২৮ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার লজ্জার হার
Published: 14th, February 2025 GMT
আরেকটি একপেশে ম্যাচ। পুরো সিরিজেই অবশ্য এমন হচ্ছে। টেস্ট সিরিজে শ্রীলঙ্কা অস্ট্রেলিয়ার সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। আর ওয়ানডে সিরিজে সেই অস্ট্রেলিয়াই মুখথুবড়ে পড়েছে শ্রীলঙ্কার কাছে।
প্রথম ওয়ানডেতে লঙ্কানদের কাছে ৪৯ রানে হারের পর আজ কলম্বোয় অস্ট্রেলিয়া হেরে গেছে ১৭৪ রানে। টসে জিতে ব্যাটিংয়ের নেমে চারিত আসালাঙ্কার দল তুলেছিল ২৮১ রান। জবাবে অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে গেছে মাত্র ১০৭।
ওয়ানডেতে এশিয়ায় যা অস্ট্রেলিয়ার সর্বনিম্ন, আর সব মিলিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। আর তাতেই দুই ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শ্রীলঙ্কা জিতেছে ২-০ ব্যবধানে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার এই সিরিজ মূলত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রস্তুতি। এরই অংশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়া আজ দলে পরিবর্তন এনেছিল পাঁচটি। দলে ফেরেন ট্রাভিস হেড ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। দুজনের কেউই অবশ্য রান পাননি। হেড করেছেন ১৮, ম্যাক্সওয়েল ১। সব মিলিয়ে প্রস্তুতিটাও ভালো হয়নি।
তাতে মূল খেলোয়াড়দের অবর্তমানে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অমীমাংসিত অনেক প্রশ্ন নিয়েই যেতে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়াকে।
২৮১ রানের জবাবে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকে অস্ট্রেলিয়ার চাপে ছিল। বিশেষ করে ৩৩ রানের মধ্যে ম্যাথু শর্ট, জেইক ফ্রেসার ম্যাগার্ক ও হেড আউট হলে। এরপর জশ ইংলিশ ও স্টিভ স্মিথ ৪৬ রানের জুটি গড়েছিলেন। ইংলিশ ২২ রান করে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হলে এরপর কেউ দাঁড়াতেই পারেননি।
শেষ ২৮ রান নিতে তারা হারিয়েছে ৭ উইকেট। দলের সর্বোচ্চ ২৯ রান এসেছে অধিনায়ক স্মিথের ব্যাটে। স্পিনার দুনিত ভেল্লালাগে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন হাসারাঙ্গা ও আসিতা ফার্নান্দো।
গত ম্যাচে সেঞ্চুরি করা আসালাঙ্কা আজও খেলেছেন ৭৮ রানের ইনিংস। তবে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের মূল বিজ্ঞাপন ছিলেন কুশল মেন্ডিস। গলে সিরিজের শেষ টেস্টের দুই ইনিংসেই ফিফটি করা কুশল আজ পেয়েছেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি।
টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া শ্রীলঙ্কাকে শুরু থেকে তিনিই টেনেছেন। শুরুতে পাতুম নিশাঙ্কাকে হারালেও নিশান মাদুশকাকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৯৮ রানের জুটি গড়েন মেন্ডিস। ৫১ রানে মাদুশকা আউট হওয়ার পর কামিন্দু মেন্ডিস আউট হন ৪ রান করে।
এরপর আসালাঙ্কার সঙ্গে ৯৪ রানের জুটি গড়েন মেন্ডিস। ১১৩ বলে সেঞ্চুরি করা মেন্ডিস ফেরেন ১০২ রানে। বাকি কাজটা সারেন আসালাঙ্কা ও জিনাত লিয়ানেগে। ৩৫ বলে ৬৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে লিয়ানেগের অবদান ছিল ২১ বলে ৩২।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ২৮১/৪(মেন্ডিস ১০২, আসালাঙ্কা ৭৮*; অ্যাবট ১/৪১, জাম্পা ১/৪৭)।
অস্ট্রেলিয়া: ১০৭/১০(স্মিথ ২৯, ইংলিশ ২২; ভেল্লালাগে ৪/৩৫, হাসারাঙ্গা ৩/২৩)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ১০৭৪ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: কুশল মেন্ডিস।
