ষেপ আমরা দেখেছি। কিন্তু মানুষের যে কাঙ্ক্ষিত আশা, শহীদের মর্যাদা তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।

গণসংহতি আন্দোলন রংপুর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক আবদুর জব্বারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের জেলা কমিটির আহ্বায়ক তৌহিদুর রহমান, জেএসডির জেলা সভাপতি আমিন উদ্দিন, রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের ন্যায়পাল রায়হান কবীর, ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক শাহরিয়ার সোহাগ, গণ অধিকার পরিষদের রংপুর জেলা কমিটির সাবেক সদস্যসচিব আশিকুর রহমান প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহানগর কমিটির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কাওসার জামান। সভা সঞ্চালনা করেন গণসংহতি আন্দোলনের জাতীয় পরিষদ সদস্য প্রত্যয়ী মিজান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তারা কি ফিরিবে আর...
  • মালদ্বীপে গণহত্যা দিবস পালিত
  • গণহত্যা চালিয়েও শেখ হাসিনার কোনো অনুশোচনা নেই: রংপুরে রুহুল কবির রিজভী
  • আবুধাবীতে বাংলাদেশ দূতাবাসে গণহত্যা দিবস পালিত 
  • আজ গণহত্যার বিভীষিকাময় কালরাত
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণহত্যা ও স্বাধীনতা দিবস পালনের নির্দেশ
  • গণহত্যা ও নৃশংসতায় ভয়াবহ কালরাত
  • পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নারকীয় হত্যাযজ্ঞে জাতি আজও শোকাহত: প্রধান উপদেষ্টা
  • গণহত্যা দিবসে ঢাবিতে ব্লাক-আউট কর্মসূচি
  • গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে আইনের আওতায় আনতে হবে: রংপুরে জোনায়েদ সাকি