সিরিজ–সেরা: চারিত আসালাঙ্কা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতালে তামিম, মোহামেডানের জয় ছাপিয়ে প্রশ্ন, খেলা বন্ধ হলো না ক
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের অষ্টম রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে সোমবার সকালে ঠিকঠাক বিকেএসপিতে পৌঁছে গিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। সতীর্থদের সঙ্গে ড্রেসিংরুমের বাইরে খুনসুটি শেষে শরীর গরম করে মাঠে নামার প্রস্তুতিও নিয়ে নেন। এরপর টসও করতে যান মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক।
কিন্তু ড্রেসিংরুমে ফেরার পরই টের পেতে থাকেন শরীর সাড়া দিচ্ছে না। বুক চেপে আসছে। ততক্ষণে বাকিরা বুঝে যান, তামিম হার্ট অ্যাটাক করেছেন। সঙ্গে সঙ্গেই তামিম নিয়ে হুলস্থূল লেগে যায়। তাকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নেওয়া হয় প্রস্তুতি। প্রথমে মাইনর ও পরে ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে’ অজ্ঞান হয়ে পড়া তামিমকে গাজীপুরের কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ব্যবস্থা করা হয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স।
কিন্তু তামিমের জ্ঞান ফেরাতে ওদিকে চিকিৎসকরা চেষ্টার ত্রুটি রাখছিলেন না। ২২ মিনিট সময় ধরে সিপিআর ও তিনটি ডিসি শক দিতে হয়েছে। এরপর দ্রুত এনজিওগ্রাম করে শতভাগ ব্লক থাকা একটা আর্টারিতে রিং লাগিয়েছে ডাক্তাররা। অবিশ্বাস্য গতিতে হয়েছে সবকিছু। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তামিমের জ্ঞান ফিরেছে এবং কথা বলেছেন পরিবারের সঙ্গে। তবে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবেন।
তামিমের এই অবস্থার ভেতরেও বিকেএসপিতে চলেছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের ম্যাচ। সচরাচর এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচ অফিসিয়ালরা খেলা স্থগিত করেন। কিন্তু বিকেএসপি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে তামিম যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তখন মাঠে তার সতীর্থরা খেলছিলেন। মিরাজ সেঞ্চুরি করে দলকে জিতিয়েছেন ৭ উইকেটে।
স্থগিত না করে কীভাবে খেলা চললো, সেটাই এখন বিরাট প্রশ্নের। এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে সিসিডিএমের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, মোহামেডানের ইচ্ছাতেই খেলা চালিয়ে নিয়েছেন তারা। দুই দলকেই সিসিডিএম এবং ম্যাচ অফিসিয়ালরা ম্যাচ স্থগিত করার কথা জানান। কিন্তু ম্যাচটি খেলতে রাজি হয় দুই দলই। এজন্য খেলা বন্ধ হয়নি।
তার ভাষ্য, ‘‘মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব খেলা চালিয়ে যেতে চাইছিল। শাইনপুকুরও তাই। তারা কেউই চায়নি খেলা বন্ধ হোক। আমরা শুরুতে ভেবেছিলাম এরকম পরিস্থিতিতে খেলা বন্ধ করা যায় কি না। এজন্য ক্লাবগুলোকে জানানো হয়। কিন্তু তারা দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে খেলা চালিয়ে নেয়।’’
জানা গেছে, দুই দলই চেয়েছে ড্রেসিংরুমে কিংবা মাঠে আতঙ্ক সৃষ্টি না করতে। তাতে মাঠের ভেতরে ক্রিকেটে মনোযোগ দিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। খেলা শেষে মুশফিক, মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ, আরিফুলরা ছুটে গেছেন তামিমকে দেখতে হাসপাতালে। কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটের কাছাকাছি গিয়ে দেখাও করেছেন দুয়েকজন।
ঢাকা/ইয়াসিন/এনএইচ